খুবির তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক আদেশ প্রত্যাহারের আহ্বান

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ‘উসকানি’ দেওয়ার অভিযোগে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে ‘বরখাস্ত’ এবং দুই শিক্ষককে ‘অপসারণের’ আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে নবনিযুক্ত উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 June 2021, 02:32 PM
Updated : 4 June 2021, 02:54 PM

শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের এই প্ল্যাটফর্মটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ জন শিক্ষক ওই চিঠিতে সংহতি জানিয়েছেন।

নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক মাহমুদ হোসেনকে দেওয়া চিঠিতে তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে দেওয়া আদেশ প্রত্যাহার ও বেতন নিয়মিত করার উদ্যোগ নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

গত বছর জানুয়ারির শুরুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেতন-ফি কমানো, আবাসন সংকট নিরসনসহ পাঁচ দফা দাবিতে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা।

এর প্রায় নয় মাস পর গত ১৩ অক্টোবর ওই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ‘উসকানি’ দেওয়ার অভিযোগে তিন শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

পরে এ ঘটনার তদন্ত ও কয়েক দফা কারণ দর্শানোর পর ২৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় তিন শিক্ষকের মধ্যে একজনকে বরখাস্ত এবং দুইজনকে অপসারণের সিদ্ধান্ত হয়।

বরখাস্ত শিক্ষক হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবুল ফজল। অপসারণ করা হয় একই বিভাগের প্রভাষক শাকিলা আলম এবং ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগের প্রভাষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরীকে।

এছাড়া আন্দোলনে সম্পৃক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকেও বহিষ্কার করা হয় সে সময়। তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের তোপে তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ওই তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে দেওয়া আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানালেও তাতে সাড়া মেলেনি। পরে ওই তিন শিক্ষক হাই কোর্টে রিট মামলা করলে গত ০৯ ফেব্রুয়ারি আদালত স্থিতাবস্থা জারির নির্দেশ দেয়।

তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সময় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান। তার মেয়াদ শেষ হওয়ায় ২৪ মে ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলোজি বিভাগের অধ্যাপক মাহমুদ হোসেনকে উপাচার্য পদে নিয়োগ দেয় সরকার।

শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিবৃতিতে বলা হয়, “আইনি প্রক্রিয়ায় কিছুটা অগ্রগতি হওয়ায় শিক্ষকেরা কর্মস্থলে যোগদান করলেও, পুরো প্রক্রিয়াটি অসমাপ্ত রয়েছে। বেশ কয়েক মাস হল শিক্ষকেরা বেতন পাচ্ছেন না।”

চিঠিতে অবিলম্বে ওই তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ‘সকল ধরনের প্রশাসনিক বৈরীতার অবসান’ ঘটিয়ে কাজের সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে শিক্ষক নেটওয়ার্ক।

এবিষয়ে জানতে চাইলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য় অধ্যাপক মাহমুদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গতকাল আমি চিঠিটা দেখেছি। তবে সেখানে কারও স্বাক্ষর ছিল না। তারা যে দাবি জানিয়েছেন, সেটা আইনি প্রক্রিয়ায় আছে। সেটা নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না।”