ঢাবির শতবর্ষ উদযাপনে নানা কর্মসূচি গ্রহণ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তি উদযাপন উপলক্ষে দেশ-বিদেশে আন্তর্জাতিক সেমিনারসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Nov 2020, 09:10 PM
Updated : 5 Nov 2020, 09:10 PM

বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে উপচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ‘শতবর্ষ উদযাপন কেন্দ্রীয় কমিটি’র সদস্য-সচিব ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল কর্মসূচিগুলো তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে দেশে-বিদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠিত অ্যালামনাই এবং বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও গবেষকদের নিয়ে ছয়টি আন্তর্জাতিক সেমিনার (ওয়েবিনার) আয়োজন করা হবে।

“২১ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে এই সেমিনার উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।”

১ জুলাই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে প্রধান অতিথি হিসেবে রাখতে চায় ঢাবি কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার বিষয়ে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ভাবনা এবং খ্যাতিমান পণ্ডিত, গবেষক ও বিশেষ করে যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতামূলক চুক্তি ও সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে ১২-১৪ জুলাই লন্ডনে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। 

ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মেয়ে অ্যানকে এই সম্মেলন উদ্বোধনের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক মাকসুদ কামাল।

এছাড়া নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আয়োজন করা হবে 'ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সহযোগিতা ও ‘গবেষণা মেলা’।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শতবর্ষের ওপর দুটি বই প্রকাশ করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে একটি হল ‘হিস্ট্রি অব ঢাকা ইউনিভার্সিটি’। এটি সম্পাদনা করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. রতন লাল চক্রবর্তী। অন্যটি ‘দি রোল অব ঢাকা ইউনিভার্সিটি দ্য মেকিং অ্যান্ড শেপিং বাংলাদেশ’। যেটির সম্পাদনা করবেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী।

এছাড়া শতবর্ষ উপলক্ষে বিশেষ স্যুভেনির ও বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি তথ্যচিত্র তৈরি করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বরের ল্যান্ডস্কেপিংসহ একটি 'সেন্টেনারি মনুমেন্ট’ নির্মাণ করা হবে।

শততম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে থাকবে সপ্তাহব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের সরাসরি জড়িত থাকার জন্য তিনটি ইভেন্ট রাখা হয়েছে।

‘শতবর্ষের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : অর্জন ও প্রত্যাশা’ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের রচনা প্রতিযোগিতা হবে। এক্ষেত্রে শীর্ষ একশ জনকে পুরস্কার দেওয়া হবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বরচিত কবিতা নিয়ে কবিতা গ্রন্থ প্রকাশ করা হবে। শিক্ষার্থীদের ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতাও আয়োজন করা হবে।

শতবর্ষের দ্বাপ্রান্তে এসে শিক্ষার গুণগত মান ও পরিবেশ উন্নয়ন এবং গবেষণার ক্ষেত্র সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো একটি ‘মহাপরিকল্পনা’ প্রণয়ন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক  মো. আখতারুজ্জামান বলেন, “এই বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশ্ববিদ্যালয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশ্ববিদ্যালয়, এটি এ দেশের আপামর জনসাধারণ এবং সব স্তরের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার লালন কেন্দ্র। গণতান্ত্রিক-অসাম্প্রদায়িক মানবিক মূল্যবোধ চর্চার এবং প্রতিপালনের অসাধারণ ঘাঁটি।

“সব কিছুকে বিবেচনায় রেখেই মূলত আমরা নানাভাবে শতবর্ষ উদযাপন করার বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেখানে আমাদের একটি ভিশন থাকবে। শতবর্ষের ভিশন হলো টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং চতুর্থ শিল্পবিপ্লব উপযোগী বিশ্ববিদ্যালয় বিনির্মাণ ও দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি। এই ভিশনকে সামনে রেখেই আমাদের সব কর্মপ্রয়াস।”

সংবাদ সম্মেলনে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, সাবেক উপাচার্য এমিরিটাস অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরীসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শতবর্ষপূর্তি ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তি উদযাপন উপলক্ষে গঠিত কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য ও বিভিন্ন উপ-কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য-সচিব উপস্থিত ছিলেন।