ইন্টারনেট সমস্যা: জবির অনলাইন ক্লাসে উপস্থিতির নম্বর বাতিল

ইন্টারনেট সংযোগ নিয়ে শিক্ষার্থীদের দুশ্চিন্তার মধ্যে অনলাইন ক্লাসে উপস্থিতির নম্বর বাদ দেওয়ার কথা জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 July 2020, 08:28 AM
Updated : 12 July 2020, 08:28 AM

নিয়ম অনুযায়ী, সব সেমিস্টারে প্রতিটি কোর্সে ১০০ নম্বরের মধ্যে উপস্থিতির জন্য থাকে ১০ নম্বর।

এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ক্লাস উপস্থিতির নম্বর ‘ক্লাস পারফরম্যান্সের’ মাধ্যমে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য মীজানুর রহমান।

রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, "অনলাইন ক্লাসে অনুপস্থিত থাকার জন্য কারো কোনো নম্বর কাটা যাবে না। প্রতিটা সেশনে কতজন অংশগ্রহণ করেছে তা নোট রাখতে পারবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে শিক্ষার্থীরা অ্যাসাইনমেন্ট ও প্রেজেন্টেশন দেবে৷ তখন তাদের ক্লাস পারফরম্যান্সের নম্বর দেওয়া হবে।"

করোনাভাইরাসের মহামারীর কারণে সাড়ে ৩ মাস ক্লাস বন্ধ থাকার পর গত ২ জুলাই অনলাইনে ক্লাস চালুর নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

কয়েকটি বিভাগ ইতোমধ্যে ক্লাস শুরু করলেও ইন্টারনেট সংযোগের কারণে ক্লাসে উপস্থিতি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন অনেক শিক্ষার্থী।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের নূর ইসলাম টিপু বলেন, “আমাদের অনেক শিক্ষার্থী গ্রামে রয়েছে। সেখানে নেটওয়ার্কের যা অবস্থা, তাতে অনলাইন ক্লাসে নিয়মিত অংশ নেওয়া কঠিন। বাড়িতে অনেকের প্রয়োজনীয় ডিভাইসও নেই।

“আবার ডিভাইস থাকলেও ডেটা কিনতে হিমশিম খেতে হয়। বাড়িতে থাকলেও ঢাকায় তাদের মেস ভাড়া দিয়ে যেতে হচ্ছে। এগুলো সুরাহা না করেই অনলাইন ক্লাসে যাওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত।"

অনলাইন ক্লাসে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত থাকতে প্রচুর ইন্টারনেট ডেটা লাগে। নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকের পক্ষেই নিয়মিত সেই ব্যয় চালিয়ে যাওয়া কঠিন বলে মন্তব্য করেন লোকপ্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাশেদুজ্জামান হৃদয়।

তিনি বলেন, “কাউকে বঞ্চিত করে এভাবে ক্লাস চালিয়ে নেওয়া যুক্তিযুক্ত না। সবাইকে অনলাইন ক্লাসের আওতায় আনতে কর্তৃপক্ষের ভাবা উচিত।"

এ বিষয়ে অনলাইনে শিক্ষার্থীদের মতামত নেওয়ার কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মিশু।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, "যারা টিউশনি বা খণ্ডকালীন চাকরি করে খরচ চালাতেন, তারা সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন। অনেকে ভাড়া দিতে না পেরে মেস ছেড়ে দিচ্ছেন।

"আমরা ফেইসবুক গ্রুপে দুটি জরিপ করে মতামত নিয়েছি। যেখানে ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থীই মেস ভাড়া সমস্যা সমাধান না হলে এবং ইন্টারনেট খরচ না দিলে অনলাইন ক্লাসের বিপক্ষে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের বর্তমান সমস্যার সমাধান না করেই কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।"

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী ওহিদুজ্জামান এ বিষয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনলাইন ক্লাস ছাড়া তো বিকল্প কিছু নেই আমাদের হাতে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ওরা যখন আসবে, তখন তাদের রিফ্রেশ ক্লাস নেওয়া হবে।”