পরিবেশ ঝুঁকিতে বাংলাদেশের প্রস্তুতি বিশ্বের সেরা: আইনুন নিশাত

বিপর্যয়ের মুখে থাকলেও পরিবেশের ঝুঁকি মোকাবেলায় বাংলাদেশের প্রস্তুতির প্রশংসা এসেছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আলোচনা সভা থেকে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Nov 2019, 12:17 PM
Updated : 6 Nov 2019, 12:17 PM

ওই আলোচনায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইমেরিটাস ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত বলেন, “পরিবেশ বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে উন্নত বিশ্বের খামখেয়ালির খেসারত দিতে হচ্ছে আমাদের। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে রয়েছে বাংলাদেশ। তবে জোর দিয়েই বলা যায়, পরিবেশ বিপর্যয়ের ঝুঁকি মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুতি বিশ্বের সেরা।”

মঙ্গলবার মহাখালীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয় ‘আ কনভারসেশন উইথ বারবেল হুন, সোহারা মেহরোজ সাঁচী এন্ড ড. আইনুন নিশাত অন ক্লাইমেট জাস্টিস অ্যান্ড স্ক্রিনিং অফ দ্য ডকুমেন্টারি ২০৪০-দ্য রিজেনারেশন’ শীর্ষক আলোচনা সভায়।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সফলতার কথা তুলে ধরে আইনুন নিশাত বলেন, ”গত কয়েক দশক আগেও বন্যা, সাইক্লোনে হাজার হাজার মানুষ মারা যেত। সরকারে গৃহীত উদ্যোগে হতাহতের সংখ্যা অনেক কমে এসেছে।

”বাংলাদেশ পরিবেশগত ঝুঁকি মোকাবেলায় সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তবে পর্যাপ্ত অর্থ সহায়তা না পেলে এই সাফল্য ধরে রাখা কঠিন হবে।”

বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক উঞ্চতার ফলে বাংলাদেশের প্রকৃতিতেও পরিবর্তন এসেছে মন্তব্য করে অনুষ্ঠানে আইনুন নিশাত বলেন, “সময় বদলাচ্ছে, পরিবেশ বদলাচ্ছে, দুর্যোগের প্যাটার্ন বদলাচ্ছে। এই বছর তিস্তা, বহ্মপুত্র নদীর পানির উচ্চতা ইতিহাসের সবোর্চ্চ পর্যায়ে উঠেছিল। এই বছরই আবার তীব্র খরা দেখা যায় দেশের অন্য অঞ্চলগুলোতে।”

দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলার সক্ষমতা বৃদ্ধি, ফান্ড তৈরি, উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

আইনুন নিশাত বলেন, “পরিবেশ বিপর্যয়ের ফলে নারী স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। পানিতে লবণাক্ততা বাড়ার কারণে দেশের উপকূলবর্তী অঞ্চলের নারীরা একলেমশিয়ায় ভুগছে। অনেকের ক্ষেত্রে গর্ভধারণেও সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এসব অঞ্চলে সুপেয় পানির জন্য প্রতি পরিবারে একটি করে ট্যাংকি থাকা উচিত।”

জার্মানির রাজনৈতিক দল ‘গ্রিন পার্টি’র নেতা ও দেশটির সাবেক প্রতিমন্ত্রী বারবেল হুন বলেন, ”বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ৯০ শতাংশ ফল বহন করে চলছে সাগর-মহাসাগরগুলো। আর তার সরাসরি প্রভাব পড়ছে মানবজাতির ওপর।”

পরিবেশ বিপর্যয় রোধে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্লান্টে বিনিয়োগকে দুর্যোগে বিনিয়োগের শামিল বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট সোহরা মেহরোজ সাঁচী অনুষ্ঠানে বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পরিবেশ বিপর্যয় সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে। তরুণদের এই কাজে সম্পৃক্ত করতে পারলে সফলতা পাওয়া যাবে।”

ব্র্যাক বিজনেস স্কুল ও দ্য সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভারেনমেন্টাল রিসার্চ যৌথভাবে আলোচনা সভাটির আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের সহযোগী অধ্যাপক ড. সেবাস্টিয়ান গ্রোহ।