বিভাগের শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষার্থীরা আবেদন করলে এই টাকা আর নেওয়া হবে না।
যদিও গত মাসে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে মিস ফান্ড নিয়ে খবর প্রকাশের পর এই নামে আর টাকা আদায় করা হয়নি।
মিস ফান্ডের পরিবর্তে নতুন রশিদে ৩৫০ টাকা করে আদায় করা হয়েছে পরীক্ষা কেন্দ্র ফি নামে। তবে শিক্ষার্থীরা টাকা জমা দিয়েছেন মিস ফান্ডের সেই আগের সঞ্চয়ী হিসাব নম্বরেই।
বিষয়টি নিয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে ‘জবি চারুকলার মিস ফান্ডের টাকা যায় কোথায়’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সেখানে বলা হয়, চারুকলার শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফি আদায় করা হয় অগ্রণী ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাব ৩৪০২৭১০৯ ও বিবিধ ফি নেওয়া হয় সঞ্চয়ী হিসাব ৩৪০২৭৪০৬ নম্বরে। টাকা জমা দেওয়ার পর রশিদের দুটি অংশ জমা থাকে ব্যাংকে। আর রশিদের একটি অংশ রেজিস্ট্রার অফিসের জন্য এবং অন্যটি শিক্ষার্থীর অংশ।
এই দুই দফাতেই ‘মিস ফান্ড’ নামের একটি রশিদও শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়। যার মাধ্যমে ২৫০ টাকা করে অগ্রণী ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাব ০২০০০০২৫২৭৫২৫ নম্বরে জমা নেওয়া হয়।
ভর্তি ও বিবিধ ফি রশিদের চারটি অংশ থাকলেও ‘মিস ফান্ড’ রশিদের দুটি অংশ, যার একটি ব্যাংকে জমা দিয়ে অন্যটি বিভাগে দিয়ে দিতে হয় শিক্ষার্থীকে। ফলে তার কাছে কোনো কপি থাকে না।
তহবিলের টাকা কোথায়, কিভাবে খরচ হয় তা জানতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।
ওই সময় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের অনুসন্ধানের মুখে বিভাগ থেকে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ফি হিসেবে এই টাকা নেওয়া হয়।
সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে চারুকলা বিভাগ।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, কয়েকটি সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণের নোটিস দেওয়া হলেও মিস ফান্ড নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর ফরম পূরণের সময় পিছিয়ে দেয় বিভাগ।
বিভাগের তৃতীয় ব্যাচের একজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে নিউজ হওয়ার আগেরদিন ফরমফিলাপের নোটিশ দিয়েছিল। নিউজ হওয়ায় সেই ডেট চেঞ্জ করে দিয়েছে বিভাগ। এ সময়ের মধ্যে চাঁদা তুলতে বিভাগের নামে নতুন রশিদ ছাপানো হয়েছে।”
মিস ফান্ড বাতিলের বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকদের কয়েক দফা অনানুষ্ঠানিক আলোচনাও হয়েছে।
এ বিষয়ে বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বজলুর রশীদ খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিক্ষার্থীদের সাথে আমাদের আনঅফিসিয়ালি কয়েকবার আলোচনা হয়েছে। আমরা তাদের আবেদন করতে বলেছি, তারা আবেদন করলে আমরা মিস ফান্ড বাতিল করে দেব।
“তারা আবেদন না করলেও আমরা শিক্ষকরা বিষয়টি নিয়ে বসব, যেহেতু এটা মিডিয়াতে এসেছে।”
বিভাগের উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক সামগ্রী সরবরাহ করতেই এ ফান্ডের চাঁদা আদায় করা হতো বলেও দাবি করেন তিনি।
“স্যাররা নিউজের পর নিজ থেকেই বলেছেন মিস ফান্ড বাতিলের জন্য আবেদন করতে, তাহলে মিস ফান্ড বন্ধ করে দেবে।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী ওহিদুজ্জামান বলেন, “এ টাকাটা কোন প্রেক্ষিতে নিয়েছে, কেন নিয়েছে; এর ব্যাখ্যা আমার কাছে নেই।
“আমাদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেয়নি। ফি’স নির্ধারণী কমিটি আছে, আমি ওটার মেম্বার সেক্রেটারি; ওখানেও এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।”
তবে বিভাগের শিক্ষক বজলুর রশীদ খানের দাবি, বিধান মেনেই তারা মিস ফান্ডের চাঁদা আদায় করেছেন।