ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান জানান, শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে সিলেট থেকে মাজেদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ম্যাটারিয়াল অ্যান্ড ম্যাটার্লজিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাজেদুল ইসলাম শেরেবাংলা হল ছাত্রলীগের একজন কর্মী। আবরার হত্যা মামলার এজাহারে তার নাম রয়েছে ৮ নম্বরে।
মাসুদুর রহমান বলেন,এ মামলায় এ নিয়ে মোট ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হল, তাদের মধ্যে ১৩ জন মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
চারজনের নাম মামলার এজাহারে না থাকলেও হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বুয়েটের শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে গত রোববার রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে বুয়েট শিক্ষার্থীদের মধ্যে বুয়েট ছাত্রলীগের উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল বৃহস্পতিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি বুয়েটের বায়ো মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
আবরারকে কীভাবে ক্রিকেট স্টাম্প আর স্কিপিং রোপ দিয়ে কয়েক ঘণ্টা ধরে বেধড়ক পেটানো হয়েছিল, সেই ভয়ঙ্কর বিবরণ তিনি জবানবন্দিতে দিয়েছেন বলে সংবাদমাধ্যমের খবরে উঠে এসেছে।
আবরারের বাবার করা মামলায় যে ১৯ জনের নাম ছিল, তাদের মধ্যে ছয়জন এখনও পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
>> মামলার আসামিরা- বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল (সিই বিভাগ, ১৩তম ব্যাচ), সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ (১৪তম ব্যাচ, সিই বিভাগ), সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন (কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৫তম ব্যাচ), তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার (মেকানিক্যাল ইঞ্জনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির (ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশারফ সকাল (বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য মুনতাসির আল জেমি (এমআই বিভাগ), সদস্য মুজাহিদুর রহমান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য হোসেন মোহাম্মদ তোহা (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), সদস্য এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), শামীম বিল্লাহ (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মাজেদুর রহমান নওরোজ (এমএমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), আকাশ হোসেন (সিই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর (মেকানিক্যাল , ১৭তম ব্যাচ), জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), মোয়াজ (সিএসই, ১৭ ব্যাচ), শাদাত (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মোর্শেদ (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ) ।
>> এদের মধ্যে মেহেদী হাসান রাসেল, মুহতাসিম, মেহেদী হাসান রবিন, অনিক, মেফতাহুল, মনিরুজ্জামান, ইফতি, মুনতাসির, এহতেশামুল ও মুজাহিদুরকে বহিষ্কার করেছে ছাত্রলীগ।
>> ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত ১১ জনের মধ্যে একজনের নাম এজাহারে কিংবা গ্রেপ্তারের তালিকায় নেই। তিনি বুয়েট ছাত্রলীগের উপদপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ (কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, তৃতীয় বর্ষ)।
>> এর বাইরে এজাহারে নাম না থাকা চারজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তারা হলেন- বুয়েট ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না (মেকানিক্যাল, তৃতীয় বর্ষ), অমিত সাহা (সিই), মিজানুর রহমান (ওয়াটার রিসোসের্স, ১৬ তম ব্যাচ) ও শামসুল আরেফিন রাফাত (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং)।
>> এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে জিসান, শামীম, শাদাত, এহতেশামুল, মোর্শেদ ও মোয়াজ এখনও পলাতক।
এদিকে আবরারের খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তিসহ দশ দফা দাবিতে পাঁচ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা।
দাবি না মানলে বুয়েটের সব ভবনে তালা মেরে দেওয়ার হুমকির পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শুক্রবার বিকালে বসছেন উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম।
বিকাল ৫টায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব কামরুল হাসান জানিয়েছেন।