ঢাবিতে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, সাংবাদিকরাও আক্রান্ত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের কর্মীদের ওপর ছাত্রলীগকর্মীদের হামলায় অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2019, 09:51 AM
Updated : 23 Sept 2019, 09:51 AM

সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বর, দোয়েল চত্বর ও টিএসসিতে দফায় দফায় এই হামলার সময় দায়িত্বপালনরত তিন সাংবাদিকও আক্রান্ত হয়েছেন।

আহতরা হলেন- ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ, জিয়াউর রহমান হলের সদস্য কামরুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু হলের যুগ্ন আহ্বায়ক খোরশেদ আলম সোহেল, সূর্যসেন হলের যুগ্ন আহ্বায়ক ফিরোজ মাসুম, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুব শাহিন, কবি নজরুল কলেজের ফাহিম ও ঢাকা কলেজের নয়ন। তারা সবাই ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন।

এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহের সময় হামলার শিকার তিন সাংবাদিক হলেন- স্টুডেন্ট জার্নালের আনিসুর রহমান, প্রতিদিনের সংবাদের রাফাতুল ইসলাম রাফি এবং বিজনেজ বাংলাদেশের আফছার মুন্না।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল দুপুরে ক্যাম্পাসের হাকিম চত্বরে মাই টিভিতে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন। ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস এ সময় সাত-আটজন নেতাকর্মী নিয়ে সেখানে যান এবং ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলেন।

এর কিছুক্ষণ পর ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা টিএসসিতে গেলে সনজিতের অনুসারীরা রড, লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের ওপর চড়াও হয়। এর কিছুক্ষণ পর দোয়েল চত্বর এবং হাকিম চত্ত্বরেও হামলার ঘটনা ঘটে।

ছাত্রলীগের স্যার এ এফ রহমান হলের আপেল মাহমুদ, জসিম উদ্দিন হলের মহসিন আলম তালুকদার, সূর্যসেন হলের যুগ্ম-সম্পাদক সৈয়দ শরিফুল ইসলাম শপু, সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাইসুল ইসলাম, সূর্যসেন হল সংসদের ভিপি মারিয়াম জামান খান সোহান, জগন্নাথ হল সংসদের জিএস কাজল দাস, জসীম উদ্দিন হল সংসদের জিএস ইমামুল হাসান, জহুরুল হক হলের সহ-সম্পাদক হাসান রাহাত এই হামলায় অংশ নেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল সাংবাদিকদের বলেন, “ছাত্রলীগের সনজিতের নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা হয়েছে। আমাদের মোবাইল ও বাইক ছিনতাই করে নিয়ে গেছে তারা। আমরা এর বিচার চাই।”

ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস এবং সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে এসে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন।

তবে সনজিত হামলায় অংশ নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, ওই সময় তিনি কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের ওয়াশরুমে ছিলেন।

“এই হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগের কোনো নির্দেশনা ছিল না। আমি এবং সাদ্দাম এই ঘটনার বিষয়ে ওয়াকিবহালও ছিলাম না। তবে ছাত্রলীগের কিছু অতি উৎসাহী কর্মী এসব ঘটনা ঘটিয়েছে। পর্যালোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, তিনি এ ঘটনায় ‘লজ্জিত’।

“এই হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগ সাংগঠনিকভাবে জড়িত ছিল না। কিন্তু ছাত্রলীগের কিছু কর্মী ঘটনার সাথে জড়িয়ে পড়েছে। যারা জড়িত আমরা তাদের বিরুদ্ধে অতি দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব এবং ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে এরকম নির্দেশনা আমরা ছাত্রলীগ কর্মীদের দিয়ে দেব।”