পরীক্ষা ছাড়া ভর্তি: ঢাবি ভিসি, ডিনের পদত্যাগ দাবি

পরীক্ষা ছাড়া ছাত্রলীগ নেতাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং ডাকসুর নেতা নির্বাচিত হওয়ায় উপাচার্য ও বাণিজ্য অনুষদের ডিনের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে তাদের পদত্যাগ দাবি করেছেন একদল শিক্ষার্থী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Sept 2019, 12:35 PM
Updated : 8 Sept 2019, 12:35 PM

রোববার বিকালে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান এবং বাণিজ্য অনুষদের ডিন শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলামের পদত্যাগসহ ভর্তি পরীক্ষা না দিয়েই ভর্তি হয়ে নির্বাচিত ডাকসু নেতাদের পদ শূন্য ঘোষণা করে নতুন নির্বাচনের দাবি করেছেন।

ডাকসু নির্বাচনের সময় ৩৪ জন ছাত্রলীগ নেতার ভর্তি প্রসঙ্গ টেনে মানববন্ধনে ছাত্রফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, “ভিসি স্যার চিরকুট দিয়েছেন, ডিন স্যার চিরকুট দিয়েছেন, সেই চিরকুট নিয়ে ভর্তি হয়েছেন ছাত্রলীগের নেতারা।

“আমরা বলতে চাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হয় পরীক্ষার মাধ্যমে, চিরকুটের মাধ্যমে ভর্তি হওয়া যায় না। এর মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে শিক্ষা, ছাত্র-শিক্ষকের যে সম্পর্ক, সেই সম্পর্ককে আজকে এই উপাচার্য এবং এই ডিন ভূলুলন্ঠিত করেছে।”

তিনি বলেন, “একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের তিনটি কারণে চাকরি যেতে পারে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে নৈতিক স্খলন। আমরা মনে করি, এই জালিয়াতির ভর্তি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে উপাচার্য আখতারুজ্জামান এবং বিজনেজ ফ্যাকাল্টির যে ডিন, সেই ডিনের নৈতিক স্খলন ঘটেছে।”

তিনি অবিলম্বে উপাচার্য আখতারুজ্জামান এবং ডিন শিবলীর পদত্যাগ দাবি করেন।

সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, “ডাকসু নির্বাচনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বিজনেজ অনুষদের ডিন ছাত্রলীগ নেতাদের চিরকুটের মাধ্যমে যে ভর্তি করিয়েছেন এটি নৈতিক স্খলনজনিত একটি কাজ।

“আর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী, তাদের শাস্তি হচ্ছে পদত্যাগ করা। তাই আমরা আজকের এই কর্মসূচি থেকে উপাচার্য এবং বিজনেজ ফ্যাকাল্টির ডিনের পদত্যাগ দাবি করছি। পাশাপাশি ডাকসু ও হল সংসদে এই জালিয়াতির মাধ্যমে যে আটজন নির্বাচিত হয়েছে তাদের ছাত্রত্ব বাতিলসহ সেসব পদ শূন্য ঘোষণা করে শূন্যপদগুলোতে পুনরায় নির্বাচন দিতে হবে।”

মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা।

রোববার দৈনিক প্রথম আলোয় প্রকাশিত ‘পরীক্ষা ছাড়াই ভর্তি হয়ে ডাকসু নেতা’ শিরোনামের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১১ ফেব্রুয়ারি ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোসণার পর ছাত্রলীগের ৩৪ জন বর্তমান ও সাবেক নেতা ছাত্রত্ব টিকিয়ে রাখতে ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের মাস্টার্স অব ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামে ভর্তি বিজ্ঞাপন, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা ছাড়াই ভর্তি হন।

তাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের বিভিন্ন সম্পাদক ও সদস্য পদে মোট আটজন নির্বাচনে অংশ নেন, বিজয়ী হন সাতজন। এছাড়া হল সংসদের ভিপি পদে অংশ নেন দুজন। এরমধ্যে একজন নির্বাচিত হন।

প্রথম আলোর ওই সংবাদে আরও বলা হয়, ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এই ছাত্রলীগ নেতারা উপাচার্য বা ডিনের সই করা চিরকুট নিয়ে ওই সান্ধ্যকালীন প্রোগ্রামে ভর্তি হন। ভর্তির পর থেকে ক্লাস বা পরীক্ষায় এই নেতাদের কেউই অংশ নেননি।