৭ কলেজের অধিভুক্তি বাতিল হলে ‘ঢাকা অচলের হুমকি’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল হলে রাজধানী ‘অচল করে দেওয়ার হুমকি’ দিয়েছেন সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 August 2019, 08:26 AM
Updated : 5 August 2019, 08:27 AM

সোমবার ঢাকা কলেজে এক সংবাদ সম্মেলনে পাঁচ দফা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক আবু বকর বলেন, “যদি কোনো কুচক্রী মহলের প্রভাবে সাত কলেজ নিয়ে কোনো প্রকার অবৈজ্ঞানিক বা হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তাহলে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা মাঠে নেমে প্রয়োজনে গণআন্দোলনের ডাক দিয়ে সদরঘাট থেকে মহাখালী পর্যন্ত অবরোধ করে ঢাকা অচল করে দেব।”

অধিভুক্তির পর বিভিন্ন সময়ে পাঁচটি দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন সাতটি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা।

তাদের দাবিগুলো হচ্ছে- একসঙ্গে পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ত্রুটিমুক্ত ফল প্রকাশসহ একই বর্ষের সব বিভাগের ফল একত্রে প্রকাশ, গণহারে অকৃতকার্য হওয়ার কারণ প্রকাশসহ খাতা পুনঃমূল্যায়ন, সাত কলেজ পরিচালনার জন্য স্বতন্ত্র প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, সিলেবাস অনুযায়ী মান সম্মত প্রশ্নপত্র প্রণয়নসহ উত্তরপত্র মূল্যায়ন সম্পূর্ণ সাত কলেজের শিক্ষক দ্বারা করতে হবে এবং সেশনজট নিরসনে অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশসহ ক্রাশ প্রোগ্রাম চালু।

সবশেষ গত ১৬ জুলাই তারা নিউ মার্কেট মোড় অবরোধ করেন। পরদিন এসব কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

দাবি আদায়ে ঢাবি শিক্ষার্থীরা পরে একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভও করেন। পরে অধিভুক্তি নিয়ে সমস্যা সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি গঠন করলে ছয়দিন পর ক্লাসে ফেরেন শিক্ষার্থীরা। 

অধিভুক্তি বাতিলের দাবিকে ‘অযৌক্তিক’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যদি অধিভুক্তি বাতিলের দাবি কেউ করে সেটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা করবেন, যারা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। অধিভুক্তির জন্য শিক্ষকদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। সুতরাং শিক্ষার্থীরা কি নিয়ে বা কার ইন্ধনে কিভাবে আন্দোলন করছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন আছে।”

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা দুই বছরের সেশনজটে পড়েছে। এমতাবস্থায় আমরা সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় গণতান্ত্রিক পন্থায় নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে একাডেমিক সমস্যা সমাধানের জন্য আন্দোলন করে আসছি।

“সম্প্রতি সেশনজট, ফলাফল বিপর্যয়, একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশের দাবিসহ ৫ দফা দাবি নিয়ে গত ২৩ ও ২৪ এপ্রিল টানা আন্দোলন করি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস প্রদান করে। কিন্তু আজও আমরা আমাদের সমস্যার পুরোপুরি সমাধান পাইনি।’’

সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের সমন্বয়ক কাজী নাসের, শহিদুল ইসলাম, ফৌজিয়া মিথিলা, নূরজাহান শিখা, সুলতানা পারভিন বৃষ্টি, মামুন শিকদার, আশরাফুল ইসলাম আরিফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজধানীর সাত সরকারি কলেজকে অধিভুক্ত করে নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

কলেজগুলো হচ্ছে- ঢাকা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ এবং সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ।