ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধদের আন্দোলন স্থগিত

আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের আশ্বাসে অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে সরে গেছে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদবঞ্চিত বা প্রত্যাশিত পদ না পাওয়ায় বিক্ষুব্ধরা। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 May 2019, 03:46 AM
Updated : 20 May 2019, 03:47 AM

রোববার রাতে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে দলের চারজন জ্যেষ্ঠ নেতার সঙ্গে বৈঠক করে রাত দেড়টার দিকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন তারা।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক, বাহাউদ্দিন নাছিম, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মোল্লা আবু কাওসার, ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বৈঠকে অংশ নেয়। 

আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন ছাত্রলীগের রোকেয়া হলের সভাপতি বিএম লিপি আক্তার, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের সভাপতি ফরিদা পারভীন, সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী শায়লা, শামসুন নাহার হলের সভাপতি নিপু ইসলাম তন্বী, জসীম উদ্দীন হলের সাধারণ সম্পাদক শাহেদ খান, ছাত্রলীগের নতুন কমিটির উপ সাংস্কৃতিক সম্পাদক তিলোত্তমা সিকদার, বিগত কমিটির প্রচার সম্পাদক সাঈফ বাবু, সমাজসেবা সম্পাদক রানা হামিদ।

এই প্রতিনিধি দলের একাধিক সদস্য রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তাদের দাবি মানার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতারা শিগগিরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাদের সাক্ষাৎ করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

বৈঠকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, ছাত্রলীগের কমিটিতে 'বিতর্কিতদের' পদগুলো তদন্তের মাধ্যমে শূন্য ঘোষণা করে যোগ্যতার ভিত্তিতে সেসব পদে পূরণ করা হবে। এছাড়া মধুর ক্যান্টিনে মারামারির ঘটনা এবং টিএসসিতে শনিবার রাতের হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে তাদের। 

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সম্মেলন হয়েছিল এক বছর আগে। গত সোমবার ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পরই অসন্তোষ শুরু হয়।  

কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সন্ধ্যায় মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে আসেন অর্ধশত নেতাকর্মী; যাদের কেউ পদ পাননি, কেউবা কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে ক্ষুব্ধ।

সংবাদ সম্মেলন শুরুর পরপরই সেখানে হামলা চালিয়ে তা পণ্ড করে দেয় আগে থেকেই সেখানে অবস্থান নেওয়া পদ পাওয়া শতাধিক নেতা। হামলায় ছয় নারী নেত্রীসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন।

এরপর কমিটি পুনর্গঠন চেয়ে ‘একযোগে পদত্যাগের’ ঘোষণা দেন বিক্ষুব্ধরা। কমিটিতে স্থান পাওয়া বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন তারা।

তাদের ওই প্রতিক্রিয়ার পর ১৭ জনকে ‘দাগি’ হিসেবে চিহ্নিত করার কথা জানান ছাত্রলীগের শীর্ষনেতারা।  এরপর বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে নানা অভিযোগবিদ্ধ ৯৭ জনের তালিকা প্রকাশ করে আর কর্মসূচিতে না যাওয়ার ঘোষণা দেন বিক্ষুব্ধরা।

এরপর শনিবার গভীর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আলোচনা করতে গিয়ে আবারও হামলা ও মারধরের শিকার হন বিক্ষুব্ধ অংশের নেতাকর্মীরা।  এরপর থেকে তারা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে আসছিলেন।