ফের ‘মারধর’, রাজু ভাস্কর্যে অবস্থানে ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে হামলা ও মারধরের অভিযোগ গভীর রাতে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়েছেন ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া অংশের সদস্যরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 May 2019, 04:24 AM
Updated : 19 May 2019, 04:24 AM

তাদের অভিযোগ, ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর উপস্থিতিতেই তাদের লাঞ্ছিত করা হয়েছে।

গত ১৩ মে ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণার দিন থেকেই পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া অংশের নেতারা নানাভাবে অসন্তোষ ও প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন।

ছাত্রলীগের এই অংশের একাধিক নেতা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, কমিটি থেকে ‘বিতর্কিত’দের বাদ দেওয়ার বিষয়ে কথা বলতে এবং মধুর ক্যান্টিনে কমিটি ঘোষণার রাতে মারামারির সুরাহা করতে বিক্ষুব্ধ অংশের ১০-১২ জনের একটি প্রতিনিধি দল শনিবার রাত ২টার দিকে টিএসসির ভেতরে যান। ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং তাদের অনুসারীরাও তাদের সঙ্গে ছিলেন।

আলোচনার এক পর্যায়ে রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সভাপতি ও নবগঠিত কমিটির উপ সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিএম লিপি আক্তারের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর তর্ক শুরু হয়। রাব্বানীর অনুসারীরা তখন লিপিসহ তার সঙ্গী নেতাদের ওপর হামলে পরে এবং মারধর করে বলে এই অংশের নেতাদের অভিযোগ।   

তারা বলছেন, বিএম লিপি আক্তারের পাশাপাশি শামসুননাহার হল ছাত্রলীগের সভাপতি ও নতুন কমিটির উপ সাংস্কৃতিক সম্পাদক নিপু ইসলাম তন্বী, ছাত্রলীগের বিগত কমিটির উপ অর্থ সম্পাদক ও নবগঠিত কমিটির উপ সাংস্কৃতিক সম্পাদক তিলোত্তমা শিকদার, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও নতুন কমিটি উপ গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ফরিদা পারভীন, একই হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও নতুন কমিটির উপ ছাত্রবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক শ্রাবণী শায়লা, শামসুন নাহার হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগের নতুন কমিটির উপ পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক জিয়াসমিন শান্তা, ছাত্রলীগের বিগত কমিটির সদস্য ও নতুন কমিটিতে পদবঞ্চিত জেরিন দিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-প্রচার সম্পাদক শেখ আব্দুল্লাহ, সাবেক কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপসম্পাদক এমদাদ হোসেন সোহাগ, সাবেক কেন্দ্রীয় সহ সম্পাদক আজমীর শেখ রাতের ওই ঘটনায় লাঞ্ছিত হয়েছেন।

ওই ঘটনার প্রতিবাদে রাত ৩টার দিকে রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নেয় বিক্ষুব্ধরা। ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজনেই সেখানে গিয়ে বিক্ষুব্ধদের চলে যাওয়ার অনুরোধ জানান। রাব্বানী 'স্যরি' বলে ‘ভুল স্বীকার’ করলেও বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিক্ষুব্ধরা তাদের অবস্থান চালিয়ে যান সারা রাত। 

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য না পাওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ ও অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

ভোর ৫টার দিকে বিএম লিপি সাংবাদিকদের বলেন, “যেটা হয়েছে মধ্যরাতে আমাদের সাথে আমি আসলে এটা বলতে পারব না। মেয়ে হিসেবে আমি আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা, তিনি আমাদের একমাত্র অভিভাবক, আমি তার কাছেই সব বলব। আমরা যারা এখানে আছি, আমরা সবাই লাঞ্ছিত হয়েছি। আমাদের উপর আক্রমণ করা হয়েছে।"

ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীও ওই ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ করেন লিপি।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে রাব্বানী সাংবাদিকদের বলেন, "পদবঞ্চিত ও পদপ্রাপ্তদের মধ্যে ঝামেলা লেগেছিল। আমি নিবৃত্ত করতে গিয়েছিলাম। হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি। পদবঞ্চিতরা এটাকে এখন একটি ইস্যু করতে চাচ্ছে।"

ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ভোর ৫টা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও এ বিষয়ে সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হননি তিনি।