ডাকসু: ছাত্রদল, বাম জোট, কোটা আন্দোলন ও স্বতন্ত্রদের ভোট বর্জন

ভোটে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রদল, বাম জোট, কোটা অন্দোলনসহ বেশ কয়েকটি প্যানেল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 March 2019, 08:40 AM
Updated : 11 March 2019, 12:54 PM

নতুন করে ডাকসু নির্বাচনের প্যানেল ঘোষণার দাবি জানানো হয়েছে এসব প্যানেলের পক্ষে থেকে।

সোমবার বেলা ১টায় ভোটের শেষ পর্যায়ে মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয় সংগঠনগুলোর জোট, কোটা আন্দোলনকারীদের বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দুই মোর্চ স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদ ও স্বতন্ত্র জোট এবং ছাত্র ফেডারেশন।

পরে মধুর ক্যান্টিনে আলাদা সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদলও ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে নির্বাচনের পরিবেশ নেই অভিযোগ করে বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর দুই মোর্চা প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ছাত্রঐক্যের ১১ সংগঠনের যৌথ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী বলেন, “আমরা এই প্রহসনের নির্বাচন, জালিয়াতির নির্বাচন ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করছি।”

পুনঃতফসিলের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রশাসনকে এই ভোট বাতিল করে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করতে হবে। যারা এই ভোট জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।”

ভোটগ্রহণের সময়সীমা চার ঘণ্টা বাড়িয়ে সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভোট নেওয়ারও দাবি জানান তিনি।

লিটন বলেন, “হলগুলোতে ভোটের পরিবেশ নেই। ভোট হতে হবে অ্যাকাডেমিক ভবনে। ভোট গ্রহণে করতে হবে নতুন কমিটি।”

এ সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, শহীদুল্লাহ হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোট দিতে বাধা দিয়েছে।

ডাকসুর ভিপি পদে ছাত্রলীগের প্রার্থী রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের উপস্থিতিতে রোকেয়া হলে নারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয় এবং সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্যানেলের ভিপি প্রার্থী নুরুল হক নূরুর ওপর হামলা করা হয় বলে অভিযোগ আসে এই সংবাদ সম্মেলন থেকে। 

নুরুল হক নূরু ছাড়াও সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের এজিএস প্রার্থী ফারুক হাসান, ছাত্র ফেডারেশনের জিএস প্রার্থী উম্মে হাবিবা বেনজীর, স্বতন্ত্র জোটের ভিপি প্রার্থী অরণী সেমন্তী খান এবং স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদের জিএস প্রার্থী এ আর এম আসিফুর রহমান এই সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন।

আলাদা সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “আমরা সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে দলকানা প্রশাসনের একপক্ষীয় আচরণ, রাতভর কুয়েত মৈত্রী হলে ব্যালটে ভোট প্রদান, বিভিন্ন প্রার্থীর ওপর হামলা ও ভোটারদের বাধা দেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদে ভোট বর্জন করলাম।”

ছাত্রদল কর্মীরা এ সময় ‘প্রহসেনর নির্বাচন মানি না’ বলে স্লোগান দেয়।

এদিকে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনও দুপুরে এক বিবৃতিতে ডাকসু নির্বাচনের ভোট বর্জনের কথা জানায়।

সেখানে বলা হয়, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ ২৮ বছর পর ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে আশার সঞ্চার হয়েছিল, তা ভোট ডাকাতির এই ঘৃণ্য তাণ্ডবে নিমিশেই নিঃশ্বেস হয়ে গেছে।”

ভোট বর্জনের ঘোষণা দেওয়া প্যানেলগুলোর বাইরে ছাত্রলীগ, জাসদ ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ জাসদ (আম্বিয়া) সমর্থিত ছাত্রলীগ-বিসিএল, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট ও ছাত্র সমাজের পূর্ণ প্যানেল রয়েছে ডাকসুতে।