দেড় যুগ পর শনিবার এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বাম দলগুলোর সমর্থকরা দুই ভাগ হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও দিন শেষে ২৫টি পদের মধ্যে ১৯টিতে তারাই জিতেছে। আর ছয়টিতে জয় পেয়েছে বিএনপি সমর্থকেরা।
এবার ৪৪ জন স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করলেও তাদের কেউ জয় পাননি।
এ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক জানিয়েছেন, চার হাজার ৩৭৩ জন ভোটারের মধ্যে তিন হাজার ৬৩৫ জন তাদের ভোট দিয়েছেন। অর্থাৎ, ভোট পড়েছে ৮৩ শতাংশের বেশি।
সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবীরের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ও বাম সমর্থকদের প্যানেল ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল জোট’ পেয়েছে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটদের ১৮টি পদ।
আর আওয়ামী লীগ ও বাম সমর্থকদের অপর প্যানেল ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও প্রগতিশীল গ্রাজুয়েটস মঞ্চ’ থেকে একমাত্র আব্দুল মান্নান চৌধুরী (১০২৭ ভোট) জয়ের দেখা পেয়েছেন।
অন্যদিকে বিএনপি সমর্থকদের ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, বহুদলীয় গণতন্ত্র ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী’ প্যানেল ছয়টি পদে জয়ী হয়েছে।
এরা হলেন- মোহাম্মদ কামরুল আহসান (১৩৪২ ভোট), শিহাব উদ্দিন খান (১৩০৭ ভোট), শামীমা সুলতানা (১২০৮ ভোট), মো. শামছুল আলম (১১৮৪ ভোট), সাবিনা ইয়াসমিন (১০৩০ ভোট) এবং মুহম্মদ নজরুল ইসলাম (১০১০ ভোট)।
প্রার্থীদের মধ্যে খন্দকার মহিদ উদ্দিন সর্বোচ্চ ২১৪৪ ভোট পেয়ে প্রথম হয়েছেন। আর আনোয়ার হোসেন মৃধা ৯৭৫ ভোট পেয়ে হয়েছেন ২৫তম।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ভবন এবং কলা ও মানবিকী অনুষদ ভবনে দুটি কেন্দ্রে শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এই ভোটগ্রহণ চলে। রাতভর গণণা শেষে রোববার ভোর পৌনে ৫টায় ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মর্কতা মনজুরুল হক।
তিনি বলেন, “শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হওয়ার পর সফলভাবে ফলাফল প্রকাশ করতে পারায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষক-ছাত্র-কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল জোট’ প্যানেলের আহ্বায়ক অজিত কুমার মজুমদার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের মধ্যে বিভক্তি না হলে ফল আরও ভালো হতে পারত। যাই হোক, এই নির্বাচনটা হওয়া জরুরি ছিল।”
সিনেটে যেহেতু জাকসুরও প্রতিনিধিত্ব আছে, তাই পূর্ণাঙ্গ সিনেট গঠন করতে জাকসু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতেও কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন অজিত কুমার মজুমদার।
বিএনপি সমর্থক প্যানেলের প্রার্থী শামছুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম আরও ভালো করব। আশা করি সুন্দর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় সিনেটে আমাদের কার্যকর ভূমিকা থাকবে।”
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ ১৯৯৮ সালে সিনেটে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচন হয়েছিল। দীর্ঘদিন পর ভোট হওয়ায় এ নির্বাচন ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছিল উৎসবের আমেজ।
সিনেটে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধির ২৫টি পদের জন্য এবার তিনটি প্যানেল ও স্বতন্ত্রদের মিলিয়ে প্রার্থী ছিলেন মোট ১১৯ জন।
বিজয়ী প্রার্থীরা আগামী তিন বছর সিনেটে সাবেক শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করবেন।