এখন থেকে সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত বোর্ডের অধীনে চলবে বেসরকারি এ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
Published : 16 Jan 2025, 09:49 PM
সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) মেয়রকে চেয়ারম্যান করে চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ড পুনর্গঠন করে দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
নতুন এ নির্দেশনার ফলে সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত বোর্ডের অধীনে চলবে বেসরকারি এ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোছা. রোখছানা বেগম সাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, “প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রামের সার্বিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে” ট্রাস্টি বোর্ড পুনর্গঠন করা হল।”
বোর্ড পুনর্গঠন করে দেওয়া মন্ত্রণালয়ের চিঠি পাওয়ার বিষয়টি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
বোর্ডে পদাধিকার বলে আসা বাকি সদস্যরা হলেন- চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য, সিসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব, সিসিসি’র শিক্ষা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান, সিসিসি’র দুই প্যানেল মেয়র এবং সিসিসি’র হিসাব ও নিরীক্ষা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান।
৫ অগাস্টের পর থেকে সিসিসি’র সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনকে আর জনসম্মুখে দেখা যায়নি। একদল শিক্ষার্থীর আন্দোলনের মুখে ৭ ডিসেম্বর উপাচার্য অনুপম সেনের পদত্যাগের পর বর্তমানে সিসিসিতে উপাচার্য পদটি শূন্য রয়েছে।
সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র এবং স্থায়ী কমিটিগুলোর চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পান নির্বাচিত কাউন্সিলররা। বর্তমানে সিসিসিতে নির্বাচিত কোনো কাউন্সিলর নেই।
সে হিসেবে নবগঠিত বোর্ড অব ট্রাস্টিজের নয়টি পদের মধ্যে ছয়টিই খালি থাকবে।
বিষয়টি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সিসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “এখন প্যানেল মেয়ররা নেই, কিন্তু স্থায়ী কমিটিগুলো গঠন করা সম্ভব। সেগুলো গঠন হলে স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যানদের পাওয়া যাবে।
“বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান মেয়র মহোদয় সভা আহ্ববানের নির্দেশ দিয়েছেন। সভায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।”
নিজে মেয়র থাকাকালে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়য়টিতে করপোরেশনের ‘হস্তক্ষেপ’ঠেকাতে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেছিলেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী।
ওই রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের জুনে দেওয়া রায়ে আদালত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও ব্যবস্থাপনার এখতিয়ার সিটি করপোরেশনের নেই বলে সিদ্ধান্ত দেয়।
পাশাপাশি উদ্যোক্তা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে দেওয়ানী আদালতের দারস্থ হতে বলেছিল উচ্চ আদালত।
ওই রিটের প্রেক্ষিতে তখন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি পরিচালনায় করপোরেশনের হস্তক্ষেপ চেয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) দেওয়া একটি চিঠির কার্যক্রম স্থগিত করেছিল উচ্চ আদালত।
গত ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে এ বিষয়ে ইউজিসির করা লিভ টু আপিলের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের আদেশটির কার্যকারিতা স্থগিত করে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত।
২০১৬ সালে উচ্চ আদালতের আদেশের পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণ মহিউদ্দিন চৌধুরীর পরিবারের হাতেই ছিল।
সেসময় তারা যে বোর্ড অব ট্রাস্টিজ গঠন করেছিলেন তাতে চেয়ারম্যান পদে ছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী হাসিনা মহিউদ্দিন ও ছোট ছেলে বোরহানুল হাসান চৌধুরী সালেহীন, এস আলম গ্রুপের তিন কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদ, আবদুস সামাদ লাবু ও মোহাম্মদ শহীদুল আলম।
তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন, আওয়ামী লীগ নেতা বিপ্লব বড়ুয়া, নাট্যজন নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, আওয়ামী লীগ নেতা রেমন্ড আরেং, প্রকৌশলী শহীদুল আলম এবং সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবিহা মূসাও ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায়।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/সিএম/এমসি/কেএমএম
আরও পড়ুন
'যথাযথ প্রক্রিয়ায়' প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি ফিরে পাওয়ার আশা মেয়রের
প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি পরিচালনা করবে সিটি করপোরেশন: শাহাদাত
ভোটের সাড়ে তিন বছর পর শাহাদাতকে চট্টগ্রামের মেয়র ঘোষণার রায়
আন্দোলনের মুখে উপাচার্যের পদ ছাড়লেন অনুপম সেন
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও ব্যবস্থাপনার এখতিয়ার সিসিসি'র নেই