গরমের শুরুতেই এসি বিক্রি বেড়েছে দেড়গুণ

নাভিশ্বাস ওঠা গরমের মধ্যে মৌসুমের শুরুতেই এপ্রিল মাসজুড়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্রের (এসি) বিক্রি বেড়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে দেড়গুণেরও বেশি।

ফারহান ফেরদৌসআশিক হোসেন এবং বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 April 2014, 04:07 PM
Updated : 26 April 2014, 05:10 PM

উৎপাদক ও আমদিনকারকরা জানিয়েছে, হঠাৎই তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় চাহিদার তুলনায় যোগানে টান পড়েছে। তাই অনেকেরই এসির স্টকও ইতোমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে।

কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রচণ্ড গরম আবহাওয়ার মধ্যেই বৃহস্পতিবার পাঁচ দশকের সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

দেশিয় এসি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের বিপণন বিভাগের প্রধান এনামুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের হিসেবে বছরে সারা দেশে প্রায় ৭০ হাজার এসি বিক্রি হয়। এবছর এর পরিমাণ অন্তত ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

“ইতোমধ্যে আমাদের এসির স্টক কয়েকবার শেষ হয়ে গেছে। আমরা প্রোডাকশন করেও চাহিদা মেটাতে পারছি না।”

চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ এসি উত্পাদন করতে হচ্ছে বলে জানান ওয়াল্টনের এ কর্মকর্তা।

বাংলাদেশে স্যামস্যাং-এর ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান ইলেক্ট্রা ইন্টারন্যাশনালের কর্পোরেট সেলস বিভাগের প্রধান সাইফুদ্দিন টুকু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা সাধারণত একলক্ষ গ্রাহকের চাহিদার কথা মাথায় রেখে এসি আমদানি করি। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর চাহিদা অনেক বেশি, প্রায় ৮৫ শতাংশ বেশি।”

এসি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এআর ইলেক্ট্রনিক্স এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এসির বিক্রি অন্তত ৫০ শতাংশ বেড়েছে। এর আগে কখনো এতো চাহিদা চোখে পড়েনি। যেহেতু ইদানিং প্রচন্ড গরম, তাই মানুষ একটু স্বস্তি খুঁজতে চায়।”

একই তথ্য দিলেন এস্কোয়ার ইলেক্ট্রনিক্সের সেলস এক্সিকিউটিভ আহসান হাবিব। জেনারেল, সার্প এবং মিটসুবিসির এসি আমদানি করে এ প্রতিষ্ঠানটি। 

জাপানের ডাইকিন এসির আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এয়ার কন্ডিশন ওয়ার্ল্ডের পরিচালক আকরাম হোসেন জানান, বছরে তাদের এসির চাহিদা থাকে প্রায় ৩০ হাজার।

“এবছর চাহিদা এর চেয়ে ১০-১৫ শতাংশ বেশি দেখা যাচ্ছে।”

শনিবার সন্ধ্যায় কিছুটা বৃষ্টি ও ঠান্ডা বাতাস বইলেও আগামী এক-দুই মাসে এসির চাহিদা আরো বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন এই আমদানিকারক।

সিঙ্গার ইলেক্ট্রনিক্স এ রিংরোড শাখা ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন জানান, ইতোমধ্যে এসির স্টক শেষ হয়ে এসেছে।

“আমাদের এখানে বেশি চাহিদা সিঙ্গারের দেড়টন এসি। এর দাম সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকায় চাহিদাও বেশি। এরপরেই বিক্রি হচ্ছে হাইয়ার ব্র্যান্ডের এসি।”

স্যামসাং (ইলেক্ট্রা) -এর মিরপুর শোরুম ইনচার্জ তৌহিদ আহমেদ বলেন, “এই গরমে এসির বিক্রি অনেক বেড়েছে, আমাদের এসির স্টক শেষ যা ছিল তা বিক্রি হয়ে গেছে। এবার বাংলাদেশে রেকর্ড পরিমাণ এসি বিক্রি হয়েছে । দোকান খুললেই ৮টা থেকে ১০টা বিক্রি কোন ব্যাপার না।”

এসির স্টক খালি হয়ে যাওয়ার পরে নতুন স্টক নিয়ে আসা হয়েছে মিরপুরের সনি র্যাং গস-এর শো রুমে।

শো রুম ইনচার্জ হাসিব চৌধুরী বলেন, “দাম বৃদ্ধি পেলেও বিক্রি বাড়ছে। আমাদের আগের স্টক শেষ নতুন স্টক এসেছে।”

এলজি বাটার ফ্লাই-এর শো রুম ইনচার্জ এম এ হামিদও দিয়েছেন একই তথ্য।

বছরে আনুমানিক প্রায় ছয়শ’ কোটি টাকার এসি বাংলাদেশের বাজারে বিক্রি হয় বলে জানিয়েছেন ইলেক্ট্রার সেলস বিভাগের প্রধান সাইফুদ্দিন টুকু।