যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি ফিরিয়ে দেবে, আশা সরকারের

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলদেশি পণ্যের জিএসপি সুবিধা স্থগিতের সিদ্ধান্তকে দুঃখজনক অভিহিত করে শিগগিরই আবার এই সুবিধা ফিরে পাওয়ার আশা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 June 2013, 00:45 AM
Updated : 28 June 2013, 02:35 AM
শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “জিএসপি স্থগিতের দুর্ভাগ্যজনক সিদ্ধান্তের বিষয়টি বাংলাদেশ সরকার জানতে পেরেছে। অবশ্য দেশের ভিতরে এবং যুক্তরাষ্ট্রে কিছু লোক আগে থেকেই ওই সুবিধা বাতিলের দাবিতে চেষ্টায় ছিল।”

বাংলাদেশ সরকার যেখানে তাদের বাণিজ্য সহযোগীদের ইচ্ছা এবং সিদ্ধান্তের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা দেখিয়ে আসছে সেখানে জিএসপি বাতিলের এই কঠোর সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের সম্প্রসারণে ‘নতুন করে বাধা’ সৃষ্টি করবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে সরকারের এই বিবৃতিতে।

“দেশের কারখানাগুলোর নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার যেখানে বেশ কিছু উপযুক্ত ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিয়েছে ঠিক সেই সময় বাংলাদেশের কারখানার শ্রমিকদের জন্য জিএসপি বাতিলের মতো সিদ্ধান্তের চেয়ে দুঃথজনক খবর আর হতে পারে না।”    

এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি শ্রম আইন সংশোধনের উদ্যোগ এবং আইএলওর মধ্যস্ততায় সরকার-শ্রমিক-মালিক ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সম্পাদন এবং পোশাক কারখানার নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে মন্ত্রিসভা কমিটি করার বিষয়টি উল্লেখ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।        

তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ড ও রানা প্লাজা ধসে ১২ শ’র বেশি শ্রমিক নিহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে কারখানার কর্ম পরিবেশের উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের পণ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাজার-সুবিধা (জিএসপি) স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ২টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি মাইকেল ফ্রোম্যান এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।

একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি পণ্য রপ্তানি করে যুক্তরাষ্ট্রে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর হিসাবে, ২০১১-১২ অর্থবছরের বাংলাদেশ মোট রপ্তানি করেছে ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের বেশি পণ্য। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে মোট রপ্তানির ২১ শতাংশ (৫০০ কোটি ডলার)।

জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রিফারেন্সেসের (জিএসপি) আওতায় বাংলাদেশের বেশ কিছু পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেত, যদিও এর মধ্যে দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক নেই।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, “বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী উন্নত দেশগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে জিএসপি সুবিধা দিয়ে থাকে। সরকার আশা করছে, যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন শিগগিরই বাংলদেশকে এই সুবিধা ফিরিয়ে দেবে।”

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এই সিদ্ধান্তের পরও বিদেশি ক্রেতারা তাদের ‘দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত অংশীদার’ বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করা হয়েছে বিবৃতিতে।

এতে বলা হয়, “১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এবং পরে বিভিন্ন সময়ে দেশে ও দেশের বাইরে বিভিন্ন ঘটনায় বাংলাদেশের মানুষের লড়াকু মনোভাবের পরিচয় বিশ্ব পেয়েছে। সেই মানসিকতার বলেই তারা নিজেদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটিয়ে বিশ্বের কাছে একটি উদ্যোগী জাতির সম্মান আদায় করে নেবে।”