'ট্রানজিট নিয়ে বিতর্ক অশিক্ষিত বিতর্ক'

ট্রানজিট দেওয়া নিয়ে বিতর্ককে 'অশিক্ষিত বির্তক' বলে অভিহিত করেছেন সিপিডি চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Feb 2011, 07:45 AM
Updated : 5 Feb 2011, 07:45 AM
চট্টগ্রাম, ফেব্রুয়ারি ০৫ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- ট্রানজিট দেওয়া নিয়ে বিতর্ককে 'অশিক্ষিত বির্তক' বলে অভিহিত করেছেন সিপিডি চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান।
তিনি বলেন, "বাংলাদেশে ট্রানজিট বাস্তবায়ন হলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক সুদৃঢ় হবে।
"যারা ভারতের সঙ্গে এই আঞ্চলিক সহযোগিতায় সংযুক্ত হওয়া ঠিক নয় বলেন, তারা ভুল বলেন।"
অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান শনিবার সকালে নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
ট্রানজিট নিয়ে সরকার দেশের 'স্বার্থবিরোধী' অবস্থান নিয়েছে- এ দাবি করে গতবছর ভারতের সঙ্গে এ সংক্রান্ত চুক্তি বাতিলের দাবি জানান বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
গত ৭ নভেম্বর এক সমাবেশে তিনি বলেন, ''ট্রানজিটের বিনিময়ে কিছু না পেলে চুক্তি বাতিল করুন। সহযোগিতা করব। শুল্ক বা ফি ছাড়া বাংলাদেশের ওপর দিয়ে কোনো বিদেশি গাড়ি চলতে দেওয়া হবে না। আমরা দেশের স্বার্থ রক্ষা করবোই।''
ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্টের ফি নির্ধারণে একটি নীতিমালা তৈরির সরকারি উদ্যোগের কথা গত ২ নভেম্বর জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, "ট্রানজিটের ওপর কোনো শুল্ক থাকতে পারে না। ট্রান্সশিপমেন্টের ওপর শুল্ক থাকতে পারে। তবে ট্রানজিটের ক্ষেত্রে যেহেতু আমরা আমাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেবো, তাই একটা ফি থাকতে পারে।"
এর দুদিন পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতকে ট্রানজিট দিলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে কতটা লাভবান হবে, তা খতিয়ে দেখার জন্য আহ্বান জানান। দেশের স্বার্থ রক্ষা হলে ট্রানজিটে বিএনপির আপত্তি থাকবে না বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
তিনি বলেন, "পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সীমান্ত দিয়ে পণ্য পরিবহন খুবই স্বাভাবিক বিষয়। অথচ বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে ট্রানজিট প্রদান নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করা হয়েছে।
"আমার মনে হয় এটা অশিক্ষিত বিতর্ক (রষষরঃবৎধঃব ফবনধঃব)."
অর্থনীতি সমিতি চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ সিকান্দার খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যরা বলেন, বিশ্বে আঞ্চলিক সহযোগিতা বেড়েছে। এটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেশের দুটি সমুদ্র বন্দরের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো গেলে তা দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নে ভুমিকা রাখতে পারবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত ছয়টি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হয়।
এগুলো হলো- 'চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনা', 'দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নে চট্টগ্রাম বন্দরের ভূমিকা', 'আঞ্চলিক ট্রানজিট এবং ট্রান্সশিপমেন্ট, চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনা দক্ষতা উন্নয়নে জেআইটি (জাস্ট ইন টাইম) পদ্ধতির প্রয়োগ', 'ট্রানজিট বনাম ট্রান্সশিপমেন্ট : কোনটি বাংলাদেশের জন্য শ্রেয়', 'প্রতিবেশী দেশের বন্দর ব্যবহার : ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্ট' এবং 'ট্রানজিটের রাজনৈতিক অর্থনীতি : বাংলাদেশের প্রাপ্তি।'
এতে আলোচনা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম, ড. ইরশাদ কামাল খান, চবি কলা অনুষদের ডিন ড. জ্যোতি প্রকাশ দত্ত, সিপিডি'র নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তাফিজুর রহমান, প্রকৌশলি সুলতান মাহমুদ, অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী, অধ্যাপক ড. আলী আশরাফ প্রমুখ।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমসি/কেএমএস/পিডি/২০৩৭ ঘ.