বাজেয়াপ্ত হয় ১২৩২ কোটি টাকা: মুহিত

জরুরি অবস্থা জারির পর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ১ হাজার ২৩২ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 March 2010, 06:06 AM
Updated : 15 March 2017, 06:44 AM

সরকারি দলের সংসদ সদস্য হাফিজউদ্দিন আহম্মেদের এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী সোমবার সংসদে এ তথ্য জানান।

হাফিজ অর্থমন্ত্রীর মন্ত্রীর কাছে জানতে চান, ওয়ান-ইভেনের পর কত টাকা বিভিন্ন ব্যবসায়ী বা প্রতিষ্ঠান থেকে সরকার বাজেয়াপ্ত করেছে এবং ট্রুথ কমিশনের মাধ্যমে কত টাকা সরকারি খাতে জমা পড়েছে।

বাজেয়াপ্ত অর্থের মোট পরিমাণ ১ হাজার ২৩১ কোটি ৯৫ লাখ ৬৪ হাজার ৯২৫ দশমিক ১৬ টাকা বলে মন্ত্রী জানান।

এ অর্থ ফেরত দেওয়ার পরিকল্পনা হচ্ছে বলে কয়েক মাস আগে কয়েকটি সংবাদপত্র খবর প্রকাশ হলে অর্থমন্ত্রী তা নাকচ করে বলেন, যে অর্থ একবার সরকারি কোষাগারে ঢুকে পড়ে তা আর ফেরত দেওয়া যায় না।

এর আগে গত ৯ মার্চ আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ সংসদে জানান, ট্রুথ কমিশনের অনুকম্পার জন্য আবেদনকারী ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে।

নতুন আয়করদাতা পৌনে ২ লাখ

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১০ এর জানুয়ারি পর্যন্ত ১ লাখ ৭৯ হাজার ৮১৯ জন নতুন নাগরিক আয়কর দেওয়ার তালিকাভুক্ত হয়েছেন।

মন্ত্রী জানান, গত অর্থবছরে (২০০৮-০৯) আদায় করা আয়করের পরিমাণ ছিলো ১৩ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা। আর চলতি অর্থবছরে (২০০৯-১০) আয়কর খাতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা।

অলাভজনক ৪ ব্যাংক

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মো. মুজিবুল হকের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মধ্যে তিনটি ব্যাংক (সোনালী, জনতা ও অগ্রণী) লাভজনক। আর চারটি ব্যাংক (রূপালী, কৃষি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-বিডিবিএল) অলাভজনক।

বৈদেশিক ঋণ ২৭ হাজার মিলিয়ন মার্কিন ডলার

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলালের এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী জানান, ১৯৭২ সাল থেকে ২০০৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ ২৭ হাজার ২১৭ দশমিক ৩৪৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক ঋণ নিয়েছে।

একই সময়ে এ ঋণের বিপরীতে সুদ বাবদ ৩ হাজার ৭৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে বলে মন্ত্রী জানান।

বরাদ্দের ৩৭ শতাংশ ব্যয়

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমের এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি ২০০৯-১০ অর্থবছরে অনুন্নয়ন বাজেটের আওতায় ৮৩ হাজার ৩১৯ কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হয়। ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বরাদ্দের ৩০ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। যা অনুন্নয়ন বাজেটের ৩৭ শতাংশ।

এ সময় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাবদ বরাদ্দের ৪৫ শতাংশ ছাড় হয়। ব্যয় হয়েছে মোট এডিপি'র ২৯ শতাংশ।

আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের তথ্য নেই

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য নসরুল হামিদের এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী জানান, আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার হওয়ার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য-প্রমাণ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয় বা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে নেই।

জঙ্গিদের অর্থায়ন ঠেকাতে নির্দেশনা

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য নাছিমুল আলমের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, জঙ্গি অর্থায়ন ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন সময়ে ব্যাংকগুলোকে নানা নির্দেশনা দিয়েছে। সব ব্যাংক এ বিষয়ে পৃথক নীতিমালা তৈরি প্রণয়ন করবে এবং ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ তা বাস্তবায়ন করবে।