বুধবার টাকার অঙ্কে আগের দিনের থেকে কমলেও একদিনের গড় কলমানি সুদের হার ৬০ পয়সা বা ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ বেড়ে ৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ হয়েছে, আগের দিন যা ছিল ৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
এদিন একদিনের (ওভার নাইট) জন্য ধার নেওয়া অর্থের পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা, মঙ্গলবার যা ছিল ৯ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা।
বুধবার একদিনের জন্য ধার নেওয়া অর্থের সর্বোচ্চ সুদহার ছিল ৬ শতাংশ আর সর্বনিম্ন ছিল ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ; দিন শেষে মোট লেনদেন হয়েছে ১৬৬টি।
কলমানি সুদহার বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যাংকাররা জানান, ঈদের ছুটি শুরু হচ্ছে শুক্রবার। এর আগে বৃহস্পতিবার শেষ ব্যাংকিং কার্যদিবসে নগদ টাকা তোলার চাহিদা আরও বাড়বে। সেই প্রস্তুতি নিতে তারল্যের চাপে থাকা ব্যাংকগুলো অন্য ব্যাংকের কাছ থেকে টাকা ধার নিতে কলমানিতে ধর্না দিচ্ছে।
আর বুধবারও বেতনভাতা পরিশোধ ও কোরবানি পশুকেন্দ্রিক ঈদের কেনাকাটার জন্য অনেকে টাকা তুলেছেন। এ দুই কারণে স্বল্প সময়ের আন্ত:ব্যাংক ঋণ নেওয়ার বাজার বলে পরিচিত কলমানিতে সুদহার বাড়ছে বলে তারা জানান।
সাধারণত ঈদের আগে টাকা তোলার হার বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকায় টান পড়ে। তখন কলমানি হারও কিছুটা বাড়ে জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘কোরবানির ঈদের সময়ে পশু কিনতে নগদ টাকার লেনদেন হয় বেশি। বৃহস্পতিবার ব্যাংকের শাখা বন্ধ হয়ে গেলে বড় অঙ্কের অর্থ বুথ থেকে তোলা যাবে না। কাউন্টারে নগদ উত্তোলনের চাহিদা মেটাতে ও বুথে টাকার প্রবাহ ঠিক রাখতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবেও অনেক ব্যাংক ধার করেছে।
‘‘এজন্য ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার চাহিদা বেড়েছে কিছুটা, যা সাময়িক। এতে বাজার চাহিদার কারণে কলমানিতে সুদহার সামান্য বেড়েছে।’’
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, কলমানিতে একদিনের জন্য ধার নেওয়া গড় সুদহার এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ১২৪ দশমিক ৬০ শতাংশ। একইসঙ্গে বেড়েছে অর্থ ধার নেওয়ার পরিমাণও।
গত বছরের ৬ জুলাই কলমানিতে একদিনের গড় সুদহার ছিল ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ, সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ আর সর্বনিম্ন ১ শতাংশ। ওই দিন বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ধার নিয়েছিল ২ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা।
আর চলতি বছর জুলাইয়ের প্রথম লেনদেন থেকে বুধবার পর্যন্ত দিনে ৯ হাজার কোটি টাকার উপরেই রয়েছে কলমানিতে ধার নেওয়ার পরিমাণ।