জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে সৌদি আরব

এশিয়ার ক্রেতাদের কাছে জুলাই মাসের জন্য ক্রুড বা অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ‘প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি’ বাড়িয়েছে সৌদি আরব।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 June 2022, 06:59 PM
Updated : 6 June 2022, 06:59 PM

সোমবার রয়টার্স জানায়, গ্রীষ্মে তেলের চাহিদা বেশি থাকার আশা এবং বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই অপ্রত্যাশিতভাবে বেশি পরিমাণে তেলের দাম বাড়ালো বিশ্বের শীর্ষ জ্বালানি তেল রপ্তানিকারক দেশটি।

আরব লাইট ধরনের ক্রুড অয়েলের আনুষ্ঠানিক বিক্রি মূল্য (ওএসপি) জুনে ওমান/দুবাই বাজারে ব্যারেল প্রতি সাড়ে ছয় ডলারে বিক্রি হয়েছে। জুলাইয়ে এই দাম দুই দশমিক এক ডলার বাড়ানো হয়েছে।

এখন জুলাইয়ে এশিয়ার ক্রেতাদেরকে ব্যারেল প্রতি ৮ দশমিক ৬ ডলারে সৌদি লাইট ক্রুড কিনতে হবে। তবে এই দাম এখনও মে মাসের ‘রেকর্ড বৃদ্ধি’র চেয়ে কম।

রয়টার্সের একটি জরিপে ধারণা দেওয়া হয়েছিল, ব্যারেল প্রতি এই দাম বৃদ্ধি জুলাইয়ে দেড় ডলারের কাছাকাছি থাকতে পারে। অথচ সৌদি আরব তেলের দাম দুই ডলারের বেশি বাড়িয়েছে।

এশিয়ার একজন তেল ব্যবসায়ী রয়টার্সকে বলেন, “এই দাম বৃদ্ধি অপ্রত্যাশিত, বিশেষ করে ‘আরব লাইট’। এই সিদ্ধান্তে আমরা হতভম্ভ।”

ইউক্রেইনে সামরিক অভিযানে কারণে রাশিয়ার জ্বালানি তেল আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়েনর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার ধাক্কা সামাল দিতে বিশ্বের জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট-ওপেক প্লাস জুলাই ও অগাস্টে তেলের উৎপাদন বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় তেল উৎপাদক কোম্পানি সৌদি আরামকো তেলের দাম বাড়ানোর এই ঘোষণা দিলো।

ছবি: রয়টার্স

ওপেক প্লাস দেশগুলো জুলাই ও অগাস্টে দৈনিক ৬ লাখ ৪৮ হাজার ব্যারেল করে তেল তোলার প্রতিশ্রুতি দিলেও উৎপাদনের এই পরিমাণটি জোটের সদস্য রাশিয়া এবং অ্যাঙ্গোলা ও নাইজেরিয়ার মতো দেশের মধ্যেও ভাগ করে দেওয়া হয়েছে, যারা তেল উৎপাদন নিয়ে সঙ্কটে আছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে যে আনুষ্ঠানিক পরিকল্পনার চেয়ে কম তেল উৎপাদন করা হতে পারে।

বিশ্বের উত্তর গোলার্ধের দেশ যেমন যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণত জুলাইয়ে গাড়ি চালানোর মৌসুমের শুরু হিসেবে ধরা হয় এবং এ সময়ে সেখানে জ্বালানি তেলের চাহিদা ব্যাপক বাড়ে। অন্যদিকে বিশ্বের শীর্ষ তেল আমদানিকারক দেশ চীনও কোভিড-১৯ এর দীর্ঘ লকডাউন শিথিল করতে শুরু করায় সাংহাইয়ের মতো বড় শহরগুলোতে ব্যবসায়িক কার্যক্রম বাড়তে শুরু করছে।

এশিয়ার আরেকজন তেল ব্যবসায়ী বললেন, “এই সময়ে (তেলের) চাহিদা খুবই শক্তশালী অবস্থানে আছে এবং এ জন্যই সৌদিরা ওএসপি বাড়ানোর সাহস করেছে।”

অবশ্য চীন ও ভারত রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানি অব্যাহত রাখায় সৌদি আরবের তেলের চাহিদার ওপর চাপ হয়ত কিছুটা লাঘব হতে পারে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

রোববার রাতে ইউরোপ এবং ভূমধ্যসাগরীয় ক্রেতাদের জন্যও জুলাইয়ের তেলের দাম বাড়িয়েছে সৌদি আরামকো, তবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।