সোমবার খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের সভাপতিত্বে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির (এফপিএমসি) সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বৈঠক শেষে খাদ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “চাল শুল্কমুক্তভাবে যাতে আনা (আমদানি করা) যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এতে করে কৃষক, বাজার ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্যরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটা নিশ্চিত করা হবে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে।”
সম্প্রতি ভরা মৌসুমে চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “মিটিংয়ের রেজ্যুলেশনসহ সারসংক্ষেপ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দ্রুতই পাঠানো হবে এবং এরপর পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।”
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গত মওসুমে চাল আমদানির যে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল, তার মেয়াদ শেষ হয়েছে গত বছরের ৩১ অক্টোবর। ওই সময়ের মধ্যে যারা এলসি খুলতে পেরেছিলেন, তারাই পরে চাল আমদানি করতে পেরেছেন।
চাল আমদানির সুযোগ বাড়াতে সে সময় সাময়িকভাবে বিদ্যমান শূল্ক সাড়ে ৬২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছিল। অনেক আমদানিকারক খাদ্যমন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়েও পরে চাল আমদানি করেননি। ফলে ১৭ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হলেও দেশে আসে ৮ লাখ টনের মত।
আমদানি অনুমোদন দেওয়ার পর শুল্ক কমানো হলেও অভ্যন্তরীণ বাজার নিম্নমুখী হওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরা তখন আগ্রহ হারিয়েছিলেন।
এবার বোরো মওসুমে ধানের কাঙ্ক্ষিত ফলন হলেও বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও ধান চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে শুরু করে। বড় বড় মিল ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ভালো মুনাফার আশায় ধানের মজুদ শুরু করায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
এই প্রেক্ষাপটে সারা দেশে ধান ও চালের অবৈধ মজুদ খুঁজে বের করতে অভিযান চালাচ্ছে সরকারের বিভিন্ন তদারক সংস্থা। এসব অভিযানে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাও করা হচ্ছে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “অভিযানের সুফল ভোক্তারা পেতে শুরু করেছে। বেসরকারিভাবে আমদানি হলেও অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
অন্যদের মধ্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির বৈঠকে অংশ নেন।