ইভ্যালি কাকে কত টাকা দিয়েছে, জানতে চায় হাই কোর্ট

আলোচিত ই-কমার্স কোম্পানি ইভ্যালির তহবিল থেকে সাবেক চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন সময় যে অর্থ পরিশোধ করেছেন, সেসব তথ্য দাখিল করতে কয়েকটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 April 2022, 08:35 AM
Updated : 27 April 2022, 08:35 AM

ইভ্যালির বর্তমান পরিচালনা বোর্ডের এক আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক হাই কোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেয়।

আদেশে ব্র্যাক ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, সিটি ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, সাউথ ইস্ট ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, বিকাশ, নগদ ও সফ্টওয়্যার সফ্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে এসব তথ্য আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

আদালতে ইভ্যালির অবসায়ন চেয়ে করা রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসাইন। ইভ্যালি পরিচালনা বোর্ডের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোরশেদ আহমেদ খান।

মাহসিব হোসাইন পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যখন ইভ্যালি পরিচালনা হচ্ছিল সাবেক এমডি ও চেয়ারম্যানের মাধ্যমে, তখন প্রতিষ্ঠানের ফান্ড থেকে কিছু পেমেন্ট বিভিন্ন ব্যক্তিকে দিয়েছেন। এই তথ্যটা যেন বোর্ডের কাছে প্লেইস করা হয়।”

এ বিষয়ে এক আবেদনের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট ওইসব কোম্পানির এমডি ও সিইওকে সাবেক এমডি ও চেয়ারম্যান কোথায়, কত টাকা এবং কোন ব্যক্তিকে দিয়েছেন তা আদালতের কাছে দাখিল করতে বলা হয়েছে বলে জানান এই আইনজীবী।

গত ১৯ এপ্রিল ইভ্যালির অবসায়ন চেয়ে করা রিট মামলায় কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকেও পক্ষভুক্ত করেছে আদালত।

আট মাস কারাবন্দি থাকার পর জামিন পেয়ে গত ৬ এপ্রিল কারামুক্ত হন শামীমা। এরপর ৯ এপ্রিল তিনি ইভ্যালিকে ফের ‘দাঁড় করানোর জন্য’ গ্রাহকদের কাছে আরও কিছুদিন সময় চান।

শামীমার স্বামী, ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও এমডি মো. রাসেল গত ২১ এপ্রিল চেক প্রতারণার নয় মামলায় জামিন পেলেও তার বিরুদ্ধে আরও মামলা থাকায় এখনও মুক্তি পাননি।

গ্রাহক ঠকানোর অভিযোগের মধ্যে ইভ্যালির অবসায়ন চেয়ে এক গ্রাহকের আবেদনে গত বছর ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সম্পদ বিক্রি ও হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দেয় হাই কোর্ট।

ওই আদেশে বলা হয়েছিল, বিক্রি, হস্তান্তর বা অন্য কোনো উপায়ে ইভ্যালির সম্পদে কেউ হাত দিতে পারবে না।

সম্পদ হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি ইভ্যালিকে কেন অবসায়ন করা হবে না, সেই কারণ দর্শাতেও বলা হয়।

পরে ৩০ সেপ্টেম্বর রিট আবেদনকারী পক্ষ পরিচালনা পর্ষদ গঠনের আরজি জানালে ইভ্যালির যাবতীয় নথি তলব করে হাই কোর্ট।

সে অনুযায়ী রেজিস্ট্রার ফর জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস নথি দাখিল করলে গত বছরের ১৮ অক্টোবর হাই কোর্ট ইভ্যালির ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে নিতে পাঁচ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দেয়।

এ পর্ষদের চেয়ারম্যান করা হয় আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. রেজাউল আহসান, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ফখরুদ্দিন আহম্মেদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খান মোহাম্মদ শামীম আজিজকে পর্ষদে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।

এ পর্ষদে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন আছেন ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে।