তেল, চিনির মত নিত্যপণ্য আমদানিতে ভ্যাট কমানোর নির্দেশ মন্ত্রিসভার

সার্বিক বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভোজ্য তেল, চিনিসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট কমানোর নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 March 2022, 07:03 AM
Updated : 14 March 2022, 10:35 AM

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) এই নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “ভোজ্য তেল আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে। এটা কীভাবে, কতটুকু কমানো যায়, সে বিষয়ে এনবিআরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভোজ্যতেল, চিনিসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যে আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট কমাতে বলা হয়েছে।”

কোন কোন পণ্যে আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট কমাতে মন্ত্রিসভা নির্দেশনা দিয়েছে জানতে চাইলে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “যেটি ক্রাইসিসে থাকবে, সেটার ভ্যাট কম পর্যায়ে নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। (ভ্যাট) একেবারে তুলে দেওয়া যাবে না। কারণ তখন এনবিআরের কাছে হিসেব থাকবে না। লোয়েস্ট পর্যায়ে নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিসভা।”

বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তে থাকায় গত কিছুদিন ধরেই হিমশিম খেতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে বিক্রেতারা দাম বাড়াতে থাকায় সরকারকে উদ্যোগী হতে হয়েছে।    

দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে করণীয় নির্ধারণে রোববার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে বৈঠকে বসেন পাঁচ মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বের ওই বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ অংশ নেন।

বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত হয়, নিত্যপণ্যের ওপর ভ্যাট-শুল্ক কমানোর পাশাপাশি সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে দুই একদিনের মধ্যে টাস্কফোর্স গঠন করা হবে।

এ টাস্কফোর্স প্রয়োজন অনুযায়ী অস্বাভাবিক দাম নেওয়া বন্ধে পদক্ষেপ নেবে এবং বাজার তদারকি বাড়ানোর পাশপাশি অবৈধ মজুদ বন্ধে 'হস্তক্ষেপ' করবে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে সারাদেশে ওএমএসের কার্যক্রম এবং টিসিবির ট্রাকের সংখ্যা বাড়ানো, নিত্যপণ্যের ওপর ভ্যাট ও ট্যাক্স প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্তও হয় ওই বৈঠকে।

বাণিজ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সোমবারের মধ্যে চিনি ও ভোজ্যতেলের ভ্যাট কমানোর প্রজ্ঞাপন জারির চেষ্টা চলছে।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) মনিটরিং সেলের হিসাবে, গত পাঁচ বছরে চাল-ডাল, তেল, লবণ, হলুদ-মরিচ, সবজি, মসলাসহ জীবনধারনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দাম অনেক ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

এই সময়ে সয়াবিন তেলের দাম ৩৮ শতাংশ, আর পাম তেল ৬৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। গরুর মাংসের দাম ১৫ শতাংশ, খাসির মাংস ২৩ শতাংশ এবং দেশি মুরগির দাম বেড়েছে ৩৯ শতাংশ।

পুরান খবর: