ঘোষণার আগেই সয়াবিন তেলের দামে ঊর্ধ্বগতি

সয়াবিন তেলের বিদ্যমান দাম দুই সপ্তাহের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে হেরফের না হওয়ার কথা বলা হলেও খুচরা বাজারে তা বাড়তে শুরু করেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Jan 2022, 05:14 PM
Updated : 21 Jan 2022, 05:14 PM

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের বৈঠকের পর বাণিজমন্ত্রী টিপু মুনশির এমন ঘোষণার দুদিন না যেতেই খোলা সয়াবিনের দাম বেড়েছে বাজারে।

শুক্রবার রাজধানী ঢাকার বাজারে খুচরায় খোলা সয়াবিন তেল তিন থেকে পাঁচ টাকা বেড়ে প্রতি লিটার ১৪৫ টাকা থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। দোকানিরা বলছেন, আগের সপ্তাহে এ দর ছিল ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা।

অথচ সরকারিভাবে খোলা সয়াবিন তেলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য প্রতি লিটারে ১৩৬ টাকা নির্ধারণ করা আছে। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ দরেই তা বিক্রি হওয়ার কথা।

তবে বোতলজাত সয়াবিন তেল আগের মতোই সরকার নির্ধারিত লিটারপ্রতি ১৬০ টাকা দরেই বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দোকানিরা। এর বাইরে কোনো কোনো ব্র্যান্ড বোতল বা প্যাকেটজাত তেলের খুচরা দর ১৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে।

রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে পাম অয়েলের দামও লিটারে ১/২ টাকা বেড়ে ১৩২ থেকে ১৩৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে; গত সপ্তাহ যা ছিল ১৩০ থেকে ১৩৬ টাকা।

বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়ার কারণ দেখিয়ে চলতি মাসের শুরুতে লিটারে আট টাকা করে বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে সরকারের কাছে গেছে সয়াবিন তেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলো।

গত বুধবার এ নিয়ে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বৈঠক শেষ বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, আগামী ১৫ দিনে সয়াবিন তেলের দামে কোনো পরিবর্তন হবে না। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি আমরা বসে সিদ্ধান্ত নেব যে সয়াবিন তেলের দাম বাড়বে না কি কমবে।

ওই বৈঠকে উপস্থিত মেঘনা গ্রুপের একজন প্রতিনিধি জানিয়েছিলেন, তিন মাস আগে যখন সয়াবিন তেলের মূল্য ঠিক করা হয়, তখন বিশ্ববাজারে প্রতি টন অপরিশোধিত তেলের মূল্য ছিল ১২৫০ থেকে ১৩০০ ডলার। বর্তমানে তা ১৪০০ ডলারের কাছাকাছি চলে গেছে। সেকারণেই তেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয় মন্ত্রণালয়ে।

শুক্রবার টিসিবি বাজারদরের যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতেও দেখা যায়, এক সপ্তাহ আগে প্রতি লিটার ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় সয়াবিন তেল বিক্রি হলেও চলতি সপ্তাহে তা দাঁড়িয়েছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়।

রাজধানীর বাজারেও টিসিবির দরেই বিক্রি হতে দেখা গেছে। মিরপুর পীরেরবাগ এলাকার মুদি দোকানি শরীফ হোসেন জানান, তারা কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৫০ টাকায় এবং পাম তেল ১৪৫ টাকায় বিক্রি করছেন।

রামপুরা শান্তিনগর এলাকার মুদি দোকানগুলোতে খোলা তেল প্রতি লিটার ১৪৫ থেকে ১৪৮ টাকা এবং পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ১৩৬ টাকায়।

পাইকারি বাজারে তেলের দাম বাড়ানোর সঙ্গে সমন্বয় করেই খুচরা বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে।

বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সহ সভাপতি মোহাম্মদ আলী ভুট্টো জানান, চলতি সপ্তাহে পাইকারি বাজারে প্রতি লিটার ১৩৬ টাকায় সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে। গত দুই সপ্তাহ ধরেই এ দাম চলছে।

এর আগে দাম কিছুটা কম ছিল জানালেও তখনকার মূল্য মনে করতে পারেননি তিনি।

আরও পড়ুন: