দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ২ বিলিয়ন ডলারে নিতে কাজ চলছে: থাই রাষ্ট্রদূত

বাংলাদেশের সঙ্গে থাইল্যান্ডের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য দুই বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমোর।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Dec 2021, 03:59 PM
Updated : 4 Dec 2021, 04:00 PM

থাইল্যান্ডের জাতীয় দিবস সামনে রেখে শনিবার এক বাণীতে তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে বিশ্ব অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ও থমকে যাওয়ার আগে থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়িয়ে ২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য ছিল।

এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দুদেশ অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে থাই রাষ্ট্রদূত জানান।

২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত থাইল্যান্ডের সঙ্গে মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি থাকলেও বেশ ঘাটতিতে ছিল বাংলাদেশ। সে ঘাটতি কমিয়ে আনতে ৩৬টি পণ্যে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা চেয়ে আসছে বাংলাদেশ।

২০২০ সালে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে দুদেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ১ বিলিয়ন ডলারের নীচে নেমে আসে।

বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড বাণিজ্য (মিলিয়ন ইউএস ডলার)

বছর

রপ্তানি

আমদানি

মোট

২০১৬

৫৫.৯২

৯৩৯.৬৬

৯৯৫.৫৮

২০১৭

৬১.০৭

১২৫৬.৩৭

১৩১৭.৪৪

২০১৮

৫৯.২৪

১২০০.২১

১২৫৯.৪৫

২০১৯

৮০.৭৪

৯৮৭.১৬

১০৬৭.৯০

২০২০

৫০.৮২

৮৫৯.২৩

৯১০.০৫

ব্যাংক অব থাইল্যান্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে দুই দেশে মধ্যে ১ দশমিক ৩১৭ বিলিয়ন ডলার, ২০১৮ সালে ১ দশমিক ২৫৯ বিলিয়ন এবং ২০১৯ সালে ১ দশমিক শূন্য ৬৭ বিলিয়ন ডলার ছিল।

দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ২০২০ সালে নেমে আসে ৯১০ মিলিয়ন ডলারে, যেখান থেকে ২ বিলিয়ন ডলারে তোলার কথাই থাই জাতীয় দিবসের বাণীতে বলেছেন দেশটির রাষ্ট্রদূত।

প্রতি বছর ৫ ডিসেম্বর রাজা ভূমিবল আদুলিয়াদের জন্মবার্ষিকীর দিনকে জাতীয় দিবস হিসাবে উদযাপন করে থাইল্যান্ডের মানুষ।

রাজা ভূমিবল ২০১৬ সালে পরলোকগমন করেছেন। থাইল্যান্ডের মানুষ দিবসটিকে তাদের পিতা মহাময়ের অনুগ্রহের স্মরণে জাতীয় দিবস এবং বাবা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।

দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে ‍মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির প্রক্রিয়া নিয়ে রাষ্ট্রদূত সুমিতমোর বলেন, একটি দ্বিপক্ষীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বিবেচনাধীন অবস্থায় থাইল্যান্ডের আন্দামান উপকূল এবং বঙ্গোপসাগরের মধ্যে আরও সাশ্রয়ী সমুদ্র পরিবহন ব্যবস্থা চালুর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

“এই নতুন সংযোগ স্থাপনে থাইল্যান্ড ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেদের মধ্যে জোরালো সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।”

থাইল্যান্ড অন্যতম বন্ধুরাষ্ট্র যে বাংলাদেশকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এবং দুই দেশের মধ্যে কূটনীতিক সম্পর্ক স্থাপন হয় ১৯৭২ সালের ৫ অক্টোবর।

২০২২ সালে থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবে জানিয়ে তিনি বলেন, “দুটি রাষ্ট্রই নিজেদের জনগণের কল্যাণ সাধনের লক্ষ্যে বিগত পাঁচ দশক যাবত উভয়ের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে আসছে।”

রাষ্ট্রদূত সুমিতমোর বলেন, সম্পর্কের শুরু থেকেই উভয় দেশের মধ্যে বিভিন্ন খাতে বিভিন্ন মাত্রায় ব্যাপক সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে ২০১৩ সালে শুরু করা প্রযুক্তিগত সহযোগিতার মধ্য দিয়ে।

থাই রাষ্ট্রদূত বলেন, যেহেতু ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে শুরু করেছে, থাইল্যান্ডও অধির আগ্রহের সাথে ২০২২ এর দিকে তাকিয়ে আছে যখন অসংখ্য দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ও সফর আয়োজনের সুযোগ রয়েছে।