প্রথমবারের মতো আয়োজিত বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট (বিগ) ২০২১ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে ১ লাখ ডলার জিতেছে দেশি স্টার্টআপ ‘ওপেন রি ফ্যাক্টরি’।
Published : 30 Oct 2021, 06:20 PM
প্রযুক্তি খাতের নতুন উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানটি সফটওয়ার তৈরির সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে ‘বাগ’ (ক্রুটি) চিহ্নিত করার সফটওয়্যার নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ তরুণ উদ্যোক্তা ও স্টার্টআপগুলোকে উৎসাহিত করতে প্রথমবারের মতো এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
শনিবার রাজধানীর আগারগাঁয়ে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ মাল্টি পারপাস অডিটোরিয়ামে সমাপনী অনুষ্ঠানে বিজয়ী ওপেন রি ফ্যাক্টরির প্রতিনিধিদের কাছে পুরস্কারের ১ লাখ ডলারের প্রতিকী চেক তুলে দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহদে পলক।
প্রতিষ্ঠানটির দুই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার মো. সাজ্জাদ হোসাইন ও কনক দাস পুরস্কার গ্রহণ করেন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব ড. মো. আব্দুল মান্নান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, “প্রযুক্তি খাত বিশ্বকে বদলে দিয়েছে। এ খাতের শত শত কোম্পানি মাত্র কয়েক বছরে বিলিয়ন ডলারের এমনকি ট্রিলিয়ন ডলারের কোম্পানিতে রূপান্তরিত হয়েছে। মাত্র ২১ বছর আগে গুগল প্রতিষ্ঠিত হয়।
“ই কমার্স প্রতিষ্ঠান আমাজন ঘন্টায় আড়াই মিলিয়ন ডলার আয় করে, যা অবিশ্বাস্য।“
তিনি বলেন, “বিশ্বের বৃহত্তম মিডিয়া সংস্থা ফেইসবুকের বেতনভুক্ত কোনও সাংবাদিক বা নির্মাতা নেই। বিশ্বের বৃহত্তম ট্যাক্সি কোম্পানি উবার, যে একটিও ট্যাক্সির মালিক নয়। এভাবে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো সেবা খাতে বিপ্লব ঘটিয়েছে শুধু তারুণ্যের বুদ্ধিভিত্তিক উদ্ভাবনীর মাধ্যমে।”
বাংলাদেশে ২০১০ সালে স্টার্টআপের যাত্রা শুরু হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে আড়াই হাজারের বেশি কোম্পানি কাজ করছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু স্টার্টআপ দেশে প্রচুর বিনিয়োগ এনেছে। ১৫ লাখের বেশি লোকের কর্মসংসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এগুলো অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।
অর্থায়ন কোনও সমস্যা নয় উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, খাতটিতে প্রথমবারের মতো ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ১০০ কোটি টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়। চলতি অর্থবছরেও এ খাতের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
“তরুণরা যেসব দাবি নিয়ে সরকারের কাছে আসছে, তাদের একটি দাবিও অপূরণ থাকবে না” যোগ করেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, ২০১০ সালে প্রযুক্তি খাত থেকে মাত্র ২ কোটি ৬০ লাখ ডলারের রপ্তানি হয়েছিল। গত অর্থবছরে তা উন্নীত হয়েছে ১৩০ কোটি ডলারে।
“আমাদের লক্ষ্য ২০২৫ সালের মধ্যে এ খাতের রপ্তানি ৫০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাওয়া।“
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশসহ ৫৭টি দেশ থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে ৭ হাজারের অধিক স্টার্টআপ ও উদ্ভাবক অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করে।
পরে দেশীয় বাছাই করা ৬৫টি স্টার্টআপ নিয়ে বুটক্যাম্প শেষে ১৩ পর্বের রিয়েলিটি শো এর মাধ্যমে দেশের সেরা ২৬টি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে আরও ১০টিসহ মোট ৩৬টি স্টার্টআপ নিবার্চন করা হয়।
দেশি-বিদেশি নির্বাচিত এই ৩৬ স্টার্টআপের প্রত্যেকটিকে ১০ লাখ টাকা করে মোট ৩ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার অনুদান দেওয়া হবে।