‘দেশি’ মাছ মিলছে কম, দামও চড়া

নদী-হাওর, খাল-বিলে মাছ ধরার ভরা মৌসুমেও বাজারে ‘দেশি’ হিসেবে পরিচিত এসব উৎস থেকে পাওয়া মাছের দাম চড়া। নিষেধাজ্ঞার পর বাজারে ইলিশ উঠেছে খুবই কম, দামও একটু বেশি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Oct 2021, 11:31 AM
Updated : 29 Oct 2021, 11:31 AM

হাওরাঞ্চলে এবার কম ধরা পড়ছে বলে এ সময়ে অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম বেশি ‘দেশি’ মাছের বলে জানিয়েছেন মাছ ব্যবসায়ীরা। তবে খামার বা ঘেরে চাষ হওয়া মাছের দাম কিছুটা কম।

শুক্রবার রাজধানীর বেশ কয়েকটি মাছ বাজারে খোঁজ নিয়ে এমন তথ্য পাওয়া যায়।

এছাড়া ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকার পর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হলেও এখনও রাজধানীর বাজারগুলোতে ইলিশ মাছ তেমন চোখে পড়েনি। বাজারে যেসব ইলিশ আছে এর দামও বেশি বলে ক্রেতারা জানিয়েছেন।

ঢাকার বাজারগুলোতে দেশি জাতের চিংড়ি ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। টেংরা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, বোয়াল ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, আইড়, চিতল, বেলে মাছ আকারভেদে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

মালিবাগ বাজারের মাছ বিক্রেতা মো. ইব্রাহিম বলেন, “আমরা দেখেছি, বিগত বছরগুলোতে এ সময়ে দেশি মাছ বেশি ধরা পড়ে, বাজার ভরপুর থাকে। এবছর তার ভিন্নতা দেখছি, যে কারণে দাম কিছুটা বেশিই।”

এবার হাওরাঞ্চল থেকে আগের বছরগুলোর চেয়ে বাজারগুলোতে দেশি মাছের যোগান কম বলে জানান তিনি।

তবে দেশি মাছের চেয়ে বাজারে চাষের মাছের দাম কিছুটা কম বলে জানান মাছ ব্যবসায়ীরা।

চাষের চিংড়ি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, রুই ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, টেংরা ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, পাবদা ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, শিং ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

রামপুরা বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, “অক্টোবর-নভেম্বরের সময়টিতে আমরা আগে দেশি মাছ বেশি বিক্রি করেছি, মাছ আসতো বেশি। এবার সেই অবস্থা নাই। খাল-বিলে এখন মাছ কমে গেছে। চাষের মাছই এখন ভরসা। দেশি মাছ অল্পস্বল্প আসলেও দাম অনেক বেশি।”

মগবাজারের বাসিন্দা রাকিবুল ইসলাম মালিবাগ বাজারে কেনাকাটা কিনতে এসেছেন।

মাছ দাম-দর করার সময় বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ব্যবসায়ীদের অনেকেই আছেন যারা ‘চাষের’ কোনো কোনো মাছকে ‘দেশি’ বলে বিক্রি করেন। হয়তো বহু ক্রেতা তা বুঝতেও পারেন না। রান্নার পর সেই মাছের স্বাদে বোঝা যায় যে এটা চাষের মাছ।

“দেশি মাছ তো এখন বাজারে পাওয়া দুষ্কর। সারাবছরই তো চাষের মাছে বাজার ভরপুর থাকে। কিছু দেশি মাছ পাওয়া গেলেও দাম অনেক বেশি টাকা দিয়ে কিনতে হয়।”

এদিকে বাজারে ইলিশ মাছ কম থাকায় দামও একটু বেশি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

মাঝারি আকারের ইলিশ এক হাজার থেকে ১২০০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। ছোট আকারেরগুলো বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়।

রামপুরা বাজরের মাছ ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম বলেন, “আগামী সপ্তাহ থেকে হয়তো ইলিশ বাজারে বেশি পরিমাণে আসা শুরু করবে। তখন হয়তো দাম কিছুটা কমবে।”

এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে পোলট্রি মুরগির ডিমের দাম ডজনে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। তবে কমেছে ব্রয়লার মুরগি দাম; যদিও তা সামান্য- কেজিতে ৫ টাকা।

শুক্রবার ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বলে দোকানিরা জানিয়েছেন। গত সপ্তাহে ব্রয়লার ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

তবে সোনালী ও কক জাতের এবং লেয়ার মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

খুচরায় সোনালি মুরগি ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায়।

অপরদিকে প্রতি ডজন ডিম ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, ব্রয়লার মুরগির যোগান বেড়েছে। উল্টো সরবরাহ কমেছে ডিমের।

কাপ্তানবাজারের শাহিনুর এগ অ্যান্ড হেন্সের মালিক পাইকারি ডিম বিক্রেতা নুরুল ইসলাম বলেন, “ডিমের দাম গত কয়েক দিন ধরে বেড়েছে। যেদিন ফার্ম থেকে সরবরাহ বেশি থাকে তখন দাম একটু কমে, সরবরাহ কমে গেলে দাম কিছু বেড়ে যায়।”

তিনি জানান, গত সপ্তাহে প্রতি ১০০টি ডিম ৮৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে। তিনদিন ধরে পাইকারিতে ১০০টি ডিম ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আরও পড়ুন: