ই-কমার্সে তদারকি ও প্রতারিত ভোক্তার সুরক্ষায় উচ্চ পর্যায়ের কমিটি

প্রতারণার বিস্তর অভিযোগে একপ্রকার বিপর্যস্ত দেশের ই-কমার্স খাতে বিভিন্ন ধরনের সংস্কার ও সমন্বয়ের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে তদারকির  মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তাদের সুরক্ষায় উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Oct 2021, 01:35 PM
Updated : 13 Oct 2021, 01:35 PM

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবকে সভাপতি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ১৫ সদস্যের এ কমিটি গঠন করে দিয়েছে।

বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গত মঙ্গলবার এ কমিটি গঠন করে দিয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

“ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে তদারকি ও পরীবিক্ষণের আওতায় আনা এবং সাম্প্রতিক কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের অনৈতিক ব্যবসার ফলে যেসব ভোক্তা প্রতারিত হয়েছেন, তাদের অধিকার সুরক্ষার বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ করাই হবে এ কমিটির প্রধান কাজ,” বলেন তিনি।

এদিকে ই-কমার্স ব্যবসা নিয়মের মধ্যে আনতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকেও একটি বহুপক্ষীয় কমিটি তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। শুরুতে নতুন আইন প্রণয়ন ও নতুন একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব কয়েকজন মন্ত্রীর পক্ষ থেকে আসলেও এখন সেই পথ থেকে সরে এসেছে মন্ত্রণালয়।

ই-কমার্স কোম্পানি ই-অরেঞ্জ থেকে পণ্য বা অগ্রিম দেওয়া টাকা ফেরত না পাওয়া গ্রাহকরা বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেন। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

এ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিদ্যমান আইনের সংস্কার ও বিদ্যমান সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে ই-কমার্সের রেগুলেটরি ঘাটতি দূর করা যায় কিনা তারা সেটা ভাববেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবকে সভাপতি করে গঠিত কমিটিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, আইসিটি বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, পুলিশ হেড কোয়াটার্স, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর, জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা, পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি), বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্ট ইউনিট, এনবিআর, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার, অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি ও কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর প্রতিনিধি এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের যুগ্ম সচিবরা থাকবেন।

মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য বিভাগের প্রতিনিধিরা যুগ্মসচিব পদমর্যাদার হবেন এবং কমিটির অন্যান্য সদস্যরাও সমমর্যাদার হবেন।

কমিটি কী কাজ করবে

>> ই-কমার্স সংশ্লিষ্ট  মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অধিদপ্তর/দপ্তর ও সংস্থাগুলোকে একই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা এবং তাদের মাঝে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

>> ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানিগুলোকে রেজিস্ট্রেশন ও লাইসেন্সের আওতায় আনা।

>> সাম্প্রতিক সময়ে অভিযোগ ওঠা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক লেনদেনের তথ্য এবং মালিকানাধীন সম্পদের বিবরণ, ব্যাংক হিসাবের স্থিতির হালনাগদ তথ্য যোগাড় করা। গ্রাহকের খোয়া যাওয়া অর্থের পুনরুদ্ধার করার পদ্ধতি নির্ধারণ।

>> ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তাদের স্বার্থ সুরক্ষার বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ।

>> ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর সব ধরনের আর্থিক লেনদেন তদারকির আওতায় আনা।

>> ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভ্যাট-ট্যাক্সের আওতায় আনা।