কৃষি বাণিজ্য সম্প্রসারণে ২৩০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে ইউএসডিএ

বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী কৃষিপণ্যের উৎপাদন, মানোন্নয়ন ও বিপণনে সহযোগিতা করতে এগিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ ইউএসডিএ; বিনিয়োগ করবে ২৩০ কোটি টাকা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Oct 2021, 04:56 PM
Updated : 6 Oct 2021, 05:04 PM

একটি প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২৭ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ এ টাকা বিনিয়োগ করবে প্রতিষ্ঠানটি।

বুধবার ঢাকার একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ ট্রেড ফেসিলিটেশন প্রজেক্ট’ শীর্ষক এ প্রকল্পের উদ্বোধনীতে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার।

২০২০ সালে হাতে নেওয়া এ প্রকল্প আগামী ২০২৫ সাল পর্যন্ত চলমান থাকবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

বাংলাদেশের কৃষি খাতে সহায়তায় প্রকল্প গ্রহণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশি কৃষি পণ্যের শক্তিশালী অবস্থান নিশ্চিত করতে সরকার এ খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে।

“কৃষি পণ্যের বাণিজ্য পদ্ধতির আইনি ও কাঠামোগত সংস্কার, পণ্যের গুনগতমান নিশ্চিতকরণের জন্য পরীক্ষা পদ্ধতির উন্নয়ন, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত পণ্য সংরক্ষণে অবকাঠামো তৈরি ও উন্নয়নে বাংলাদেশ ট্রেড ফেসিলিটেশন প্রজেক্ট সহায়ক হবে।“

এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বিশ্ব বাণিজ্যে বাংলাদেশি কৃষি পণ্যের শক্তিশালী অবস্থান তৈরি হবে বলে আশা করেন তিনি।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করছে। স্বচ্ছতা, অন্তর্ভূক্তি ও বাজারভিত্তিক ব্যবসা পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে তার দেশ।

উভয় দেশের বাণিজ্যের সম্প্রসারণ চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, “২০২০ সালে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক কৃষিবাণিজ্য এক বিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে রপ্তানি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

“দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের আকার বেড়েই চলছে এবং আমাদের বাণিজ্যগুলো পারস্পরিক সংযোগের ভিত্তিতে চলছে। বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পোশাক পণ্য যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। আজকের এই প্রকল্প বাংলাদেশের কৃষি বাণিজ্যের সক্ষমতা বাড়াবে এবং বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা তৈরি করবে।”

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কৃষি বিষয়ক সংস্থা ইউএসডিএ এর সহায়তায় পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন প্রকল্প বাংলাদেশে কৃষি পণ্যের সম্প্রসারণের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতিকাঠামো কার্যপকরণ, সরবরাহ, কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে পরিচালন সক্ষমতা অর্জনে সহায়তা করছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

এছাড়া এ প্রকল্প কৃষি পণ্য সংরক্ষণের জন্য হিমাগার উন্নয়নসহ কৃষি বাণিজ্যের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো বিস্তৃতকরণের উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে।

প্রকল্পটির অন্যতম উন্নয়ন লক্ষ্য হল, বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন চুক্তির ক্যাটাগরি সি এর আওতাভুক্ত প্রতিশ্রুতি, বিশেষতঃ পণ্য পরীক্ষা পদ্ধতি, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, পচনশীল পণ্য ব্যবস্থাপনা এবং আনুষ্ঠানিকতা সংশ্লিষ্ট প্রমিতি অর্জনে বাংলাদেশের সামর্থ্য সুসংহতকরণে প্রচেষ্টা নেওয়া।

প্রকল্পের পরিসীমা

>> কৃষি পণ্যের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের খরচ হ্রাস পাবে।

>> কৃষি বাণিজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রে পণ্য ছাড়করণের সময় কমিয়ে আনবে।

>> আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে পরিচালিত প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বৃদ্ধি, রপ্তানি ও আমদানি প্রক্রিয়া অধিকতর দক্ষ এবং স্বয়ংক্রিয় করবে।

>> বেসরকারি তহবিল ব্যবহারের মাধ্যমে হিমাগার অবকাঠামো উন্নয়ন সম্ভবপর হবে।

এছাড়া বাংলাদেশ ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন প্রকল্প বাংলাদেশি বন্দরগুলোতে কৃষি বাণিজ্যের পদ্ধতিগত সীমাবদ্ধতা মোকাবেলা; রপ্তানি ও আমদানি প্রক্রিয়া সহজতর এবং স্বয়ংক্রিয় করতে সহায়তা করবে।

পাশাপাশি সরকারি সংস্থার দক্ষতা বৃদ্ধি; পণ্যের গুণ-মান পরীক্ষাগার এবং পণ্য সংরক্ষণাগারের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কৃষিপণ্য সংরক্ষণ অবকাঠামো খাতে, বিশেষভাবে হিমাগার উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ উৎসাহিত করে কৃষিপণ্যের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিস্তৃতকরণে সহায়তা করবে।

ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের ইউএসডিএ এগ্রিকালচারাল এটাসে মেগান ফ্রানসিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ ও এফবিসিসিআই এর পরিচালক আবুল কাশেম খান বক্তব্য রাখেন।