সোমবার সিআইডির পরিদর্শক ইব্রাহিম হোসেন বাদী হয়ে বনানী থানায় মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করেন।
মামলায় ই-অরেঞ্জের কর্ণধার সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমান, এর পেছনের ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল রানা, বিথী আকতার ও আমান উল্লাহ চৌধুরীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
এছাড়া সহযোগী প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ ডটসপ, রেড অরেঞ্জ ইন্টারন্যাশনাল, অরেঞ্জ বাংলাদেশ লিমিটেড, অল জোন নামের প্রতিষ্ঠানগুলোকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। আমরা তদন্ত করছি।“
এর আগে গ্রাহকরা প্রতারণার অভিযোগে ই-অরেঞ্জের মালিক ও কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় ছয়টি এবং কোতয়ালী থানায় দুটি মামলা করেছে।
সোহেল রানা পালানোর সময় ভারতে আটক হয়ে দেশটির কারাগারে আছেন। আর মেহজাবীন ও তার স্বামী দেশের কারাগার আটক আছেন।
সোমবার সিআইডির মামলায় বলা হয়, “২০১৯ সালের জুলাই শুরু থেকে ২০২১ সালের অগাস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত পরস্পর যোগসাজসে সংঘবদ্ধভাবে অবৈধভাবে লাভবান হবার উদ্দেশ্যে ই-অরেঞ্জ ডট শপ নামে ই কমার্স ব্যবসার নামে গ্রাহকদের পণ্যের ক্রয়াদেশ বাবদ অগ্রিম গৃহীত অর্থ হতে ব্যবসায়িক লেনদেনের বাইরে নগদ উত্তোলন ও ব্যাংক হিসাব স্থানাস্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং প্রতীয়মান হয়।“
এজাহারের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কয়েকটি অ্যাকাউন্ট পর্যালোচনা করে ৬৩৫ কোটি টাকা জমা এবং ৬৩০ কোটি টাকা উত্তোলনের তথ্য পেয়েছে সিআইডি। এছাড়া বর্তমানে ৫ কোটি কাটা স্থিতি রয়েছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ভারতে গ্রেপ্তার হওয়া পুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তা সোহেল রানা ব্যক্তিগতভাবে ই-অরেঞ্জের একটি ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে ১৭টি চেকের মাধ্যমে ২কোটি ৪৭লাখ ৭৮ হাজার টাকা তুলেছেন।
“একই হিসাব থেকে বাবু, ফজলু, মিলন, অদিতি, এবং জুবায়ের নামে কয়েকজন বিভিন্ন সময়ে ৩১কোটি ৬১ লাখ টাকা নগদ উত্তোলনের প্রমাণ মিলেছে, যা পরস্পর যোগসাজসে প্রতারণার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।“
এছাড়া রেড অরেঞ্জ ইন্টারন্যাশনালের হিসাবে ৯৯ লাখ টাকা এবং অরেঞ্জ বাংলাদেশের হিসাবে ১৫ লাখ ১৮ হাজার টাকা সরাসরি স্থানান্তর করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করেছেন পরিদর্শক ইব্রাহিম হোসেন।
২৬ জন গ্রাহকের সাড়ে ৮কোটি টাকা পণ্য সময়মত সরবরাহ না করার বিষয়টিও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
“এভাবে অভিযুক্ত ব্যাক্তিগত সংঘবদ্ধভাবে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করে প্রতারণালব্ধ ২৩২ কোটি ৪৩ লাখ ৩ হাজার ৭৬৮ টাকা মানিলন্ডারিং করে। তদন্তে ভুক্তভোগী গ্রাহক সংখ্যা ও তাদের নিকট থেকে গৃহীত অর্থের প্রকৃত পরিমাণ প্রকাশ হলে লন্ডারকৃত অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে।”