এর অংশ হিসেবে ১৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান।
“কমিটি প্রথম ১৫ দিনের মধ্যে ই কমার্স উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে মতামত দেবে,” যোগ করেন তিনি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর দেশের ই কমার্স খাতে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আন্ত:মন্ত্রণালয় বৈঠকে নতুন আইন প্রণয়ন ও আলাদা নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
অনলাইন কেনাকাটার প্ল্যাটফর্মগুলোতে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক প্রতারণা ও গ্রাহকের শত শত কোটি অর্থ আত্মসাতের প্রেক্ষিতে ওই বৈঠক ডাকা হয়, যাতে উপস্থিত ছিলেন চার জন মন্ত্রী।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির উপস্থিতিতে ওই বৈঠকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে আলাদা নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে এ কমিটি গঠনের কথা জানান অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান।
মঙ্গলবার তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আইআইটি অনুবিভাগের পরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামানকে প্রধান করে ১৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।”
কমিটি করণীয় সম্পর্কে ১৫ দিনের মধ্যে মতামত দেবে জানিয়ে তিনি বলেন, “এছাড়া আগামী দুই মাসের মধ্যে এ কমিটিকে ই কমার্স নিয়ে একটা আইনের খসড়া তৈরি করতে হবে। এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে একটি ই কমার্স কর্তৃপক্ষ গঠনের কাঠামো তৈরি করতে হবে।”
বেসরকারি পর্যায়ে এফবিসিসিআই, ই ক্যাব ও বেসিসের একজন প্রতিনিধি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটের একজন প্রতিনিধি এবং একজন আইনজীবী রয়েছেন কমিটিতে।
গত তিন বছর ধরেই দেশে ই-কমার্সের নামে গ্রাহকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার একটি তৎপরতা চলছে, যা মহামারীতে দোকানপাট বন্ধ থাকার সুযোগে কয়েকগুণ বেড়েছে।
গত ৪ জুলাই ই কমার্স নির্দেশিকা প্রকাশ হওয়ার আগে ইভ্যালি, ধামাকা, ই-অরেঞ্জ, কিউকম, আলেশামার্ট, দালাল প্লাস, আলাদীনের প্রদীপসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের হাজার কোটি টাকা আত্মসাত করেছে বলে খবর আসছে।
ইতোমধ্যেই ধামাকা ও ই-অরেঞ্জের কয়েকজন মালিক দেশ ছেড়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
পর্যাপ্ত আইনি সুরক্ষা না থাকার কারণে এধরনের প্রতারণা সম্ভব হচ্ছে বলে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
গত বুধবারের বৈঠক শেষে তিনি বলেছিলেন, একটি পূর্ণাঙ্গ আইন না থাকার কারণে অনেক সময় ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে যারা ব্যবসার নামে প্রতারণা করেন, তাদের শাস্তির আওতায় আনা যায় না। আইনটি আরও পূর্ণাঙ্গ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে অনলাইন বেচাকেনায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব করপোরেট আইন বিশেষজ্ঞ আইনজীবী ব্যরিস্টার তানজিব উল আলম মত দিয়েছেন, অপরাধ দমন করতে নতুন কোনো আইনের প্রয়োজন নেই।
তার মতে, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলোর নির্লিপ্ততার কারণেই আজকের এই পরিস্থিতি। প্রতিষ্ঠানগুলো সক্রিয় হলে প্রচলিত আইনের দিয়েই প্রতারণা দমন করা সম্ভব।
আরও পড়ুন