রোববার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে একটি দল তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে।
এ বিষয়ে দুদক সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, “আমজাদের হোসেনের বিরুদ্ধে ভুয়া ঋণের নামে ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।”
খুলনা বিল্ডার্স লিমিটেড নামে একটি ‘ভুয়া’ প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়ে এই অর্থ আত্মসাতের ঘটনার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।
তবে কী পরিমাণ অর্থ আত্মসাত করা হয়েছে সেই বিষয়ে কিছু জানাননি দুদক সচিব।
ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ সামনে আসার পর চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে যেতে গত ২১ সেপ্টেম্বর পদত্যাগপত্র জমা দেন আমজাদ হোসেন।
২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সাউথ বাংলা ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদে আছেন আমজাদ। এক মাস আগেই আমজাদকে নিয়ে তদন্তের জন্য কর্মকর্তা নিয়োগ দেয় দুদক।
কমিশনে অভিযোগ এসেছে, দেশে-বিদেশে বিভিন্ন কোম্পানি খুলে ‘বিপুল পরিমাণ অর্থ’ আত্মসাত করেছেন খুলনা অঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ শিল্প গোষ্ঠী লকপুর গ্রুপের মালিক আমজাদ।
আমজাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, “অনুসন্ধান কর্মকর্তা প্রয়োজন মনে করলে তাকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হতে পারে।”
যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তারা হলেন- এসবিএসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী, জ্যেষ্ঠ নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মামুনুর রশীদ মোল্লা, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. জিয়াউল লতিফ, ভিপি ও শাখা প্রধান এসএম ইকবাল মেহেদী, এফএভিপি ও অপারেশন ম্যানেজার মোহা. মঞ্জুরুল আলম, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিদ্যুৎ কুমার মণ্ডল ও ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি অফিসার তপু কুমার সাহা।
এর আগে গত বুধবার ব্যাংকটির এসব কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে দুদক।
দুদকে আসা অভিযোগে বলা হয়, আমজাদ হোসেন ক্ষমতার অপব্যবহার করে নামে-বেনামে দেশে বিদেশে বিভিন্ন কোম্পানি খুলে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের খুলনা সদর ও কাটাখালী শাখা ব্যবহার করে আমদানি-রপ্তানি ও ঋণের আড়ালে নানাবিধ দুর্নীতি, অনিয়ম, জালিয়াতির মাধ্যমে আমানতকারীদের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
এর আগে গত ৫ জানুয়ারি ঋণ জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগের প্রাথমিক অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে আমজাদের নামে থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনে চিঠি দিয়েছিল দুদক।
ওই চিঠিতে বলা হয়, “আমজাদ হোসেন সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কর্মাস ব্যাংকের শেয়ারসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিক্রি করার চেষ্টা করছেন। এসব অর্থ অবৈধ প্রক্রিয়ায় দেশের বাইরে পাচারের চেষ্টা করছেন, যা মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধ।”
গত বছরের জানুয়ারিতে আমজাদ ও তার স্ত্রী সুফিয়া আমজাদ এবং মেয়ে তাজরির বিদেশে যাওয়ার ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেয় দুদক।