কোম্পানির ‘একটি’ আর্থিক প্রতিবেদন চান বাণিজ্য সচিব

বিভিন্ন ‘অনৈতিক’ সুবিধা নিতে ব্যবসাসহ অনেক করপোরেট প্রতিষ্ঠান তিন থেকে চার ধরনের আর্থিক প্রতিবেদন বানিয়ে থাকে উল্লেখ করে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেছেন, ‘এটা বন্ধ করতে হবে’।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Sept 2021, 03:13 PM
Updated : 8 Sept 2021, 03:14 PM

বুধবার আর্থিক প্রতিবেদনের বিষয়ে সংবাদকর্মীদের ধারনা দিতে ‘ফিনান্স ফর নন ফিনান্স প্রফেশনালস’ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি একথা বলেন।

ঢাকায় দি ইনস্টিটিউট অব চ্যার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ- আইসিএবি ও ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম- ইআরএফ এ কর্মশালার আয়োজন করে।

তিনি বলেন, “বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক সুবিধা নিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য করপোরেট প্রতিষ্ঠান তিন থেকে চার ধরনের আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করে। আর্থিক প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে অডিটরদেরকে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির জন্য একটি মাত্র আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করতে হবে।”

একাধিক আর্থিক প্রতিবেদনকে আর্থিক দুর্নীতির একটি উপায় হিসেবে মন্তব্য করে বাণিজ্য সচিব বলেন, “মূলত কোম্পানির সুবিধার্থে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে বিএসইসির নিকট আলাদা আলাদা আর্থিক প্রতিবেদন জমা দেয়ার প্রবণতা রয়েছে।

“এর ফলে কোম্পানির মূল সম্পদের অবমূল্যায়ন ও অতি মূল্যায়ন হয়ে থাকে। এতে রাজস্ব আদায়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়। এসব সমস্যার সমাধানে সার্বিকভাবে একটিমাত্র আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করা প্রয়োজন।“

আর্থিক প্রতিবেদন তৈরিতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে অডিটরদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি স্বচ্ছ অডিট রিপোর্ট তৈরি করতে অডিটর, কোম্পানি এবং সংশ্লিষ্টদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।

চলতি বছর ও আগামী বছর আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের নানা ঘটনাচক্রে বাংলাদেশের সক্রিয় স্বার্থ রয়েছে উল্লেখ করে এনিয়ে সাংবাদিকদের প্রতিবেদন তৈরির পরামর্শও দেন সচিব। 

“আসছে ডিসেম্বরে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মিনিস্টারিয়াল কনফারেন্স হবে। সেখানে বিশ্ব বাণিজ্যের আইনগুলো পর্যালোচনা করা হবে।

“এলডিসি দেশগুলোকে কী ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে সেই পদক্ষেপ দশকব্যাপী নেওয়া হয়ে থাকে। ২০১১ সালে ইস্তাম্বুলে সেই কনফারেন্সটি হয়েছিল। ২০২২ সালের ২২ থেকে ২৭ জানুয়ারি কাতারের দোহায় সেই সম্মেলনটা হবে।

এর একটা আংশিক কনফারেন্স জেনেভাতে হয়ে গেল কয়েকদিন আগে। সেখানে আমরা আমাদের স্বার্থের কথা জোরালোভাবে তুলে ধরেছি। এই বছরই বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সম্মেলন আছে। এই সবকটি সম্মেলন কিন্তু বাংলাদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট,”যোগ করেন তিনি।

কর্মশালায় আইসিএবি এর সভাপতি মাহমুদউল হাসান খসরু, সহসভাপতি সিদ্ধার্থ বড়ুয়া, প্রধান নির্বহী কর্মকর্তা শুভাশীষ বসু, ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভী ও সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে সিএ অধ্যয়নরত মেধাবী-গরীব শির্ক্ষাথীদের ‘কর্জে হাসানা’ নামের একটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন বাণিজ্য সচিব।

এই প্রকল্পের অধীনে বর্তমান এবং কোর্স সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীদের বিনা সুদে ঋণ দেবে আইসিএবি। নির্দিষ্ট শর্ত পূরণের পর একাডেমিক পরীক্ষার ফলাফল এবং পারিবারিক সচ্ছলতার বিবেচনা করে এ ঋণ দেওয়া হবে।

পরে কর্মজীবনে গিয়ে বৃত্তিধারীরা ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারবেন।

প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে- মেধাবীদের সিএ পেশা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করা, দেশের অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের জন্য অ্যাকাউন্টিং পেশাজীবীদের সংখ্যা বাড়ানো, সিএ পেশায় মেধার সন্নিবেশ ঘটানো।

দুই দিনের কর্মশালায় ৬০ জন অর্থনৈতিক বিটের সাংবাদিক অংশগ্রহণ করছেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আইসিএবির সহসভাপতি মারিয়া হাওলাদার ও মোহাম্মদ ফোরকান উদ্দীন, কাউন্সিল মেম্বর এন কে এ মবিন উপস্থিত ছিলেন।