পণ্য-টাকা ফেরত দিচ্ছে না ই-অরেঞ্জ, গ্রাহকদের বিক্ষোভ

দীর্ঘ সময় পরও পণ্য কিংবা অগ্রিম অর্থ ফেরত না পাওয়ায় ই-অরেঞ্জ নামের একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ঢাকার গুলশানে দিনভর বিক্ষোভ করেছেন গ্রাহকরা।

নিজস্ব প্রতিবেদক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 August 2021, 05:56 PM
Updated : 16 August 2021, 06:58 PM

গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি পণ্য কিংবা অর্থ ফেরত দিতে ‘টালবাহানা’ করছে বলে অভিযোগ তাদের।

ই-কমার্স প্লাটফর্মটির গুলশানের কার্যালয় যেমন বন্ধ, তেমনি কর্মকর্তাদের খোঁজও পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। 

এমন পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকবার তারিখ পেছানোর পর ধৈর্য্য হারা হয়ে অগ্রিম অর্থ জমা দেওয়া গ্রাহকরা সোমবার গুলশানে ই-অরেঞ্জের কার্যালয়ে হাজির হন।

কার্যালয় বন্ধ পেয়ে দিনভর গুলশান এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "প্রায় অর্ধশত ব্যক্তি মটরসাইকেল নিয়ে এসে প্রায় একঘন্টা অবস্থান করে।"

এই প্রতিষ্ঠানের অফিস গুলশান এক নম্বারে। অফিসটি এখন বন্ধ।

অফিস বন্ধ দেখে তারা বিক্ষোভ করেন বলে জানান ওসি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষ থেকে ই- অরেঞ্জের কয়েকটি নম্বরে ফোন করেও কাউকে পাওয়া যায়নি।

এমনকি বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা এই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের একটি বিজ্ঞাপনে অংশ নেওয়া জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজার মিরপুরের বাসায় অভিযোগ নিয়ে যান।

তবে সেখানে স্থানীয়দের হামলার মুখে পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা।

ই-অরেঞ্জের সঙ্গে ছয় মাসের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়ে তাদের বিজ্ঞাপনে অংশ নিয়েছিলেন মাশরাফি।

সোহেল রানা নামে ই-অরেঞ্জের একজন গ্রাহক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ই-অরেঞ্জ ভাউচারের মাধ্যমে অর্ধেক দামে বাইকসহ অন্যান্য পণ্য বিক্রির ঘোষণা দিয়েছিল।

“আমি গরিব মানুষ, একটি বাইক কেনার জন্য টাকা জমাচ্ছিলাম। এরই মধ্যেই ই-অরেঞ্জের এই অফারের কথা শুনতে পেয়ে সেখানে বাইক কেনার টাকা জমা দিয়েছি। গত জুন মাসে বাইক বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত পাইনি।

"এখন কোম্পানির কোন লোক পাওয়া যাচ্ছে না, তারা কেউ ফোন ধরছেন না। রাতে আমরা মাশরাফি ভাইয়ের বাসায় গিয়েছিলাম। সেখানে উল্টো আরও হামলার শিকার হয়েছি। তবে মাশরাফি ভাই আমাদের বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন," যোগ করেন হতাশ এই গ্রাহক।

ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই- ক্যাব) এক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম শোভন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত ঈদের পর থেকে ই-অরেঞ্জের কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করে পাচ্ছি না। তাদেরকে চিঠি দিলে তারা চিঠির উত্তর দেয়। কিন্তু ফোন করলে আর ধরে না।“

এই ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাশরাফি বিন মর্তুজার একটি বক্তব্য প্রচারিত হচ্ছে, যেখানে তিনি ছয় মাসের জন্য চুক্তিবদ্ধ হলেও একমাস আগেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

মাশরাফি বলেন, “আইনত এখানে আমার কোনো দায় নেই। তবুও আমি নিজের অবস্থান থেকে ই- অরেঞ্জের গ্রাহকদের জন্য মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি।“

আরও পড়ুন