সরকারকে বিজিএমইএ সভাপতির ধন্যবাদ

মহামারী নিয়ন্ত্রণের লকডাউনের মধ্যে কারখানা খুলতে দেওয়ার পর শ্রমিকদের কর্মস্থলে ফিরতে লঞ্চ ও বাস চলাচলের অনুমতি দেওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।   

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 July 2021, 04:53 PM
Updated : 31 July 2021, 05:12 PM

শনিবার দিনভর শ্রমিকদের দুর্ভোগের মধ্যে রাতে সরকারি সিদ্ধান্ত আসার পর তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “রপ্তানিমুখী কারখানা খুলে দেওয়ার বিষয়ে আমরা সরকারকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলাম। সরকারও আমাদের কথায় গুরুত্ব দিয়ে সীমিত পরিসরে কারখানা চালুর অনুমতি দিয়েছে।

“এখন সরকার শ্রমিকদের জন্য গণপরিবহন সাময়িকভাবে চালানোর অনুমোদন দিয়েছে। এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ। আগামীকাল থেকে যেন গণপরিবহনে কেবল রপ্তানিমুখী কারখানা শ্রমিকরাই সুযোগ পায়, সেজন্য সবাইকে মানবিক হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”

করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হওয়ায় ঈদের পর যে লকডাউন শুরু হয়েছে, তাতে সব শিল্প কারখানাও ৫ অগাস্ট পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে সরকার জানিয়েছিল।

কিন্তু ব্যবসায়ীদের বারবার অনুরোধে শুক্রবার সরকার জানায়, রপ্তানিমুখী কারখানা রোববার থেকে লকডাউনের আওতামুক্ত। অর্থাৎ রোববার থেকে তৈরি পোশাক কারখানা খোলা।

এই সিদ্ধান্ত জানার পর শনিবার সকাল থেকে বিভিন্ন জেলা থেকে পোশাককর্মীরা শ্রমঘন ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জের পথে রওনা হয়, যদিও গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কোনো বাস ছিল না সড়কে।

রাতে সরকার এক ঘোষণায় রোববার দুপুর পর্যন্ত বাস ও লঞ্চ চলাচলের অনুমতি দেয়।

লকডাউনের মধ্যে কারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণায় শনিবার দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকায় বাহনের অপেক্ষায় মানুষ। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

দুর্ভোগ মেনে রওনা হওয়ার জন্য পোশাককর্মীরা বলছেন, তারা চাকরি বাঁচানোর জন্য এভাবে ছুটে চলছেন।

তবে শ্রমিকদের আনার দায় দৃশ্যত নিতে রাজি নন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।

তিনি বলেন, “আমরা চেয়েছিলাম আপাতত কারখানার আশপাশের শ্রমিকদেরকে নিয়ে শুধু জরুরি রপ্তানিগুলো চালিয়ে নিতে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, যারা ঢাকার বাইরে গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন, তারাও কষ্ট করে এসে কাজে যোগ দিতে চাচ্ছেন।

“আসলে শ্রমিকরাও কাজ বাদ দিয়ে ঘরে বসে থাকতে চাচ্ছে না। কারণ কারখানায় কাজে যুক্ত থাকলে তারা নিয়মিত বেতনের পাশাপাশি ওভারটাইম বাবদও কিছু টাকা-পয়সা আয় করতে পারেন।”

বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পে প্রায় অর্ধ কোটি শ্রমিক রয়েছেন। আর পোশাক কারখানাগুলো মূলত ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে।

মহামারী নিয়ন্ত্রণের লকডাউনের মধ্যে কারখানা খুলে দেওয়া সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন বাম সংগঠন। তারা বলছে, এর ফলে শ্রমিকের ‘ঝুঁকির’ মধ্যে ফেলে দেওয়া হল।

বাম গণতান্ত্রিক জোট করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও মৃত্যু ঊর্ধ্বমুখী সত্ত্বেও কারখানা খুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, “বর্তমান ভোট ডাকাতির সরকার মানুষের জীবন রক্ষা নয়, পোশাক মালিকদের মুনাফা লাভের স্বার্থরক্ষাকারী পাহারাদার।”