গরুর হাট থেকে ভিড় যায় যেখানে

কোরবানির হাট থেকে একটি পশু কেনাই শেষ নয়, কসাই জোগাড় করার পরও বাকি থাকে কিছু কেনাকাটা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 July 2021, 03:50 PM
Updated : 19 July 2021, 04:20 PM

আর সেই কেনাকাটার জন্য ভিড় জমেছে ঢাকায় কারওয়ান বাজার ও চকবাজারের মতো বাজারে। যেখানে কামারপট্টি রয়েছে, সেই সঙ্গে মিলে যায় গাছের গুঁড়ি, হোগলার পাটি, পশুর খাবার।

কোরবানির পশুকে খাওয়ানোর জন্য লাগে ভুসি, খড় ও খৈল। মাংস কাটার জন্য প্রয়োজন হয় ছুরি, দা, চাপাতি। মাংস কাটার জন্য লাগে গাছের গুঁড়ি, আর মাংস রাখার জন্য লাগে পাটি।

বুধবার ঈদ হওয়ায় সোমবারের মধ্যে অনেকের গরু কেনা হয়ে গেছে। তারা এখন ছুটছে কামারপট্টিতে, যেস্থান এখন টুংটাং শব্দে সরগরম।

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কারওয়ান বাজারে কামারের দোকানে পশু জবাইয়ের ছুরি-চাকুসহ অন্যান্য সরঞ্জাম কিনতে ভিড় করছে ক্রেতা। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

ঢাকার কারওয়ান বাজার ছাড়াও যাত্রাবাড়ী, কাপ্তান বাজারে কামার পট্টি রয়েছে। এছাড়া  কামারের দোকান রয়েছে বিভিন্ন বাজারে।

দা ছুরি চাপাতি সবই তৈরি হয় কারওয়ান বাজারের কামারপট্টিতে; পাশাপাশি বিদেশ থেকে আসা ছুরির পাওয়া যায় সেখানে।

লালবাগের এক কামার বলেন, বছরে শুধু কোরবানির ঈদে তাদের মূল ব্যবসাটি হয়। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে গত বছর ব্যবসা ভালো যায়নি। এবছর একটু ভালো মনে হচ্ছে তার।

কাপ্তানবাজারের মো. ফয়সল নামে একটি কামারের দোকানের কর্মচারী বলেন, এই বছর গত বছরের চেয়ে কাজের চাপ বেশি।

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কারওয়ান বাজারে পশু জবাইয়ের ছুরি-চাকুসহ অন্যান্য সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কামাররা। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

তিনি বলেন, ভালো মানের একটি চাপাতি তৈরিতে ৭০০ টাকা নেন, আর জবাই করার ছুরি তৈরিতে নেন ৬০০ টাকা।

“টাকা যত বেশি জিনিসও তত ভালো ও ভারী হবে,” বলেন তিনি।

চকবাজার খুচরা বাজারেও এসব ছুরি পাওয়া যায়। দামেও বেশি হেরফের দেখা যায়নি।

দোকানিরা জানান, কোরবানির ঈদ কেন্দ্র করে তারা সাধারণত ৫ ধরনের বটি, ৬ রকমের দা, ১৬ ধরনের ছুরি, ৭ ধরনের কাবাব ছুরি, ২০ ধরনের চাপাতি, ১২ ধরনের জবাই ছুরি তৈরি করেন।

ঢাকার কারওয়ান বাজারের কামারপট্টিতে স্থায়ী দোকানের পাশাপাশি ঈদ উপলক্ষে কাঠপট্টিতে ছুরি-চাপাতির খুচরা দোকান বসিয়েছেন অনেকে। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেও গত বছরের চেয়ে এই বছর কিছুটা ভালো বিক্রির আসা করছেন বিক্রেতারা। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

এছাড়া শান দেওয়ার জন্য এক ধরনের কাঠিও তৈরি করেন তারা, যার প্রতিটির মূল্য ৫০ টাকা।

চকবাজার ব্যবসায়ী মোকতার হোসেন বলেন, একটি ছোট আকারের ছুরির দাম ৮০ টাকা আর বড় ছুরি ২০০ টাকা। তবে চীনা ছুরির দাম সাড়ে ৩০০ টাকা।

ঈদের দুদিন আগে রাজধানীর বিভিন্ন অলিগলিতেও ভ্যানে করেও দা, ছুরি, বটি, চাপাতিসহ মাংস কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম বিক্রি করতে দেখা গেছে। পশুর খাবার ও পাটিও মিলছে।

কোরবানির পশুকে খাওয়ানোর রাজধানীর মোড়ে মোড়ে বিক্রি হচ্ছে ঘাস, খড় ও ভুসি। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

আজিমপুরের এক দোকানি বলেন, তিনি গমের ভুসি কেজি ৬০ টাকা আর ছোলার ভুসির কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি করছেন। খড় প্রতি কেজি ১৫ টাকা, তাজা ধানের আঁটি ১০ টাকা।

কোরবানির ঈদে পশু জবাইয়ের পর মাংস কাটাকাটিতে ব্যবহৃত গাছের গুঁড়ি বিক্রির জন্য কারওয়ান বাজারে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

গাছের গুঁড়ি আকার ভেদে ২৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি করছেন বলে জানালেন রহমান নামে এক দোকানি।