ইতিবাচক ধারায় পণ্য রপ্তানি আয়

চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে বিদেশে পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ যা আয় করেছে, তা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৩ শতাংশ বেশি।

ফয়সাল আতিকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 June 2021, 09:49 AM
Updated : 4 June 2021, 09:49 AM

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) বৃহস্পতিবার যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে শুধু মেতে পণ্য রপ্তানিতে আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১১২ শতাংশ বেশি।

২০২০-২০২১ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে দেশ থেকে মোট তিন হাজার ৫১৮ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আর শুধু মে মাসে রপ্তানি হয়েছে ৩১০ কেটি ডলার সমমূল্যের পণ্য।

এপ্রিলের ধারাবাহিকতায় মে মাসেও রপ্তানি আয়ে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধির পেছনে বড় ভূমিকা ছিল পোশাক পণ্যের রপ্তানি। এপ্রিলেও ৩১৩ কোটি ডলার সমমূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল।

ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, তৈরি পোশাক পণ্য বিশেষ করে নিটপণ্যের রপ্তানিতে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার কারণে পাঁচ মাস পর রপ্তানি আয় ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে।

এর মধ্যে এই ১১ মাসে দুই হাজার ৮৫৬ কোটি ডলারের পোশাকপণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা আগের অর্থবছরে একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি।

নিটপণ্যের রপ্তানি বাড়তে থাকায় ওভেন পণ্য রপ্তানি নেতিবাচক হওয়া সত্ত্বেও পোশাক খাতে রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে।

প্রথম ১১ মাসে নিটপণ্য রপ্তানি থেকে একহাজার ৫৩৬ কোটি ডলার ও

ওভেন পণ্য রপ্তানি থেকে এক হাজার ৩১৯ কোটি ডলার আয় হয়েছে।

নিটপণ্যে ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি রয়েছে; অন্যদিকে দীর্ঘ সাত মাস পর এক দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে উভেন পণ্যও।

ইউরোপ-আমেরিকার বাজারে চাহিদা কিছুটা বাড়ায় রপ্তানি আয়ে এই সুবাতাস ফিরলেও ক্রেতারা ‘অনৈতিকভাবে পণ্যের দাম কমিয়ে’ দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানান বিকেএমইএর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, এখন রপ্তানির আদেশ বাড়তে থাকলে পরিস্থিতির হয়তো কিছুটা উন্নতি হবে।

পোশাকপণ্যের পাশাপাশি পাট ও পাটজাত পণ্য এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানিতেও ভালো খবর এসেছে।

এই সময়ের মধ্যে ১০৮ কোটি ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে যা আগের বছরের একই সময়ের তুলানায় ৩৩ শতাংশ এবং লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আড়াই শতাংশ বেশি। আর চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৮৪ কোটি ডলার সমমূল্যের।

চামড়া রপ্তানির এই সংখ্যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ১৪ শতাংশ এবং লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এক শতাংশ বেশি।

রপ্তানি আয়ের ইতিবাচক ধারায় কৃষিপণ্যও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ৯০ কোটি ডলারের কৃষিপণ্য রপ্তানি হওয়ার পর ১১ মাসে এইখাতে প্রবৃদ্ধি এসেছে ১৬ শতাংশ।

করোনা ভাইরাস মহামারী শুরুর পর ২০২০ সালের এপ্রিল-মে মাস থেকে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ে ধ্বস নামতে থাকে। মাঝে অক্টোবর নভেম্বর মাসে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও ডিসেম্বর মাস মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর থেকে আবার রপ্তানি কমতে থাকে।

দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় দেশে লকডাউন ঘোষণা করা হলেও তবে রপ্তানি শিল্পের মালিকরা এবার সাহসী ভূমিকায় ছিলেন। উচ্চ সংক্রমণের মধ্যেও কারখানা সচল রেখে শ্রমিকদের উৎপাদনে মনযোগী রাখেন।

অন্যদিকে প্রধান রপ্তানি বাজার ইউরোপ-আমেরিকায় কভিড-১৯ প্রতিরোধী টিকাদান এগিয়ে যাওয়ার পর সেখানকার জীবনযাত্রাও স্বাভাবিকের দিকে। রপ্তানির বাজারও ধীরে ধীরে খুলে যাচ্ছে।