ভ্যাট ফাঁকি: ‘লুবনান’র বিরুদ্ধে মামলা

পোশাক বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান লুবনান ট্রেড কনসোর্টিয়াম লিমিটেডের বিরুদ্ধে প্রায় ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকির মামলা করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2021, 03:50 PM
Updated : 18 May 2021, 03:50 PM

মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়ায় মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক ড. মইনুল খান।

তিনি বলেন, ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ পাওয়ায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ভ্যাট গোয়েন্দাদের একটি দল রাজধানীর বাড্ডায় প্রতিষ্ঠানটির কারখানা এবং অফিসে অভিযান পরিচালনা করে। 

ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, অভিযানে ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মোট ১০৮টি শাখার জমাকৃত মূসকের হিসাবের সারসংক্ষেপ দেখা হয়।

এসময় বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র, অডিট রিপোর্ট, কর্পোরেট চালানের কপি ও আমদানি এলসির তথ্যসহ বাণিজ্যিক দলিল তদন্ত করে এই ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করা হয়।

ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর জানিয়েছে, অনুসন্ধানে দেখা গেছে এই সময়ে বিক্রয়মূল্যের বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটি ৩৯ কোটি ৮২ লাখ ৫৮ হাজার ভ্যাট পরিশোধ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাট এর পরিমাণ ছিল ৪১ কোটি ৫৮ লাখ ১৫ হাজার টাকা।

অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটি এই সময়ে ভ্যাট বাবদ ১ কোটি ৭৫ লাখ ৫৭ হাজার টাকার ফাঁকি দিয়েছে। 

এই ফাঁকিকৃত ভ্যাটের উপর ২০১৬ সালের জলাই থেকে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৯৫ লাখ টাকা সুদ টাকা আদায়যোগ্য হয়েছে।

অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানটি স্থান ও স্থাপনার ভাড়ার বিপরীতে ৪ কোটি ৪০ লাখ ৫১ হাজার টাকা পরিশোধ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ ছিল ৪ কোটি ৪১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ১ লাখ ১৩ হাজার টাকা ফাঁকি উৎঘাটন করা হয়। এই ফাঁকির উপরও ভ্যাট আইন অনুসারে ৭৫ হাজার টাকা সুদ হিসেবে প্রযোজ্য হবে। 

এছাড়া সিএ ফার্মের রিপোর্ট অনুযায়ী, উৎসে ভ্যাট ৩ কোটি ২১ লাখ ৩৭ হাজার টাকা পরিশোধ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ ছিল ৪ কোটি ৯৪ লাখ ১৪ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ১ কোটি ৭২ লাখ ৭৬ হাজার টাকার ফাঁকি উৎঘাটিত হয়।  

উৎসে কর্তনের উপর প্রযোজ্য এই ফাঁকিকৃত ভ্যাটের উপর এই সময়ে ১৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা সুদ টাকা আদায়যোগ্য হবে। 

সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটির সর্বমোট অপরিশোধিত ভ্যাটের পরিমাণ ৩ কোটি ৪৯ লাখ টাকা এবং সুদ বাবদ ১ কোটি ১০ লাখ ৬১ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদঘাটিত হয়। 

এ প্রসঙ্গে লুবনান ট্রেড কনসোর্টিয়ামের হেড অব সেলস অ্যান্ড অপারেশন মো. রাশেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ঠিকমতো রাজস্ব পরিশোধসহ আইন মেনে দেশে-বিদেশে আমরা সুনামের সাথে ব্যবসা করি।

“রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে আমাদের মাঝে মাঝেই ভ্যাট সংক্রান্ত ক্রসকাটিং হিসাব নিকাশ হয়। এর আগেও ভুলভ্রান্তি শুধরে নেওয়া হয়েছে। এবারও তাই হওয়ার কথা ছিল। তারা যা ধার্য করবে আমরা পরিশোধ করব। কিন্তু বিষয়টি গণমাধ্যমে জানিয়ে আমাদের ব্যবসার সুনাম নষ্ট করা হচ্ছে।”