কোভিড-১৯: প্রণোদনার অর্ধেক অর্থ অনুদান হিসেবে চান ব্যবসায়ীরা

কোভিড-১৯ মহামারীর অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সরকার ঘোষিত প্রণোদনার অর্ধেক অর্থ অনুদান হিসেবে পেতে চান ব্যবসায়ীরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 April 2021, 07:18 PM
Updated : 18 April 2021, 07:25 PM

রোববার আগামী বাজেট নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) যৌথ পরামর্শক সভায় দেশে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম এ প্রস্তাব তুলে ধরেন।

ফজলে ফাহিম বলেন, “কারোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবিলায় সরকার দেশের ছোট বড় ব্যবসায়ী ও শিল্প মালিকদের যে প্রণোদনা দিয়েছেন তার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত আমরা অনুদান হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব করছি।”

ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য প্রণোদনা হিসেবে ছাড় হওয়া অর্থের ৫০ শতাংশ এবং বড় শিল্প মালিকদের অন্তত ৫ শতাংশ অনুদান হিসেবে রূপান্তরের প্রস্তাব করেন তিনি।

এফবিসিআই সভাপতি বলেন, কৃষি খাতের উদ্যোক্তারা যে প্রণোদনার অর্থ পেয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রেও ৫০ শতাংশ প্রণোদনা অনুদান হিসেবে ঘোষণা করা দরকার।

প্রস্তাবের যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলেন, দেশে চলমান কোভিড-১৯ এর ধাক্কা যদি চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের আরও একটি প্রান্তিক (তিন মাস) পর্যন্ত অব্যাহত থাকে, তাহলে এ দেশের ছোট বড় শিল্পমালিকরা বিপদে পড়ে যেতে পারেন।

গত বছর মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবেলায় সোয়া লাখ কোটি টাকার মোট ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার।

এর মধ্যে ৩৩ হাজার কোটি টাকার সবচেয়ে বড় প্যাকেজ শিল্প ও সেবা খাতের জন্য । ২০ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ সিএমএসএমই বা ছোট উদ্যোক্তাদের জন্য।

প্রণোদনার এই অর্থ ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে পাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। এই দুই প্যাকেজের অর্থের অর্ধেক বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জোগান দেওয়া হচ্ছে।

দুই প্যাকেজেরই ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশ। এর মধ্যে ৪ শতাংশ পরিশোধ করবে ঋণ গ্রহীতা শিল্প/ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বাকি ৫ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে দেবে।

পরামরর্শক সভায় দেশের ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে এসময় এনবিআরের কাছে দুই বছরের জন্য আমদানি পর্যায়ে অগ্রিম আয়কর ও অগ্রিম ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিও জানান ফাহিম।

তিনি বলেন, মহামারীর কারণে দেশে ব্যবসা বাণিজ্য কমে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে অগ্রিম আয়কর ও আগাম ভ্যাট প্রত্যাহার করা হলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আবার নগদ টাকার প্রবাহ বাড়বে।

বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হওয়ার এই সন্ধিক্ষণে উন্নয়নশীল দেশের সঙ্গে মিলিয়ে করপোরেট করের হার কমানোরও সুপারিশ করেন তিনি।

এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল এই সভায় সদ্য নির্বাচিত বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান আগামী পাঁচ বছর উৎসে কর দশমিক ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে দেশ থেকে প্রধান রপ্তানির এই এ খাত দশমিক ৫ শতাংশ উৎসে কর দিচ্ছে। এখাতের রপ্তানিতে নগদ সহায়তার ওপর উৎসে কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করার দাবিও জানান তিনি।

ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সভায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শেষে দিকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি ব্যবসায়ীদের দাবিগুলো ‘যৌক্তিক’ বলে মন্তব্য করে এসব দাবী বিবেচনার আশ্বাস দেন।