ইফতার ও তাপদাহে বাড়ছে ফলের দাম

রমজানের প্রথম সপ্তাহে অধিকাংশ নিত্যপণ্যের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও সব ধরনের ফলমূলের দাম বেড়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 April 2021, 10:47 AM
Updated : 16 April 2021, 10:47 AM

বৈশাখের তপ্ত এই সময়ে ইফতারিতে দেশি-বিদেশি ফলমূলের পরিমাণ বাড়াচ্ছেন রোজাদাররা। এর ফলে বাড়তি চাহিদা তৈরি হওয়ায় ফলের দাম বাড়ছে বলে মনে করেন বিক্রেতারা।

শুক্রবার রাজধানীতে মওসুমি ফল তরমুজ বিক্রি হচ্ছিল প্রতিকেজি ৩৫ বা ৪০ এমনকি ৪৫ টাকায়ও। যদিও এক সপ্তাহ আগে প্রতিকেজি ২৫ টাকায় তরমুজ মিলছিল।

দাম বাড়ার তালিকায় সম্প্রতি যোগ হয়েছে আরেকটি ফল মাল্টা। এক সপ্তাহ আগে প্রতিকেজি ১৩০ টাকায় বিক্রি হওয়া আমদানি করা মাল্টা এখন ১৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ কেউ ভালো মানের মাল্টা ১৬০ টাকায়ও বিক্রি করছেন।

কারওয়ান বাজারের ফল বিক্রেতা মনজুরুল ইসলাম বলেন, রোজা যতদিন আছে তরমুজের চাহিদা ততদিন থাকবে। কিন্তু মওসুম শেষ হতে চলায় সরবরাহ কিছুটা কমে এসেছে। এ কারণে দাম একটু একু করে বাড়ছে।

রোজায় বাড়তি চাহিদার কারণেই অধিকাংশ ফলে দাম বাড়ছে বলে মনে করেন তিনি।

সরবত তৈরি উপযোগী বেলের দামও দ্বিগুণ বেড়েছে। বাজারে প্রতিটি ছোট আকারের বেল এখন ৫০ টাকা, মাঝারি ৮০ টাকা আর বড় ও দেখতে হৃষ্টপুষ্ট বেল বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৬০ টাকায়।

কয়েকজন বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাইকারি বাজারেও বেলের দাম বাড়তির দিকে। গত ৪/৫ দিনে দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে।

অতি ছোট আকারের আনারসও প্রতিটি ৪০ টাকার নিচে মিলছে না, যা সাধারণ সময়ে ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে থাকে। আকারে বড়গুলোর দামও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। 

কারওয়ান বাজারে ফলের দোকান

রোজার মওসুমে দেশি ফলের দাম বেড়ে যাওয়াকে বিশেষ সমস্যা মনে করছেন না কারওয়ান বাজারের অনেক ক্রেতা। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মওসুমি এসব ফলের দাম বেড়ে যাওয়াটা অনেকটা স্বাভাবিক হিসেবেই দেখছেন তারা।

“ফলের দাম বাড়লে আর কী করা যাবে। সবাই যখন ফল খেতে চায় তখন দাম তো একটু বাড়তেই পারে, মন্তব্য মাঝবয়সী এক ক্রেতার, যিনি নাম জানাতে চাননি।

আমদানি ফলের মধ্যে এই সপ্তাহে সবুজ আপেল বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ২০০ টাকা, লাল আপেল ১৮০ টাকা। গত এক সপ্তাহের চেয়ে দাম বেড়েছে কেজিতে অন্তত ৩০ টাকা।

প্রতিকেজি নাসপাতি ও আঙ্গুর ২৫০ টাকা, আতাফল ১৮০, পেপে ১০০ থেকে ১২০ এবং বাঙ্গি ৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

ইফতারিতে বেশি ব্যবহার করা হয় এমন পণ্যের মধ্যে প্রতিকেজি খোলা চিনি ৬৮ এবং প্যাকেট ৭৪ থেকে ৭৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে শুক্রবার। রোজা শুরুর আগেই এক দফায় চিনির দাম বেড়েছিল। খোলা সয়াবিন তেলের দাম অবশ্য কেজিতে ২ টাকা কমে ১৩৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ছোলা বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৭০ টাকা, মসুর ডাল বড় দানা ৭০ এবং ছোট দানা ১০০ টাকা, খেসারি ডাল ৮০ টাকা।

কারওয়ান বাজারে খেজুর বিক্রেতা মোহাম্মদ জানান, এবার খেজুরের দাম বাড়েনি বললেই চলে। রোজা শুরুর আগে যেমন ছিল, এখন তেমনই আছে। এবার সরবরাহ বেশ ভালো।

“মাবরুম প্রতিকেজি ৮০০, মেটজুল ৮০০ থেকে ১০০০, আজোয়া ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। সাধারণ মানের দাবাস ২২০ টাকা,” বলে জানালেন তিনি।

বাজারে শাক সবজি, মাছ মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে লকডাউনের কারণে ক্রেতা সমাগম কম থাকায় বিক্রে কমে গেছে মুদি দোকানগুলোতে। এতে বিক্রেতারা বেশ নিরাশই হয়েছেন।

এই সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি ১৫০, সোনালি ২৮০ ও লেয়ার ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস পাওয়া যাচ্ছে প্রতিকেজি ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকার মধ্যে। তবে খাসির মাংসের দাম কিছুটা বাড়তি; প্রতিকেজি চাওয়া হচ্ছে ৯০০ টাকা, বকরির মাংসের দাম চাওয়া হচ্ছে ৮০০ টাকা।