লকডাউনে শ্রমিক হয়রানির অভিযোগ জি-স্কপের

লকডাউনের মধ্যে কারখানা খোলা রেখে শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত পরিবহনের ব্যবস্থা না করায় নিন্দা জানিয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (জি-স্কপ) ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 April 2021, 07:51 AM
Updated : 15 April 2021, 07:51 AM

এক বিবৃতিতে জি-স্কপের যুগ্ম সমন্বকারী আব্দুল ওয়াহেদ এবং কামরুল আহসান সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে কর্মরত শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা ও ঝুঁকি ভাতা দেওয়ার দাবি জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, “গার্মেন্টস মালিকরা বারবার নিজেদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করছেন। তারা উৎপাদন এবং রপ্তানির প্রয়োজন দেখিয়ে নিজ ব্যবস্থাপনায় শ্রমিক পরিবহনের ব্যবস্থা এবং কারখানায় স্বাস্থ্যবিধির যথাযথ বাস্তবায়ন করবেন এই শর্তে লকডাউনের মধ্যে পোশাক কারখানা খোলা রাখার অনুমতি নিয়েছেন।

“বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম বলছে, শ্রমিকদের নিয়ে যাওয়ার জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা না করে কারখানা খোলা রাখায় সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথম দিনেই শ্রমিকরা পরিবহন সংকট, অতিরিক্ত যাতায়াত ব্যায় বহন, জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা হয়রানির শিকার হয়েছেন। তাছাড়া শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার কথা বলা হলেও সকল কারখানায় প্রয়োজনীয় আয়োজন করা হয়নি।”

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সামাল দিতে বুধবার থেকে এক সপ্তাহ সব ধরনের অফিস ও পরিবহন চলাচল বন্ধের পাশাপাশি বাজার-মার্কেট, হোটেল-রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।

১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ২১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত এসব নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।

এই সময় সব সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত অফিস এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বলা হলেও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শিল্প কারখানা চালু রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

বিবৃততে বলা হয়, “করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির এক বছর অতিক্রান্ত হওয়া এবং সরকারের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে প্রায় অর্ধ লক্ষ কোটি টাকা ঋণের সমর্থন পাওয়ার পরও এ ধরনের দায়িত্বহীন আচরণ কাম্য নয়।

“করোনা পরিস্থিতি এই সত্যকে নতুন করে সামনে এনেছে যে শ্রমিকরাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের উৎপাদন, রপ্তানি তথা অর্থনীতির চাকা চালু রাখে। অথচ সেই শ্রমিকের কপালে জোটে অনাহার, বিনা চিকিৎসা, হয়রানি আর নির্যাতন। করোনা সংক্রমণের মারাত্মক ঝুঁকি এবং লকডাউনের মধ্যেও বকেয়া বেতনের দাবিতে আশুলিয়া এবং গাজিপুরে শ্রমিকদের রাস্তায় নামতে হয়েছে। এই পরিস্থিতির জন্য দায়ি মালিকের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি? শ্রমিকদের সুরক্ষায় রাষ্ট্রের দায়িত্বহীন আচরণ মালিকদের চূড়ান্ত দায়িত্বহীন হতে উৎসাহিত করে।”

করোনাভাইরাসে সংক্রমিত শ্রমিকদের যথাযথ চিকিৎসা না দিয়ে বাধ্যতামূলক ছুটিতে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয় জি-স্কপের বিবৃতিতে।

শ্রমিকদের ঝুঁকি ভাতা এবং সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে করোনাভাইরাস পরীক্ষা এবং টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করার দাবি জানায় সংগঠনটি।