শেষ মুহূর্তের কেনাকাটার চাপ কাঁচাবাজারে

এক সপ্তাহের জন্য সোমবার থেকে ‘লকডাউন’শুরুর আগে নিত্যপণ্য সংগ্রহে রাখতে বাজারে ভিড় বেড়েছে ক্রেতাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 April 2021, 12:53 PM
Updated : 4 April 2021, 01:04 PM

এরসঙ্গে যোগ হয়েছে মাসের প্রথম এবং রমজানের নিত্য পণ্য কেনাকাটার নিয়মিত আয়োজন। রোববার দিনভর শেষ মুহূর্তের এই কেনাকাটা করতে তাই ভিড় বেড়েছে রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে।

লকডাউনের আগের দিন একসঙ্গে অনেক ক্রেতার ভিড় বাড়লেও অবশ্য বেশিরভাগ পণ্যের দাম ছিল স্থিতিশীল। তবে পেঁয়াজ ও সবজির দাম বেড়েছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল, পলাশী কাচাঁবাজারে রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্রেতাদের বাড়তি ভিড় দেখা যায়। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসের ব্যস্ততার মাঝেও অনেকে কেনাকাটা করতে আসেন।

এদের বেশিরভাগ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিশেষ করে চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, আলু ও সবজি একটু বেশি করে কিনছিলেন।

ক্রেতা ও বিক্রেতারা বলছেন, একদিকে মাসের শুরু অন্যদিকে সামনের সপ্তাহ থেকে রমজান। অনেকেই মাসের ও রোজার বাজার একসঙ্গে করছেন। তাই ক্রেতা কিছুটা বেশি।

পলাশী কাঁচাবাজারে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা আহসান হাবীব বলেন, “বাজার কয়েকদিন ধরেই করা হচ্ছে। কাল থেকে লকডাউন। তাছাড়া রোজা আসতেও বেশি দেরি নেই। তাই বাজার একসঙ্গে করে রাখতেছি। আমরা বেশিরভাগ বাজার মাসের শুরুতেই করি।”

আজিমপুরের বাসিন্দা আশফাকুন্নাহার জানান, লকডাউনের কারণে একসঙ্গে বেশি করে কেনাকাটা করতে এসেছেন।

কয়েকটা পণ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে জানিয়ে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ডাল, পেঁয়াজ, আলু ও সবজি নিয়ে যাচ্ছি। এর মধ্যে সবজি আর পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। অন্যগুলো ঠিক আছে। তাছাড়া লকডাউন কতদিন থাকে সেটির কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই বাজার কিছুটা বেশিই করে নিয়ে নিচ্ছি।”

কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজারেও সাপ্তাহিক ছুটির দিনের চেয়ে বেশি ভিড় ছিল।

নাখাল পাড়া থেকে আসা আব্দুর রহমান বলেন, “লকডাউন শুরু হচ্ছে। কতদিন থাকে, সেই নিশ্চয়তা কে দেবে। এই পরিস্থিতিতে বারবার যাতে বাজারে আসতে না হয়, তাই বেশি কিনেছি।”

পরিবাগের বাসিন্দা জাকির হোসেন হাতিরপুল কাঁচাবাজার থেকে নিয়মিত নিত্যপণ্য কিনতে আসেন। তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “লকডাউনে বাইরে বের হওয়ার তেমন দরকার নেই। তাছাড়া সংক্রমণ প্রতিদিন বাড়ছে। তাই বেশি করে বাজার নিয়ে নিচ্ছি।’

দামের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। সবজিও আগের থেকে বেড়েছে। অন্য কিছু ঠিক আছে।”

তবে হাতিরপুল বাজারের ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দাম বাড়েনি বলে দাবি করেন। তিনি জানান, চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ ইত্যাদির সরবরাহে ঘাটতি না থাকায় দামে প্রভাব নেই।

কারওরান বাজারের ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম জানান, আগের দু’দিন পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন প্রতিকেজি ৩০ টাকা। পাইকারী থেকে আজ বেশি দরে কিনতে হওয়ায় তিনি বিক্রি করছেন ৩৫ টাকায়। তবে আলু, রসুন ও আদার দাম আগেরটাই আছে।

পলাশী মার্কেটে গিয়ে দেখা যায় প্রতিটি সবজির দর আগের চেয়ে কেজিপ্রতি দশ টাকা বেড়েছে। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।

কাঁচাবাজারে একটু বেশি ভিড় থাকলেও রাজধানীর আজিমপুর, গ্রিনরোড ও সেগুনবাগিচার সুপারশপে তেমন ভিড় দেখা যায়নি।

সুপার শপের কর্মীরা বলছেন, লকডাউনে সুপারশপ খোলা থাকবে জেনে ক্রেতারা বাড়তি কিছু নিতে আসছেন না। তাই ভিড় হচ্ছে না।

আজিমপুরে স্বপ্ন সুপারশপের চেক আউটার স্পেশালিস্ট শায়লা আক্তার শিমু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের এখানে সব পণ্যের দাম আগের মতই রয়েছে। ক্রেতা যা দেখছেন, মাসের শুরুতে নিয়মিত যেমন থাকে, তেমনই আছে।”

সেগুনবাগিচার আগোরা সুপারশপেও তেমন ভিড় চোখে পড়েনি। কর্মীরা জানান, মাসের শুরু এবং সামনে রমজান উপলক্ষে অনেকেই কিছু বেশি কেনাকাটা করছেন।