বিজিএমইএর কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা আনতে চায় ফোরাম

টেকসই পোশাক শিল্প গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিজিএমইএকে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সংগঠনে রূপ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সংগঠনটির আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়া ফোরাম প্যানেলের প্রার্থীরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 March 2021, 12:56 PM
Updated : 30 March 2021, 12:56 PM

মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল সোনাগাঁওয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ১৩টি অধ্যায়ে বিভক্ত ইশতেহার ঘোষণার সময় এই প্রতিশ্রুতি দেন ফোরাম থেকে পরিচালক পদপ্রার্থী রুবানা হক।

এক প্রশ্নে ফোরামের প্যানেল লিডার এবিএম সামছুদ্দিন বলেন, “যদি বলা হয় কোন কাজগুলোকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে তাহলে বলতে হয়- পোশাক খাতের ইমেজ বিল্ডিং, ব্যয় সংকোচন ও নতুন বাজারের সম্প্রসারণ।”

ফোরামের নেতা বিজিএমইএর বর্তমান সভাপতি রুবানা হক মূল ইশতেহার পড়েন।

তিনি বলেন, ফোরামের নেতৃত্বে যে উদ্যোগগুলো ইতোমধ্যেই তিনি নিয়েছেন তা সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এই খাতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর সেকারণেই এবারের নির্বাচনে পরিচালক পদে প্রার্থী হয়েছেন তিনি।

আগামী ৪ এপ্রিল পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর দ্বিবার্ষিক নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।

রুবানা বলেন, “ফোরাম ২০১৯-২০২১ মেয়াদে বিজিএমইএ পরিচালনা পর্ষদের নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে। এই পর্ষদ বৈশ্বিক মহামারীর সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণ পোশাক শিল্পকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতায় বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছে। তবে আগামী দুই বছর পোশাক শিল্পকে অত্যন্ত কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং সময় হিসেবে পার করতে হবে।

“এ সময়ে বিজিএমইএতে সৎ, নিষ্ঠাবান, কর্মঠ ও অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত শক্তিশালী বোর্ড প্রয়োজন। ফোরাম সেই বোর্ড উপহার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নির্বাচিত হলে ব্যবসার সার্বিক অবস্থা ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ফোরাম ‘সাসটেইনেবল ইন্ডাস্ট্রি’ গড়ে তুলতে কাজ করবে।”

ফোরামের ইশতেহারের ১৩টি অধ্যায়ে এই খাতের ভাবমূর্তি, ব্যবসা পরিচালন ব্যয় কমানো এবং সহজীকরণ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, রুগ্ন শিল্পের জন্য পৃথক কর্মসূচি, এক্সিট পলিসি প্রণয়ন, পণ্যের দাম ও ক্রেতার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, শিল্পের নিরাপত্তা ও নিজস্ব সক্ষমতা বাড়ানো, বাজার সম্প্রসারণ কাজ করা, প্রযুক্তি সক্ষমতা বাড়ানোসহ আরও কিছু প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

রুবানা হক বলেন, “নির্বাচিত হলে বিজিএমইএর ডিরেক্টরদের ৩ মাস পর পর পারফর্মেন্স মূল্যায়ন করা হবে। বিজিএমইএ ডিরেক্টররা যাতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সদস্যদের অনুসন্ধানের জবাব দেয় সেই নিশ্চয়তা প্রদান করা হবে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতামূলক বিজিএমইএ গড়তে পুরো কার্যক্রমকে ইআরপির আওতায় নিয়ে আসা হবে।

“বিজিএমইএকে শুধু সেবামূলক প্রতিষ্ঠানই নয় সর্বোপরি এটিকে পোশাক মালিকপক্ষের একটি ‘সমন্বিত ফোরাম’ হিসেবে তৈরি করা হবে।”

বিজিএমইএর সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিইউএফটি ট্রাস্টি বোর্ডকে পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় সংবাদ সম্মেলনে।

এছাড়া বিজিএমইএতে ভার্চুয়াল কম্প্লেইন বক্স প্রতিষ্ঠা করা, বিজিএমএইএর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতার নিশ্চয়তা প্রদানে দ্বিবার্ষিক গোপনীয় রিপোর্ট তৈরি করা এবং বৃহৎশিল্প সমূহকে নিয়ে একটি ‘ডিসকাশন গ্রুপ’ তৈরি করার পরিকল্পনাও হাজির করেন ফোরাম নেতারা।

দুলাল ব্রাদার্সের এম এ রহিম ফিরোজ, কেইলক নিউএজ বাংলাদেশের আসিফ ইব্রাহিম, রাইজিট অ্যাপারেলসের মাহমুদ হাসান খান বাবু, সফটটেক্স সোয়েটারের রেজওয়ান সেলিম, সুরমা গার্মেন্টের ফয়সাল সামাদ, ফ্যাশন ডটকমের খান মনিরুল আলম ও এমজি নিট ফ্লেয়ারের নাভিদুল হকসহ অন্যান্য প্রার্থীরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।