মহামারীতে কাগজের শুল্কসহ সব কর মওকুফ চায় নোয়াব

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে দেশের সংবাদপত্র শিল্পের দুর্দশা তুলে ধরে মূল কাঁচামাল নিউজপ্রিন্ট আমদানির শুল্কসহ পুরো করভার থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন পত্রিকার মালিকরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2021, 04:59 PM
Updated : 24 March 2021, 04:59 PM

বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য প্রাক বাজেট আলোচনায় এই প্রস্তাব দিয়েছেন বাংলাদেশের পত্রিকা মালিকদের সমিতি-নোয়াবের সভাপতি ও দৈনিক সমকালের মালিক একে আজাদ।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত প্রাক বাজেট আলোচনায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এই প্রস্তাব তুলে ধরেন।

একে আজাদ বলেন, “সংবাদপত্র একটি সেবাধর্মী শিল্প। এই শিল্পের অধিকাংশ নিউজপ্রিন্ট আমদানি করতে হয়। কারণ দেশে মানসম্পন্ন নিউজ প্রিন্ট বানানো হয় না। এর ফলে নিউজপ্রিন্ট আমদানি করতে হয়  এতে ৫ শতাংশ আমদানি শুল্কের সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ৫ শতাংশ অগ্রিম শুল্ক মিলে ৩০ শতাংশ কর দিতে হয়।”

তিনি বলেন, “চলমান করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এই শিল্প এখন চরম চাপের মধ্যে পড়েছে। সেবামুলক এই খাতকে টিকিয়ে রাখতে এই শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব রাখছি।

“এই খাত থেকে ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ হারে কর্পোরেট কর কর্তন করা হয়, এই করহারও কমানোর প্রস্তাব করছি।”

এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মুহা. রহমাতুল মুনিম বলেন, “নিউজপ্রিন্টের কর কমনো নয়, আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়া। আমার জানা মতে, বর্তমানে দেশের এখন টাকার নোট পেপার পর্যন্ত তৈরি করা হচ্ছে। আপনারা বলছেন দেশে মান সম্পন্ন নিউজপ্রিন্ট বানানো হচ্ছে না। এটা কেন আমরা দেখতে চাই।”

অনুষ্ঠানে একে আজাদ আরও বলেন, “সংবাদপত্র একটি জনসেবামুলক শিল্প। কিন্তু করোনা ভাইরাস মহামারীর সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত করা হয় নি। তাই এখন আমরা সংবাদপত্রকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে আমরা কর সুবিধা চাই।”

এসময় ডেইলি স্টার প্রকাশক ও সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, এই খাতটির মুল কাঁচামাল হচ্ছে নিউজপ্রিন্ট ও কালি। এই কাঁচামাল আমদানিতে সবমিলে ৩০ শতাংশ কর দিতে হয়। আবার ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ কর্পোরেট কর দিতে হয়। মেহেরবানি করে এসব কর কমানো হোক।

মহামারীর কারণে অন্তত এখাতের জন্য অন্তত এক বছরের উৎসে কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেন বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।

সরকারকে দেওয়া বিভিন্ন করের চালান ঠিকমতো দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ আনেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বেসরকারি টিভি চ্যানেল মালিকদের সংগঠন (অ্যাটকো) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও একাত্তর টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু বলেন, দেশে বর্তমানে টেলিভিশনের ৩ কোটি গ্রাহক রয়েছে। এই বিপুল গ্রাহকের কাছ থেকে বছরে অন্তত ১ হাজার ৭২০ কোটি টাকার মুসক আদায় করা সম্ভব বলে জানান।

এসময় তিনি ব্রডকাস্ট শিল্পের জন্য ‘জয় জয়’ সমাধান উল্লেখ করে এই প্রস্তাবনায় স্যাটেলাইট টেলিভিশনের জন্য বাধ্যতামুলক ডিজিটাল ডিস্ট্রিবিউশন চালু করার প্রস্তাব দেন।

আলোচনায় তিনি টেলিভিশন শিল্পকে সেবামুলক শিল্প ঘোষণার দাবি জানিয়ে ১০ শতাংশ অগ্রীম কর প্রত্যাহারের দাবি জানান।

বিদেশে বিজ্ঞাপন পাচার হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বিদেশে তৈরি করা বিজ্ঞাপন দেশে প্রদর্শনের মাধ্যমে সরকারকে বিপুল রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে বলে জানান।