পোশাক শ্রমিকদের বেতন: ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনায় ‘বেড়েছে সামান্যই’

টাকার অংকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের বেতন যতটা বেড়েছে, তাতে তাদের ক্রয়ক্ষমতা তেমন একটা বাড়েনি বলে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2021, 01:37 PM
Updated : 6 March 2021, 02:17 PM

তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর উদ্যোগে পরিচালিত জরিপ গবেষণার প্রতিবেদন নিয়ে শনিবার এক অনলাইন আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ মত তুলে ধরেন।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এশিয়ান সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্টের (এসিডি) পরিচালক ও অর্থনীতির অধ্যাপক একে এনামুল হক গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ২০২০ সাল পর্যন্ত ছয় বছরে তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের মাসিক আয় ৬৭ দশমিক ১৮ শতাংশ বেড়েছে। প্রতিবছর গড়ে ১০ দশমিক ১ শতাংশ হারে শ্রমিকদের আয় বেড়েছে।

“২০২০ সালে শ্রম বিক্রি করে একজন শ্রমিকের গড় আয় দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৪০২ টাকা, যা ২০১৪ সালে ছিল ৬ হাজার ৮২০ টাকা।”

তবে মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় না নিয়ে আয় বৃদ্ধির হিসাবটি করা হয়েছে মন্তব্য করে তার যথার্থতা প্রশ্ন তুলেনব মোস্তাফিজুর রহমান।

সিপিডির এই গবেষক বলেন, প্রতি বছর গড়ে ৭ শতাংশ হারে সাধারণ মূল্যস্ফীতি হয়েছে। সেটার সঙ্গে আয় সমন্বয় করা হলে শ্রমিকদের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে না কমেছে, সেটা সঠিকভাবে বলা যেত।

“আমি মনে করি ক্রয়ক্ষমতা এতটা বাড়েনি।”

এর উত্তরে এনামুল হক বলেন, শ্রমিকদের মাসিক ব্যয়ের ধরণ বিশ্লেষণ করলে তাদের জীবনমানের উন্নয়ন বুঝা যায়। ছয় বছরে খাদ্য বা বাসস্থানে তাদের তেমন ব্যয় বাড়ে নি। কিন্তু প্রসাধনী কেনায় অথবা ভ্রমণ ব্যয় বেড়েছে।

ফাইল ছবি

জরিপের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, গত ছয় বছরে বাড়ি ভাড়া এবং বিদ্যুত্-পানি খাতে শ্রমিকের গড় খরচ ৩ হাজার ৪১০ টাকা থেকে মাত্র ২ শতাংশ বেড়ে ৩ হাজার ৮৭৮ টাকা হয়েছে। একইভাবে খাদ্য খাতে ব্যয় বেড়েছে ৪ শতাংশ। কিন্তু প্রসাধনী ক্রয় খাতে খরচ ১২ শতাংশ এবং ঘোরাঘুরিতে ২৩ শতাংশ বেড়েছে।

অধ্যাপক এনামুল হক বলেন, ১৬০টি কারখানার একহাজার ১১৯ জন শ্রমিকের উপর এই জরিপ গবেষণা চালানো হয়।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি রুবানা হক বলেন, “পরিস্থিতি আরো ভাল ভাল হতে পারত, যদি বিদেশি ক্রেতারা আমাদের পণ্যের আরো ভাল দাম দিতেন।”

ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউনের প্রধান সম্পাদক জাফর সোবহান, বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক, শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব কেএম আব্দুস সালাম, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) বাংলাদেশ প্রধান তৌমো পৌতিনিয়েন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেনজি তিরিংক আলোচনায় অংশ নেন।