ইন্টারনেট সুরক্ষা নিয়ে শিশুদের সঙ্গে গ্রামীণফোনের মতবিনিময়

নিরাপদ ইন্টারনেট দিবস উপলক্ষ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের বিভিন্ন দিক নিয়ে শিশুদের সঙ্গে আলোচনা করল গ্রামীণফোন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Feb 2021, 01:07 PM
Updated : 9 Feb 2021, 01:07 PM

মঙ্গলবার গ্রামীণফোন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ডিজিটাল বাংলাদেশের কানেক্টিভিটি পার্টনার গ্রামীণফোন জিপি হাউজে এই ব্যতিক্রমধর্মী আলোচনার আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান ইন্টারনেট এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।

এই অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য ছিল শিশুদের ইন্টারনেট দুনিয়ার বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে ধারণা দেওয়া এবং তাদের জীবনে এর সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো।

মহামারীর কারণে বাসার ভেতরে বসেই সবাইকে বাইরের চারপাশ সম্পর্কে জানতে হয়েছে। শিশুদেরও এ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে এবং বাসায় বসেই অনলাইন টুল ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের শিক্ষাগ্রহণ ও বিনোদন লাভ করতে হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে  অপরাধীদের অনলাইন মাধ্যমে শিশুদের ক্ষতিসাধনের আংশকা রয়েছে। তাদের ফাঁদে পড়ে অনেক সময় শিশুরা পাসওয়ার্ড ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়, যা পরবর্তীতে অপরাধীরা অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে।

অনুষ্ঠানে শিশুরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলে। যার মধ্যে ছিল: সোশাল মিডিয়ায় কতটুকু শেয়ার করা যাবে, ব্যক্তিগত কনটেন্টের সুরক্ষা কীভাবে রাখা যাবে, অপরিচিতদের সঙ্গে কিভাবে যোগাযোগ করতে হবে, ডেটা বেহাত হলে কার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে, ভুল তথ্য কিভাবে চিহ্নিত করা যাবে, যেকোনো সংবাদের নির্ভুলতা কিভাবে নিরূপণ করা যাবে এবং কারও সঙ্গে আলোচনার সময় কোন কোন বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।

ইন্টারনেট সুরক্ষার বিষয়ে এখন পর্যন্ত গ্রামীণফোন কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে- শিশুদের এমন প্রশ্নে প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, “মহামারী চলাকালীন কানেক্টিভিটির মাধ্যমে ডিজিটাইজেশন আমাদের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়তা করেছে। এখন আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আগের চেয়ে বেশি সময় ব্যয় করছে; এজন্য একইসাথে তারা নানা ঝুঁকির মুখে পড়ছে।

“নিরাপদ ইন্টারনেট দিবস আবারও গ্রামীণফোনকে এর পার্টনারদের সঙ্গে নিয়ে এ বিষয়ে এগিয়ে আসার বিষয়ে, পাশাপাশি সমাজের উন্নয়নে অংশীদারিত্ব করা, আমাদের শিশুদের উদ্বেগের বিষয় চিহ্নিত করা এবং তাদের জন্য নিরাপদ অনলাইন দুনিয়া তৈরির বিষয়ে সচেতন করেছে।”  

ইন্টারনেটে কোনো ধরনের অপ্রত্যাশিত বিষয়ের মুখোমুখি বা বুলিংয়ের শিকার হলে সে বিষয়টি নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে শেয়ার করার পরামর্শ দেন তিনি।

অভিভাবকদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে শিশুদের উদ্দেশে ইয়াসির আজমান বলেন, “একটি বিষয় তোমাদের মনে রাখতে হবে, তোমরা একা নও। তোমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সবাই তোমাদের পাশে আছি। অন্যান্য বিভিন্ন সমস্যার মতো ইন্টারনেটে কোনো সমস্যার মুখোমুখি হলে তোমার বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করতে দ্বিধাবোধ করবে না।”

কথা সাহিত্যিক আনিসুল হক বলেন, “পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো ও বিশ্বস্ত বন্ধু হলো বাবা-মা। তারা সবসময় তোমাদের ভালো চায়। ইন্টারনেটে কোনো প্রতিকূলতার মুখোমুখি হলে বাবা-মাকে বলবে। তারাই সবচেয়ে বেশি তোমাদের ভালো চায়।”

অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার ওলে বিয়র্ন স্লাস্টেন, স্ট্রাটেজিক প্রজেক্ট অ্যান্ড পার্টনারশিপ রাসনা হাসান, প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা খায়রুল বাশার উপস্থিত ছিলেন।

নিরাপদ ইন্টারনেট দুনিয়া তৈরির ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে মা-বাবা, অভিভাবক ও শিক্ষকদের এ বিষয়ে সচেতন করতে ইউনিসেফ ও টেলিনরের সঙ্গে অংশীদারিত্বে ২০১৫ সালে প্যারেন্টস গাইড তৈরি করে গ্রামীণফোন। 

অপারেটরটি জানায়, ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহার ও এ সম্পর্কে  সচেতন করার লক্ষ্যে গ্রামীণফোন ১০ লাখেরও বেশি শিশু ও দুই লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং সম্মিলিতভাবে বিভিন্ন ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি দুই কোটিরও বেশি মানুষের মধ্যে অনলাইন সুরক্ষা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছে।