২০ হাজার কিলোমিটারের বেশি এলাকায় এ ‘ড্রাইভ টেস্ট’ পরিচালনা করবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। প্রায় ৩০০টি উপজেলায় জানুয়ারি থেকে ৬ মাস ধরে এ কার্যক্রম চলবে।
বিটিআরসিতে লোকবল কম থাকায় এ কার্যক্রমে প্রথমবারের মতো একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে লোকবল ও পরিবহন সরবরাহের জন্যও নিয়োগ দিয়েছে বিটিআরসি।
বিটিআরসির উপ পরিচালক (গণমাধ্যম) জাকির হোসেন খান মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ প্রক্রিয়ায় যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে বিটিআরসি কলড্রপ, রিসিভ লেভেল, কল সেটআপ টাইম, কল সাকসেস রেটসহ মোবাইল ফোন সেবার গুণগত মানগুলো নজরদারি করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হবে।”
বিটিআরসির সেবার মান সূচকের সঙ্গে অপারেটরদের সেবার মান সন্তোষজনক না হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
বিটিআরসি এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নিমো ওয়াকার এয়ার, ইনভেক্স টু এবং ইউন্ডক্যাচার নামে তিন ধরনের যন্ত্রপাতি দিয়ে অপারেটরদের সেবার মানগুলো দেখা হচ্ছে।”
বিটিআরসি লোকবল কম থাকায় এবার বেসরকারি এক প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এ অভিযানে। পিআই টেকনোলজি ৪১ লাখ টাকায় এ সেবা দিচ্ছে বিটিআরসিকে। এ কার্যক্রমে জনবল ও পরিবহন সেবা দেবে এ প্রতিষ্ঠানটি।
বিটিআরসির এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ঢাকা বিভাগে মোট ৩ হাজার ৩০০ কিলোমিটার, চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৭০০ কিলোমিটার, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে ২ হাজার ৫০ কিলোমিটার, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে ২ হাজার ৫০ কিলোমিটার এবং খুলনা বিভাগে ২ হাজার ৫০ কিলোমিটার এলাকায় এ ড্রাইভ টেস্ট হবে।
এর আগে ২০১৭ সালে ও ২০১৯ সালে এ ধরনের ড্রাইভ টেস্ট করেছিল বিটিআরসি।
দেশে ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা বাড়লেও গ্রাহকরা প্রায়ই উচ্চমূল্যের পাশাপাশি ইন্টারনেট ধীরগতি, নেটওয়ার্ক সমস্যা, সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া ও ব্যবহারের চেয়ে বেশি টাকা কেটে নেওয়াসহ নানা বিষয়ে অভিযোগ করে আসছে।
মোবাইল ফোন অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব এস এম ফরহাদ বিটিআরসির উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মোবাইল সেবার মান পরীক্ষার জন্য ড্রাইভ টেস্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থার একটি রুটিন কাজ। আমরা তাদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।”
তবে ফরহাদ একইসঙ্গে বলেন, “ইতোপূর্বে আমরা বিটিআরসির কাছে ড্রাইভ টেস্টের মেথড সংক্রান্ত কিছু সুপারিশ করেছিলাম যেমন গাড়ির গতি, লোকেশন, কলের সময়, উন্নত মানের মোবাইল ফোন ব্যবহার করা ইত্যাদি। আশা করি, নিয়ন্ত্রক সংস্থা আমাদের সুপারিশগুলো বিবেচনা করে এই টেস্ট পরিচালনা করবে।“
বিটিআরসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৯ কোটি ৩৬ লাখ ৮১ হাজার। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এ সংখ্যা বেড়ে হয় ১০ কোটি ২৩ লাখ ৫৩ হাজার।
বিটিআরসির হিসাবে গত এক বছরে মোবাইল ফোনের গ্রাহকই বেড়েছে ৪৫ লাখ ৬৫ হাজারের বেশি।
গত ডিসেম্বর শেষে দেশে মোবাইল ফোন সংযোগ ছিল ১৭ কোটি এক লাখ ৩৭ হাজার। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের ৭ কোটি ৯০ লাখ ৩৭ হাজার, রবির ৫ কোটি ৯ লাখ ১ হাজার, বাংলালিংকের ৩ কোটি ৫২৩ লাখ ৭২ হাজার ও টেলিটকের ৪৯ লাখ ২৭ হাজার।