প্রণোদনার ঋণ পরিশোধে ছাড় চায় বিজিএমইএ

মহামারীর ধাক্কা থেকে শিল্প রক্ষায় সরকার পোশাক কারখানা মালিকদের স্বল্প সুদের যে ঋণ দিয়েছিল, তা পরিশোধে ছাড় চেয়ে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Jan 2021, 07:21 PM
Updated : 7 Jan 2021, 07:21 PM

বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ওই চিঠি বিতরণ করা হয়।

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর রপ্তানিতে ধস নামায় পোশাক খাতের শ্রমিক-কর্মচারীদের ছয় মাসের (এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর) বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য স্বল্প সুদে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণ দেয় সরকার। চলতি জানুয়ারি মাস থেকে ওই ঋণ পরিশোধে ২৪ মাসের কিস্তি শুরু হওয়ার কথা। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক চিঠিতে জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ঋণ পরিশোধ শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তবে এরইমধ্যে ইউরোপ-আমেরিকায় মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবে রপ্তানি বাজার আবারও সংকুচিত হয়ে পড়ায় চিঠিতে প্রণোদনা প্যাকেজকে আরও ছয় মাস সুদমুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছেন রুবানা হক।

চিঠিতে তিনি বলেন, “এ পরিস্থিতিতে বর্তমান প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণের সুদ অন্ততপক্ষে ৬ মাসের জন্য স্থগিতকরণ অথবা প্রণোদনা পরিশোধের মেয়াদ অন্ততপক্ষে আরও অতিরিক্ত ১ বছর (বর্তমানে ২৪ মাস) সম্প্রসারিত করা না হলে শিল্পকে টিকিয়ে রাখা দুরূহ হবে।”

রুবানা লিখেছেন, “শিল্প আজ সবচেয়ে মর্মান্তিক পরিস্থিতির দিকে মোড় নিয়েছে। যথাযথ পুনর্গঠনের সুযোগ এমনকি প্রস্থান নীতি না থাকায় পশ্চিমা ক্রেতাদের দেওলিয়াত্ববরণ, নির্দয়ভাবে ক্রয়াদেশ বাতিল এবং ফোর্স মেজার ক্লোজেজের কারণে শিল্প চরমভাবে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।

“কারখানাগুলো টালমাটাল পরিস্থিতির সাথে প্রাণান্তকর সংগ্রাম করে কোনোভাবে টিকে রয়েছে।”

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে পোশাক শিল্প ‘গভীর অনিশ্চয়তায় হাবুডুবু খাচ্ছে’ বলে লিখেছেন তিনি। 

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ডিসেম্বর মাসের প্রতিবেদনেও রপ্তানির উদ্বেগজনক চিত্র উঠে আসার কথা উল্লেখ করেন বিজিএমইএ সভাপতি।

তিনি বলছেন, গত জুনের পর থেকে ওভেন পোশাক রপ্তানিতে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি হয়েছে। ডিসেম্বর মাসে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ঋণাত্মক ১৮.০৭%। তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল অবস্থানে রয়েছে নিটওয়্যার রপ্তানি, এখানেও প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ০.৪৫%।

মহামারীর কারণে এবার বিশ্বে স্মরণকালের ‘সবচেয়ে মন্দ ক্রিসমাস সেল’ হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এই পরিস্থিতিতে সবার সহযোগিতা চেয়ে রুবানা হক লিখেছেন, “করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে অনিশ্চয়তা আর শঙ্কায় আমরা বিপর্যস্ত। যেহেতু ভ্যাকসিন প্রাপ্যতা এখনও নিশ্চিত হয়নি এবং এর প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতে বিরাজ করছে, তাই আমাদের আশঙ্কা, রপ্তানির এই নিম্নমূখী প্রবণতা সম্ভবত চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত বজায় থাকবে।

“এ পরিস্থিতিতে আমি আপনাদের সবার সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করি, যাতে করে আমরা নীতি নির্ধারকদেরকে শিল্পের বর্তমান প্রকৃত পরিস্থিতি বোঝাতে সক্ষম হই।”