আরো প্রণোদনা চায় বিজিএমইএ

মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবে তৈরি পোশাকের বাজার সংকুচিত হয়ে উঠছে দাবি করে শিল্পমালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ বলছে, আরেকটি প্রণোদনা না পেলে এই রপ্তানি খাতের জন্য টিকে থাকা কঠিন হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Dec 2020, 04:47 PM
Updated : 7 Dec 2020, 04:47 PM

সোমবার বিজিএমইএর ৩৭তম বার্ষিক সাধারণ সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি রুবানা হক বলেন, “সরকারের প্রতি আমাদের বিনীত অনুরোধ, অনুগ্রহ করে শিল্পের জন্য যে প্রনোদনা প্যাকেজটি দিয়েছেন, তার মেয়াদ বৃদ্ধি করে দিন। একইসাথে প্রয়োজনে নতুন সহায়তা দেওয়া যায় কিনা তা সহানুভূতির সাথে বিবেচনার অনুরোধও করছি।”

মার্চ মাসে মহামারী শুরুর পর পোশাক খাতের রপ্তানি পরিস্থিতি কার্যত থমকে দাড়ায়। সেই পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের এপ্রিল, মে ও জুন মাসের বেতন পরিশোধ করতে ৪ শতাংশ সুদে সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয় পোশাক খাতে। মালিকদের আবেদনে পরে জুলাই মাসে দেওয়া হয় আরও প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা।

স্বল্পসুদের এই ঋণ আসছে জানুয়ারি মাস থেকে পরিশোধের কথা রয়েছে। এদিকে মহামারী শুরুর পর এপ্রিল মাসে ১১৫০টি পোশাক কারখানার ৩ দশকি ১৮ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের যে রপ্তানি আদেশ বাতিল হয়েছিল তার ৯০ শতাংশ আবার ফিরেও এসেছি। এমনই একটি পরিস্থিতিতে মহামারীর দ্বিতীয় ধাক্কার কারণে রপ্তানি পরিস্থিতি আবারও নেতিবাচক ধারার দিকে যাচ্ছে বলে জানালেন মালিকপক্ষের নেতারা।

রুবানা হক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে কোভিড-১৯ এর প্রাথমিক বিপর্যয়তা আমরা কাটিয়ে উঠেছি, তারপরও এর অভিঘাত থেকে পুরোপুরি মুক্ত হতে পারি নাই। প্রধান বাজারগুলোতে জুলাই, আগষ্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে রপ্তানি কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে আবারও উল্লেখযোগ্যভাবে রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে, যা করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এর প্রভাব হিসেবে আমরা দেখছি।

রুবানা হক ফাইল ছবি।

রপ্তানিতে মহামারীর নেতিবাচক কিছু চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন,

>> করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে মার্চ-জুলাই পর্যন্ত তৈরি পোশাকের রপ্তানি ৩৪.৭২ শতাংশ হ্রাস পায়।

>> আগষ্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে রপ্তানিতে সামান্য প্রবৃদ্ধি হলেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে তা আবার হুমকির সম্মুখীন হয়।

>> অক্টোবরে বিগত বছরের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে ৭.৭৮ শতাংশ।

>>১-২০ নভেম্বরে রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে ৬%, যা এই শিল্পের জন্য আশঙ্কার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে।

>> প্রধান বাজারগুলোতে জুলাই, আগষ্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে রপ্তানি কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও অক্টোবর মাসে আবারও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে, যা করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এর প্রভাব হিসেবে আমরা দেখছি।

>> অক্টোবরে বিগত বছরের তুলনায় আমাদের প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানী, স্পেন, ফ্রান্স, ইতালী ও জাপানে পোশাক রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে যথাক্রমে ৮%, ১০%, ৬%,১৫%, ৩০% এবং ২৮%।

>> বিগত কয়েক মাসে ইউরোপে খুচরা বিক্রয় হ্রাসের হার কিছুটা কমে অগাস্টে -৫% হয়, যা সেপ্টেম্বর মাসে ইউরোপে বেড়ে দাঁড়ায় -১৩%।

>>গত সেপ্টেম্বরে সমগ্র পৃথিবীতে আমাদের পোশাকের দরপতন হয় ৫.২৩%। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এই দরপতন ছিল ৪.৮১%। দরপতনের এই ঋণাত্মক ধারা অব্যাহত রেখে সামগ্রিক বিশ্ব বাজারে আমাদের পোশাকের দরপতন হয়েছে অক্টোবর মাসে ৪.১৫% এবং নভেম্বর মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত ৪.৯২ শতাংশ।