মোবাইল ব্যাংকিং: প্রতিযোগিতার পরিবেশ কতটা হল?

বাংলাদেশে মোবাইলে ফোনে আর্থিক সেবা (এমএফএস) চালুর আট বছরের মাথায় এসে গ্রাহক সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৯ কোটি ৩০ লাখ; প্রতি মাসে লেনদেন হচ্ছে ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি। কিন্তু প্রতিযোগিতার পরিবেশ কি বাজারে তৈরি হয়েছে?

শামীম আহমেদ জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Nov 2020, 08:52 PM
Updated : 12 Nov 2020, 05:54 AM

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বছরের পর বছর এ খাতে একচেটিয়া ব্যবসা চলে এলেও এখন কোম্পানিগুলো নতুন প্রযুক্তি এনে কম খরচে সেবা দিতে শুরু করায় প্রতিযোগিতা বড়ার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। গ্রাহকরা এখন অন্তত সেবা বাছাই করার সুযোগ পাচ্ছেন, যার সুযোগ আগে ছিল না।

আর সেবাগ্রহীতারা বলছেন, এমএফএস সেবাদাতারা অ্যাপ চালু করার পর খরচ কিছুটা কমে এসেছে। তবে খরচ আরও কমানো উচিত, তাতে সাধারণ যেমন মানুষ উপকৃত হবে, গ্রাহকও বাড়বে।

মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনের এ সেবা অনেকাংশে এজেন্ট নির্ভর। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, গত আগস্ট মাস শেষে সারা দেশ এমএফএসগুলোর এজেন্ট ছিল ১০ লাখ ৯ হাজারের বেশি।

গত এক বছরে এ খাতে গ্রাহক বেড়েছে ২৬.৩৫ শতাংশ, আর এজেন্ট বেড়েছে ৬.২১ শতাংশ।   

মহামারী শুরু হওয়ার পর মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ওপর মানুষের নির্ভরতা বেড়েছে, সেই সঙ্গে বেড়েছে গ্রাহক। গত মার্চ থেকে অগাস্টের মধ্যেই গ্রাহক বেড়েছে এক কোটির বেশি।

গত আগাস্ট মাসে দেশে এমএফএসগুলোর মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ৪১ হাজার কোটি টাকা, যা গত বছর একই সময়ে ২৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকার মত ছিল।

এ বছর অগাস্ট মাসে এমএফএসের মাধ্যমে গ্যাস-বিদ্যুতের মত পরিষেবার বিল বাবদেই ৯০৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এছাড়া ১০৪ কোটি টাকা প্রবাসী আয় বিতরণ করা হয়েছে, বেতন-ভাতা পরিশোধ হয়েছে ১ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। ১ হাজার ৬০ কোটি টাকার কেনাকাটা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে এমএফএসের মাধ্যমে প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা লেনদেন হয়; যার ৮০ শতাংশই হয় দেশের সবচেয়ে বড় এমএফএস কোম্পানি বিকাশের মাধ্যমে।

২০১২ সালে বিকাশ এ সেবা চালু করার পর দেশে এখন নগদ, রকেট, ইউক্যাশ, এমক্যাশ, শিওরক্যাশসহ ১৫টির মত কোম্পানি এমএফএস সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে ডাক বিভাগের সেবা ‘নগদ’ এক বছরের কিছু বেশি সময়ে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এমএফএস-এ পরিণত হয়েছে।

মূলত নগদের প্রসারের কারণেই এ খাতে একচেটিয়া ব্যবসা করে আসা বিকাশ এখন কিছুটা প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হচ্ছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সহযোগী অধ্যাপক মো. মাহবুবুর রহমান আলম।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “নগদ সরকারি প্রতিষ্ঠান, তাই তাদের লাভের দিকটা বেশি চিন্তা করতে হচ্ছে না। এছাড়া বিভিন্ন সরকারি টাকাও নগদের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে। তাতে নগদের গ্রাহক বাড়ছে। বর্তমান এ খাতে বিকাশ, নগদ ও রকেটের মধ্যে একটা ভালো প্রতিযোগিতা তৈরির লক্ষণ রয়েছে, যা আগে ছিল না।” 

প্রতিযোগগিতা কোথায়?

বিকাশ এ খাতে কাজ করছে প্রায় দশ বছর ধরে, ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রতিযোগিতায় তারা এগিয়ে থাকবে। তুলনামূকভাবে নতুন হলেও নগদের প্রসার এখন দ্রুত হচ্ছে, ফলে পার্থক্যটাও কমে আসছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এমএফএসগুলোর মধ্যে ডিজিটাল কেওয়াইসি’র ব্যবহার দেশে প্রথম শুরু করেছে নগদ। ডিজিটাল কেওয়াইসি দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে লাগে মাত্র ১০ সেকেন্ড। অথচ আগে বিকাশের অ্যাকাউন্ট খুলতে ৭২ ঘণ্টা লাগত।

প্রথম দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকও ডিজিটাল কেওয়াইসির বিপক্ষে ছিল। কিন্তু সুবিধা বুঝতে পেরে এরপর একে একে সব ব্যাংক ও বিকাশ ডিজিটাল কেওয়াইসির ব্যবহার শুরু করেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকও অনুমোদন দিয়েছে।

কেউ মোবাইল ব্যাংকিং সেবার জন্য অ্যাকাউন্ট খুলতে চাইলে তাকে তা খুলতে হয় নিজের নামে নিবন্ধিত সিমের বিপরীতে। আর মোবাইল অপারেটরদের কাছে সব গ্রাহকের তথ্য আছে। ডিজিটাল কেওয়াইসিতে মোবাইল অপারেটদের কাছে থাকা গ্রাহকের তথ্য যাচাই করেই অ্যাকউন্ট খোলা হয়। এই প্রক্রিয়ায় কোনো খরচ ছাড়াই দ্রুত অ্যাকাউন্ট খোলার কাজটি হচ্ছে।

‘সেন্ড মানি টু এনি ফোন’ (এসএমটিপি) বলে একটি সেবা গত বছর অক্টোবরে চালু করেছে নগদ। যেখানে অ্যাকাউন্ট নেই এমন মোবাইল নম্বরেও টাকা পাঠানো সম্ভব। পরে অ্যাকউন্ট খুলে টাকা তুলে নিতে পারবেন গ্রাহক। কিছু দিন আগে বিকাশও এটি চালু করেছে।

নগদে কোনো বিদেশি কর্মী নেই, প্রযুক্তিও দেশীয়। বিদেশি কর্মী নেই বিকাশেও, তবে তাদের প্রযুক্তি হুয়াওয়ের। এখন সেটি ধীর ধীরে দখলে নিচ্ছে আলিবাবা গ্রুপের অ্যান্ট।

বিকাশের যা যা সেবা আছে, একমাত্র রেমিটেন্স ছাড়া তার সবগুলোই নগদ-এর আছে। নগদও শিগগিরই রেমিটেন্স সেবা চালুর প্রক্রিয়ায় আছে বলে কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। 

নগদ ও বিকাশের সেবার ধরণ মোটামুটি এক হলেও বিকাশের প্রতিটি সেবাই খুব বিস্তৃত। সেই জায়গায় পৌঁছাতে অন্য প্রতিযোগীদের সময় লাগবে।

মহামারীর শুরুতেই নগদ ৫ ধরনের ব্যবসায়ীদের জন্যে ক্যাশ-আউট চার্জ হাজারে ৬ টাকা করে দেয়। তবে এই সুবিধা পাচ্ছে কেবল ৫ ধরনের ছোট ব্যবসায়ী।

গত ৫ নভেম্বর থেকে নগদ এক হাজার টাকা ক্যাশ আউটে চার্জ ৯ টাকা ৯৯ পয়সা মাশুল নির্ধারণ করে, যা দেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সর্বনিম্ন ক্যাশ আউট চার্জ। এর আগে অক্টোবরে এক ঘোষণায় ‘নগদ’ অন্তত ২১০০ টাকা ক্যাশ আউট করলে প্রতি হাজারে ৯ টাকা ৯৯ পয়সা মাশুলের ঘোষণা দিয়েছিল।

বিকাশের এক অ্যাকাউন্ট থেকে আরেক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে (সেন্ড মানি) প্রতি লেনদেন ৫ টাকা মাশুল ধরা হচ্ছে, নগদে যা ‘ফ্রি’।

এমএফএস খাতের মার্কেট লিডার বিকাশ লিমিটেড (বিকাশ) একটি ব্যাংক-লেড মোবাইল ফাইনানশিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডার, যা ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের একটি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে।

যাত্রা শুরুর পর থেকে বিকাশ বাংলাদেশে একচেটিয়া ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। এমএফএস বলতে সবাই বিকাশকেই বোঝাত। আরও কিছু এমএফএস কোম্পানি থাকলেও জনপ্রিয়তায় তারা বিকাশের ধারেকাছে যেতে পারেনি তখন।

দেশের মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশকেও এখনও প্রথাগত ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনা যায়নি। অথচ দেশের মানুষের হাতে মোবাইল ফোন রয়েছে ১৬ কোটির বেশি।

এ সুবিধা কাজে লাগিয়েই দ্রুত বেড়ে উঠেছে মোবাইল ব্যাংকিং এবং বিকাশ। এ কোম্পানির গ্রাহক সংখ্যা বর্তমানে ৪ কোটি ৮০ লাখ।

অন্যদিকে ডাক বিভাগের আর্থিক লেনদেন সেবা ‘নগদ’ গত বছরের ২৬ মার্চ আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। মিক্সড-লেড মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদের গ্রাহক সংখ্যা এখন আড়াই কোটির মত।

এছাড়া রূপালী ব্যাংকের শিওরক্যাশের গ্রাহক সংখ্যা ২ কোটি ৩০ লাখ এবং ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের এমএফএস রকেটের গ্রাহক দুই কোটির বেশি।

এর বাইরে অন্য এমএফএস- যেমন এম ক্যাশ, ইউ ক্যাশ, টেল ক্যাশ, ওকে, মাই ক্যাশ, স্পার্ট ক্যাশ, মোবাইল মানি, ট্যাপ অ্যান্ড পের মোট গ্রাহক সংখ্যা এ বাজারের এক শতাংশের মত।

এমএফএস খাতে প্রতিযোগিতার পরিবেশ কতটা তৈরি হয়েছে, সেই প্রশ্ন বিকাশের কাছে রেখেছিল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

জবাবে বিকাশের হেড অব কর্পোরেট কমিউনিকেশন্স শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, “বিকাশ বরাবরই বিশ্বাস করে এমএফএস খাতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড অর্থাৎ সুস্থ প্রতিযোগিতা বজায় থাকা উচিৎ। এক্ষেত্রে সকল আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানই যেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা মেনে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে, গ্রাহকদের লেনদেন সক্ষমতা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করে, সেটিই কাম্য।”

একই প্রশ্নে নগদ' এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি তো বলতে চাই নগদের কারণেই এ খাতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে, ফলে গ্রাহকদের নিরাপত্তাও বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক গুণ। সব মিলে শুধু নগদের কারণেই মোবাইল ফাইনানশিয়াল সার্ভিস ডিজিটাল ফাইনানশিয়াল সার্ভিসে পরিণত হয়েছে।”

তিনি বলেন, “আমরা যখন যাত্রা করি, তখন দেশের এমএফএস খাতটি ছিল মাসে ৩০ হাজার কোটি টাকার কিছু নিচে। কিন্তু মাত্র দেড় বছরের ব্যবধানে তা দ্বিগুণের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। অবশ্যই এখানে ‘নগদ’ এর একটা বড় ভূমিকা আছে।”

গ্রাহক ও এজেন্টরা কী ভাবছেন?

আগে শুধু বিকাশ ব্যবহার করলেও নগদে তুলনামূলকভাবে খরচ কম হয় বলে নগদেরও গ্রাহক হয়েছেন ব্যবসায়ী আশিকুর রহমান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “নগদে খরচ কিছু কম, তবে বিকাশের সেবা বিস্তৃত। তাই যখন যেটা সুবিধা ব্যবহার করি।”

খরচ আরও কমালে আরও বেশি মানুষ এ সেবা থেকে উপকৃত হবে বলে তিনি মনে করেন।

রংপুরের সদরের এমএফএস এজেন্ট মাসুদ রানা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিকাশের গ্রাহক বেশি থাকায় তাদের ক্যাশ আউট বা ক্যাশ ইন বেশি হয়। তবে বড় অংকের টাকায় খরচ কম বলে নগদে এখন লেনদেন ভালো। রকেটেও ভালো লেনদেন হয়।”

আর হাজারীবাগ এলাকার এজেন্ট মিজানুর রহমান বলেন, “নগদ, রকেট বা অন্য কোম্পানির চেয়ে বিকাশে লেনদেন সব সময়ই বেশি। বিকাশ, নগদ বা রকেটের এজেন্ট কমিশন ১০ থেকে ২০ পয়সার পার্থক্য থাকে, তাতে এজেন্টদের ওপর তেমন একটা প্রভাব পড়ে না।” 

এই দুই এজেন্টও মনে করেন, গ্রাহকের খরচ কমালে এ খাতে সেবার পরিসর বৃদ্ধি পাবে। তবে এজেন্টরা যা পায়, সে বিষয়েও খেয়াল রাখতে হবে।

এমএফএস কোম্পানিগুলো এখন গ্রাহকের কাঃছ থেকে যে হারে টাকা নিচ্ছে, তা কতটা যৌক্তিক?

এই প্রশ্নে বিআইবিএমের মাহবুবুর রহমান বলেন, এমএফএস যেহেতু এজেন্ট নির্ভর, সেহেতু তাদের কথাও কোম্পানিগুলোকে মাথায় রাখতে হয়। 

“খরচ কমাতে গেলে এজেন্টেদের, বা এ চেইনে যারা আছে, তাদের ওপর প্রভাব পড়ে। এক্ষেত্রে গ্রাহকরা যদি অ্যাপের মাধ্যমে সেবা নেন, তাহলে অনেকাংশে খরচ কমতে পারে।“

কত টাকা পায় মোবাইল অপারেটর?

মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দেওয়ার জন্য মোবাইল অপারেটরদের অবকাঠামো ব্যবহার করতে হয় এমএফএসগুলোকে। সেজন্য একটি খরচও দিতে হয়। 

মোবাইল আর্থিক সেবায় (এমএফএস) ব্যালেন্স জানাসহ ‘রাজস্ব আয় হয় না’ এমন লেনদেনে মোবাইল অপারেটরদের চার্জ দিতে হয় এমএফএস কোম্পানিগুলোকে।

ব্যালেন্স জানতে ইউএসএসডি (আনস্ট্রাকচার্ড সাপ্লিমেন্টারি সার্ভিস ডেটা) চ্যানেল ব্যবহারে প্রতি ৯০ সেকেন্ডে একটি সেশন ধরে মোবাইল ফোন অপারেটরদের ৮৫ পয়সা করে দিতে হয়। এমন সেশনে ন্যূনতম দুটি এসএমএস অন্তর্ভুক্ত।

তবে এমএফএসগুলো অ্যাপের মাধ্যমে সেবা দেওয়ায় সে খরচটা অনেকটাই কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। অ্যাপে লেনদেনে প্রতি এসএমএসে অপারেটররা ২০ পয়সা করে পাচ্ছে।

খরচ নিয়ে প্রতিযোগীরা কী বলছেন?

আগামীতে খরচ কমানোর কোনো পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাইলে বিকাশের হেড অব কর্পোরেট কমিউনিকেশন্স ডালিম বলেন, এ মুহূর্তে গ্রাহকের ক্যাশ আউট চার্জের ৮৫ শতাংশই ব্যয় হয় এজেন্ট, ডিস্ট্রিবিউটর, মোবাইল অপারেটর এর সার্ভিস চার্জ এবং সরকারি ভ্যাট-ট্যাক্স বাবদ।

“এজেন্ট ও ডিস্ট্রিবিউটরদের যথেষ্ট আয়ের সুযোগ করে দেওয়ার মাধ্যমেই দেশের প্রতিটি প্রান্তে নিরবচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে। তবে আমাদের প্রযুক্তি খাতে প্রতিনিয়ত বিনিয়োগ করা হচ্ছে। নতুন নতুন সেবা আমরা যুক্ত করছি। আশা রাখি, ভবিষ্যতে সার্ভিস চার্জ বাবদ গ্রাহকের খরচ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।”

অন্যদিকে নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিশুক বলেন, “অনেক দিন ধরেই আমরা ক্যাশ-আউট রেট কমানোর কথা বলছি। সেটি হলে এক দিকে যেমন গরীব মানুষের ওপর থেকে চাপ কিছুটা কমবে, একই সঙ্গে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাবে।

“গত দশ বছর ধরে হাজারে সাড়ে আঠারো বা ২০ টাকা ক্যাশ-আউট চার্জ রয়েছে। অন্যদিকে ‘নগদ’ একাই উদ্যোগ নিয়ে ক্যাশ-আউট চার্জ হাজারে ৯.৯৯ টাকায় নামিয়ে এনেছে। আমরা মনে করি, নীতিনির্ধারকদের ক্যাশ-আউট রেট নির্ধারণ বিষয়ে কস্ট মডেলিং করা উচিত।”

শিওরক্যাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. শাহাদাত খান মনে করেন, বর্তমানে এ খাতে প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে এবং তা বাড়ছে।

“সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের যেসব বেতন-ভাতা হয়, তা যদি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে করা যায় এবং খরচও যদি ডিজিটালি করা হয়, তাহলে গ্রাহকের খরচ অনেকাংশে কমে যাবে।”